২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দৌলতদিয়ার সেই গৃহবধূ সপ্তাহ শেষে স্বামীর ঘরে

দৌলতদিয়ার সেই গৃহবধূ সপ্তাহ শেষে স্বামীর ঘরে - ছবি- সংগৃহীত

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার হোসেন মন্ডল পাড়ায় নির্যাতিত গৃহবধূ সোনালীকে (২১) স্বামীর ঘরে তুলে দিয়েছেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর। শনিবার ওসি ঘটনাস্থলে গিয়ে সোনালীকে স্বামীর ঘরে প্রবেশে সহায়তা করেন।

এ সময় দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মুহম্মদ সহিদুল ইসলাম, থানার এসআই মুরাদ হোসেন ও গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শামীম শেখসহ এলাকার বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন। সবার উপস্থিতিতে গৃহবধূর শাশুড়ি মোমেনা বেগম নিজ হাতে ঘরের তালা খুলে দিয়ে ছেলের স্ত্রীকে তার ঘরে প্রবেশ করতে দেন ও ঘরের চাবি তার হাতে তুলে দেন। তবে সোনালীকে নিয়ে ওসি আসছেন এমন খবর পেয়ে স্বামী মিন্টু ফকির (২৭) বাড়ি ছেড়ে আগেই পালিয়ে যান।

এর আট দিন আগে সোনালীকে তার ঘর থেকে বের করে বাইরে তালা লাগিয়ে দেয় শাশুড়িসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন।

নিজ ঘরে ফেরার সুযোগ পেয়ে সোনালী জানান, তার বাবার বাড়ি ঝিনাইদহ জেলায়। ছয় বছর আগে তিনি পাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়ে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে আসেন। তারপর হতেই মিন্টুর সাথে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত বছরের জুন মাসে তাদের বিয়ে হয়। এর আগে মিন্টু পাঁচ বছরে তার কাছ থেকে অন্তত ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিজের বাড়ি, ঘর ও অন্যান্য সম্পদ করেন। এখন সোনালীকে বাড়িতে জায়গা দিতে অস্বীকার করছিল স্বামীর পরিবারের লোকজন। সোনালীর অভিযোগ, যেন তেন কারণে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছিল তাকে।

সোনালী বলেন, এর ধারাবাহিকতায় এক সপ্তাহ আগে ঠুনকো অভিযোগে স্বামী আমাকে গোপনে এক তরফাভাবে তালাক দেয়। এরপর আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রতিবেশী বলেন, তারা জীবন ভর খেটে একটি পাকা ঘর তুলতে পারেনি। অথচ মিন্টু সামান্য দর্জির কাজ করে কিছু দিনের মধ্যে বিরাট গর্ত ভরাট করে ছয়-সাত লাখ টাকা খরচ করে পাকা ঘর তোলে। এ ছাড়া মিন্টু ভেকু মেশিন, ট্রলার ও শেয়ারে একটি ট্রাক কিনেছেন। অথচ তার বাবা দু’বছর আগে টাকার অভাবে বিনাচিকিৎসায় মারা গেছেন। এখন তাদের খুব ভালো অবস্থা। মিন্টু যা কিছু করেছে তা সোনালীর টাকায় করেছে বলে প্রতিবেশীদের ধারণা।

ওসি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর জানান, নির্যাতিতা গৃহবধূ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। তাছাড়া সংবাদ মাধ্যমে খবরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরে আসলে তারাও এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমাকে নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, এভাবে একটা অসহায় মেয়েকে কথিত তালাকের নামে বাড়ির বাইরে বের করে দেয়া যায় না। এটা অন্যায় ও অমানবিক। আমরা মেয়েটির পাশে আছি। তার শাশুড়ি ছেলের স্ত্রীকে মেনে নিয়ে স্বাভাবিকভাবে সংসার করার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement