২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

২ হাজার কোটি টাকা পাচার : বরকত-রুবেলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল

২ হাজার কোটি টাকা পাচার : বরকত-রুবেলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল - ছবি : নয়া দিগন্ত

দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে দায়েরকৃত সিআইডির মানি লন্ডারিং মামলায় ফরিদপুরের আওয়ামী লীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। বুধবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস।

অভিযোগপত্রে অন্য আসামিরা হলেন ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, এপিএস এএইচএম ফোয়াদ, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি খন্দকার নাজমুল হাসান লেভি, শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ফাহিন, শহর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল হাসান ডেভিড, মোহাম্মাদ আলী মিনার ও তারিকুল ইসলাম নাসিম।

আরো ৪২ জনের বিরুদ্ধে এই মামলায় তদন্ত চলছে যারা এই সকল আসামিদের সহযোগী উল্লেখ করে অভিযোগপত্রে বলা হয়, তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পেলে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে। আগামী ৮ মার্চ এ মামলার পরের শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

গত বছরের ২৬ জুন বরকত ও রুবেলসহ তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন সংশোধনী-২০১৫-এর ৪(২) ধারায় ঢাকার কাফরুল থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস।

ওই মামলায় এই দুই ভাই ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে ২ হাজার কোটি টাকা উপার্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়। সিআইডির দায়েরকৃত এ মামলায় বলা হয়, ২০১০ সাল হতে ১০ বছরে এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারী দফতরের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন বরকত ও রুবেল। মাদক ব্যবসা, ভূমি দখলেরও অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে।

সর্বশেষ এই মামলায় সিআইডির আবেদনের প্রেক্ষিতে বরকত-রুবেল ও তাদের স্বজনদের ৪৮৭টি তফশিলে থাকা ৫ হাজার ৭০৬ বিঘা জমি, ৮৮টি ব্যাংক হিসাবে থাকা প্রায় পৌনে ১০ কোটি টাকাসহ তাদের ৫৫টি বাস, ট্রাক, বিএমডব্লিউ গাড়ি, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার ক্রোকের আদেশ দেন আদালত। এর আগে গত বছরের ৯ অক্টোবর একই আদালত বরকত ও রুবেলসহ বরকতের স্ত্রী আফরোজা আক্তার, রুবেলের স্ত্রী সোহেলী ইমরোজ পুনম এবং শ্বশুর আব্দুল খালেকের নামে থাকা ৮৮টি ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ দিয়েছিলেন।

ফরিদপুর শহরের ব্রাক্ষণকান্দা এলাকার মৃত আব্দুস সালাম মণ্ডলের সন্তান সাজ্জাদ হোসেন বরকত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে যোগদান করে প্রথমে শহর যুবলীগের সভাপতি ও পরে শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ দখল করেন। এছাড়া জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতির পদও দখল করেন তিনি। একই সময়ে তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেল ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতির পদ দখল করেন। ক্ষমতার ব্যবহার করে রাতারাতি ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রভাবশালী দুই ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠেন এই দুই সহোদর।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৬ মে রাতে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলার ঘটনায় ১৮ মে সুবল চন্দ্র সাহা কোতয়ালী থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। ওই মামলায় ৬ জুন রাতে বরকত ও রুবেলসহ ৯ জনকে বদরপুরসহ শহরের বিভিন্নস্থান হতে আটক করে পুলিশ।


আরো সংবাদ



premium cement