২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবস উপলক্ষে ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশনের সেমিনার অনুষ্ঠিত

বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবস উপলক্ষে ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশনের সেমিনার অনুষ্ঠিত - ছবি : সংগৃহীত

শনিবার বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবস। এ উপলক্ষে শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) অনলাইন সেমিনার আয়োজন করে ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশন অব হিমোফিলিয়া অ্যান্ড রোটারি ক্লাব অব তুরাগ, উত্তরা। এতে সাইন্টেফিক পেপার উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ও ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশন অব হিমোফিলিয়ার সভাপতি ডা: মো: সালাউদ্দিন শাহ।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন রোটারি ইন্টারন্যাশনাল ডিসট্রিক ৩২৮১, বাংলাদেশের গভর্নর নমিনী ইঞ্জিনিয়ার এম এ ওয়াব।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশন অব হিমোফিলিয়ার সহ-সভাপতি ডাক্তার জিনাত আরা।

অনলাইন অতিথি ছিলেন এশিয়ান প্যাসিফিক আইসল্যান্ডার ক্যানসাস ডেমক্রেটিক পার্টি, ইউএসএ-এর চেয়ারম্যান রোটারিয়ান রেহান রেজা।

বিশেষ অতিথি ছিলেন রোটারি ইন্টারন্যাল ডিসট্রিক ৩২৮১, বাংলাদেশের সদ্য বিদায়ী গভর্নর রোটারিয়ান এম খায়রুল আলম, খুলনা মেডিক্যাল কলেজের কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা: লিয়াকত হোসেন তপন, রোটারি ক্লাব অব তুরাগ উত্তরার প্রেসিডেন্ট রোটারিয়ান মো: মতিউর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ডা: মো: শাফিউর রহমান।

সাইন্টেফিক পেপারে অধ্যাপক ডা: মো: সালাউদ্দিন শাহ বলেন, রক্তের আরেকটি বংশানুক্রমিক জিনগত অনিরাময়যোগ্য রোগের নাম হিমোফিলিয়া। এ রোগ হলে রক্ত জমাট বাঁধতে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। শরীরে কোথাও কেটে গেলে সহজে রক্তপাত বন্ধ হয় না। কারণ, রক্ত জমাট বাধার উপাদান রক্তে কম থাকে।

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বিশ্বে প্রতি ১০ হাজার জনে একজন হিমোফিলিয়ায় রোগে আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশে কতজন হিমোফিলিয়া রোগী আছে তার সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও প্রায় ১০ হাজার হিমোফিলিয়া রোগী রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। আর রোগটি সাধারণত পুরুষদেরই দেখা যায়।

তিনি বলেন, রক্তে ফ্যাক্টর-৮-এর ঘাটতির কারণে হিমোফিলিয়া-এ এবং ফ্যাক্টর-৯-এর অভাবে হিমোফেলিয়া-বি’তে আক্রান্ত হয়। হিমোফেলিয়া হলে রোগীর রক্তপাত বেড়ে যায়। নারীদের মাসিকে দীর্ঘ দিন ধরে রক্ত ঝরা, সময়ে সময়ে নাক বা দাঁত দিয়ে রক্ত বের হওয়া, দাঁতের অপারেশনের পর প্রচুর রক্তপাত হওয়া এবং প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া এসবই হিমোফিলিয়া রোগের লক্ষণ।

তিনি আরো বলেন, ৮৫ শতাংশ রোগীর হিমোফেলিয়া-এ এবং ১৫ শতাংশ রোগীর হিমোফেলিয়া-বি হয়ে থাকে। এ রোগে আক্রান্তদের সবসময় সচেতনতার সাথে চলাফেরা করা উচিৎ। যেন আঘাতে রক্তক্ষরণ না ঘটে। আক্রান্ত হলে রোগীকে রক্ত দিতে হবে। কারণ রক্ত থেকে তৈরি ‘ফ্রেশ ফ্রোজেন প্লাজমা’ এ রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে সক্ষম। তবে ফ্রেশ ফ্রোজেন প্লাজমা তৈরিতে অনেক রক্ত ও বেশ সময় লাগে। প্লাজমা দেয়ার থেকে ফ্যাক্টর দেয়ার রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। এতে রোগীরা প্লাজমা বাহিত অনেক রোগ থেকে মুক্ত থাকবে।

এম এ ওয়াব বলেন, হিমোফিলিয়া রোগের চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল। এসব রোগীকে স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা দেয়ার কাজ করে যাচ্ছে ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশন অব হিমোফিলিয়া। তিনি ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগের পাশে থাকার জন্য সার্বিক সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দেন।

তিনি বলেন, অসহায় মানুষের পাশে সরকারের পাশাপাশি ধনীদের এগিয়ে আসতে হবে। কারণ সঠিক চিকিৎসা পেলে হিমোফিলিয়া রোগীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।

রেহান রেজা বলেন, সঠিক সময় সঠিকভাবে চিকিৎসা দিতে পারলে হিমোফিলিয়া সুস্থ করে তোলার সম্ভব। হিমোফিলিয়া রোগীদের সহায়তার জন্য একটি কল্যাণ তহবিল করার আহ্বান জানান। প্রবাসীদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে হিমোফিলিয়া রোগে আক্রান্ত রোগীরা তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। এ সময় রক্ত রোগের চিকিৎসা জন্য তারা ওয়ান স্টপ সার্ভিস অর্থাৎ এক হাসপাতালে সব সেবা চালু করার জন্য সরকার ও ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশনের প্রতি জোর দাবি জানান।


আরো সংবাদ



premium cement