২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘মাফ করে দেন স্যার, শহরে আর ঢুকুম না’

পুলিশ কর্মকর্তার কাছে মাফ চাইছেন লকডাউন অমান্যকারীরা। - ছবি : নয়া দিগন্ত

বেলা পৌনে ১২টা। তপ্ত রোদ, নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়া মোড়ে প্রায় ৩০ জনের মতো মানুষ। কেউ বলছে, স্যার আর শহরে আসুম না, মাফ করে দেন এবারের মতো, কেউ হাতজোড় করে ক্ষমা চাইছে, কেউ পুলিশ কর্মকর্তার পা ধরে মাফ চাওয়ার চেষ্টা করছে, কেউ আবার কানে ধরে আছে।

কাছে গিয়ে জানার চেষ্টা করা হয় ঘটনা কি? পরে জানা গেছে, এরা ইজিবাইক ও অটোরিকশাচালক। লকডাউন অমান্য করে শহরে প্রবেশ করার কারণে ট্রাফিক পুলিশ তাদের গাড়ি আটক করে রেখেছে।

ইজিবাইকচালক তাজুল নয়া দিগন্তকে জানান, পুলিশ তাদের ইজিবাইক আটক করে রেখেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা গত কয়েকদিনও রাস্তায় গাড়ি নিয়ে চলেছি। কিন্তু আজ লকডাউন অনেক কঠোর তা জানতাম না। গাড়ি ছেড়ে দিলে গ্যারেজে চলে যামু।’

অটোরিকশাচালক মাসুদ মিয়া নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘সরকার লকডাউন দিছে মানুষ বাঁচানোর জন্য। কিন্তু আমাদের ঘরে ভাত আছে নাকি সে খবর তো রাখেন না। আমরা বাঁচুম কেমনে?’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় ঘণ্টাখানেক আটক রাখার পর গাড়ি বের করবে না এমন মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।

ট্রাফিক পুলিশ জানায়, লকডাউন অমান্য করে সড়কে বের হওয়াতে বেলা ১১টা পর্যন্ত অন্তত ২০টি ইজিবাইক ও রিকশা আটক করে পুলিশ।

চালকরা বলছেন, জীবিকার তাগিদে তারা সড়কে বের হয়েছিলেন। গত ৭ দিনও লকডাউন ছিল। তখন এতটা কড়াকড়ি ছিল না। এবারের লকডাউনও ঢিলেঢালা হবে ধারণা করেই রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বের হয়েছিলেন।

চালকদের অনেকেই ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের বলেন, তাদের ছেড়ে দিলে গাড়ি গ্যারেজ করে ফেলবেন, লকডাউন অমান্য করে সড়কে নামবেন না।

সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সালেহ উদ্দিন আহমেদ জানান, আর সড়কে গাড়ি নিয়ে বের হবেন না এমন অঙ্গীকারনামা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।

জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, ‘লকডাউন কার্যকর করার জন্য জেলায় ত্রিশের অধিক চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। দূরপাল্লার বাস যেন জেলায় প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে নজরদারি রয়েছে। শুধু কলকারখানা এবং জরুরি যেসব পরিষেবা রয়েছে সেসব চালু থাকবে। পাড়া-মহল্লায় লকডাউন কার্যকরে মাইকিং করা রয়েছে। পুলিশের মোবাইল টিম টহল দিচ্ছে। সুর্নিদিষ্ট কারণ ছাড়া কাউকেই চলাচলের জন্যে অনুমতি দিচ্ছি না।’


আরো সংবাদ



premium cement