২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ডিএসসিসির অভিযানে পৌনে ১ লাখ টাকা জরিমানা

ডিএসসিসির অভিযানে পৌনে ১ লাখ টাকা জরিমানা - ছবি : সংগৃহীত

সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করা, স্বাস্থ্যবিধি ভেঙে অনুমোদন ছাড়া দোকানপাট খোলা রাখা ও মশার লার্ভা পাওয়ায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এ সময় তাদের থেকে ৩৩ মামলায় ৭৫ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউনের আওতায় আরোপিত বিধিনিষেধ তদারকিতে রোববার ডিএসসিসির আওতাধীন এলাকায় একযোগে ১১টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এসব জরিমানা আদায় করা হয়।

অঞ্চল ১-৭ ও ১০-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের (আনিক) পাশাপাশি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগের তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালতগুলোর নেতৃত্ব দেন।

ডিএসসিসির আঞ্চল-১-এর আনিক মেরীনা নাজনীন ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোড, নিউ মার্কেট, শাহবাগ, হাতিরপুল, সেগুনবাগিচা ও বেইলি রোড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।

অভিযানে ৩টার পরে খোলা রাখায় সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারসহ ৩০টি দোকান বন্ধ করে দেয়া হয়।

অঞ্চল-২-এর আনিক সুয়ে মেন জো-এর তত্ত্বাবধানে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসাবো বালুরমাঠ এলাকার কাঁচাবাজার, বৌদ্ধমন্দির সংলগ্ন রোডে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এ সময় যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলা ও অননুমোদিতভাবে দোকান খোলা রাখায় প্রায় ৫০ ব্যক্তি ও দোকানকে সতর্ক করা হয়।

অঞ্চল-৩-এর আনিক বাবর আলী মীর কামরাংগিচর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত করেন। এ সময় ২৫টির অধিক অননুমোদিত দোকান বন্ধ করে দেয়া হয় ও প্রয়োজন ছাড়া মাস্ক না পরে বের হওয়ায় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি মামলা ও ১০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

অঞ্চল-৪-এর আনিক মো: হায়দর আলী ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের তাতীবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় অনুমোদনহীন দোকান খোলা রাখা, স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ১৮টি মামলা দায়ের করেন ও নগদ আট হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

অঞ্চল-৫-এর আনিক মো: শাহীনুর আলম ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের ধলপুর মালতিলতা কাঁচাবাজার অভিযান পরিচালনা করেন এবং ৩টার পরে খোলা রাখায় পাঁচটি দোকান বন্ধ করে দেন।

অঞ্চল-৬-এর আনিক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের শেখের জায়গা, মোস্তামাঝির মোড়, নাগদারপাড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।

অভিযানে অনুনোমোদিতভাবে খোলা রাখা ৮০টি দোকান বন্ধ করে দেয়া হয় ও অপ্রয়োজনে ঘুরাফেরা করায় ৫০ ব্যক্তিকে সতর্ক করা হয়।

অঞ্চল-৭-এর আনিক ড. মোহাম্মদ মাহে আলম মান্ডা ব্রিজ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় তিনি অনুনোমোদিত ২০টির অধিক দোকান বন্ধ করে দেন।

অঞ্চল-৮-এর আনিক শহিদুল ইসলাম ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার সংলগ্ন এলাকার বিভিন্ন গলিতে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় তিনি প্রায় ২৫টি দোকানকে লকডাউন সংক্রান্ত বিধি-বিধান পালনের বিষয়ে সতর্ক করেন। এ ছাড়া মাস্কবিহীন পথচারীদের সতর্ক করা হয়েছে।

অঞ্চল-১০-এর আনিক মোহাম্মদ মামুন মিয়া শনির আঁখড়া জিয়া সরণি এলাকায় রাস্তার দু’পাশের কাঁচা বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন।

অভিযানে অনুনোমোদিত দোকানপাট বন্ধ পেলেও প্রচুর লোকসমাগম দেখতে পান।

এ দিকে ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: মুনিরুজ্জামানের নেতৃতত্বাধীন ভ্রাম্যমাণ আদালত মালিবাগ রেলগেইট বাজার, শান্তিনগর বাজার ও ফকিরাপুল বাজারে অভিযান পরিচালনা করে। পরিদর্শন করা হয়। এ সময় সরকারি নির্দেশনা না মানায় ৭টি মামলার মাধ্যমে চার হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ ওয়ারী, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ি, জয়কালী মন্দির এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

অভিযানে সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করায় আদালত ৭টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। নগদ ৩৩ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আদায় করেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানজিলা কবীর ত্রপার নেতৃত্বে এডিস মশার লার্ভা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে মালিটোলায় ২৬টি স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযানে নির্মাণাধীন একটি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় একটি মামলা দায়ের ও নগদ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

আজকের অভিযান প্রসঙ্গে অঞ্চল-১০-এর আনিক মোহাম্মদ মামুন মিয়া বলেন, শনির আঁখড়ার জিয়া সরণি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছি। এ সময় অনুনোমোদিত দোকানপাট ও ৩টার পর অনুমোদিত কাঁচাবাজার বন্ধ পেয়েছি। কিন্তু বিনা প্রয়োজনে বিভিন্ন স্থানে প্রচুর লোকসমাগম করতে দেখেছি। পরে সেসব লোকজনকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে ও বিনা প্রয়োজনে বের না হতে সতর্ক করেছি।

অভিযান প্রসঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানজিলা কবীর ত্রপা বলেন, “এডিস মশার লার্ভা নিয়ন্ত্রণে আজ মালিটোলায় অভিযান পরিচালনা করেছি। ২৬টি স্থাপনায় অভিযান চালিয়ে একটি নির্মাণাধীন ভবনে এডিস মশার লার্ভা খুঁজে পাই। ‘ঢাকা নিবাস’ নামে একটি ডেভেলপার কোম্পানী বাড়িটি নির্মাণ করছে। পরে সেই ডেভেলপার কোম্পানীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের ও নগদ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছি।’

অভিযানকালে আনিক -২-এর সাথে কাউন্সিলর মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, আনিক-৪-এর সাথে ৩৬নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা রঞ্জন বিশ্বাস, আনিক-৬ এর সাথে কাউন্সিলর মো. আকবর হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অভিযানকালে সবক’টি আদালতই লকডাউনের নির্দেশনা মেনে চলতে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষে মাইকিং করেন। এছাড়াও বিনা প্রয়োজনে অযথা বাড়ির বাইরে বের না হওয়া, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ওপর জোর দেন।

সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement