২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
ফরিদপুর

পাটের দামে কৃষক মুখে হাসি ফুটলেও বিপাকে মিল মালিকেরা

- ছবি : নয়া দিগন্ত

ফরিদপুরে এ বছরে পাটের ন্যায্য দাম পেয়ে খুশি কৃষকেরা। মৌসুমের শুরুতে জমিতে এবার পাটের বীজ বপণের পর বৃষ্টিতে একাধিকবার চারা গাছের ক্ষতি হলেও ভাল দাম পেয়ে সেই লোকসান পুষিয়ে নিতে পরেছেন তারা।

তবে পাটের বাজারে ফড়িয়াদের দাপটের কারণে মিল মালিকেরা পড়েছেন বিপাকে। কৃষকের পাট গুদামজাত করে মিল মালিকদের কাছ থেকে তারা অধিকমূল্য হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন পাট কল মালিকদের একাধিক সংগঠন। দেশের প্রধান অর্থকরী ফসল পাটের অবস্থা জানতে বিভিন্ন বাজার সরেজমিনে ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।

সোনালী আঁশ খ্যাত পাটের জন্য পরিচিত জেলা হচ্ছে ফরিদপুর। এখানে উন্নতমানের পাট উৎপাদিত হয় বলে কৃষকেরা পাট আবাদে অভ্যস্ত। দীর্ঘ সময় ধরে পাট চাষ করে কাঙ্খিত মূল্য না পেলেও পাটকলগুলোর চাহিদা থাকায় তারা পাটের আবাদ ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ফরিদপুর জেলায় ৮২ হাজার ৯৯৬ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে যা লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে গেছে। গত বছরের তুলনায় পাটের আবাদের পরিমাণও বেড়েছে। ফরিদপুরের চরভদ্রাসন, সদরপুর ও আলফাডাঙ্গা বাদে বাদবাকি জেলা সদরসহ বোয়ালমারী, মধুখালী, ভাঙ্গা, নগরকান্দা ও সালথা উপজেলাতে পাটের আবাদ বেশি হয়ে থাকে। এর মধ্যে তোষা জাতের পাট ৯০ শতাংশ জমিতে আবাদ করা হয়।

ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. হযরত আলী বলেন, এ বছর পাটের আবাদ সন্তোষজনক। পাটের দামও ভালো পাওয়া গেছে। এতে কৃষকদের মুখে পাট চাষ করে হাসি ফুটেছে।

এ বছর মৌসুমের শুরুতে বাজারে প্রতিমণ পাটের দাম মিলেছে ২৪ শ’ হতে ২৮ শ’ টাকা দরে। গত বছরের তুলনায় যা অনেক বেশি। ফরিদপুরের কানাইপুর, সাতৈর, পুখুরিয়াসহ প্রসিদ্ধ হাটে পাটের বাজার মূল্য ছিল একই রকম।

ফরিদপুরের অন্যতম পাট চাষি আদর্শ কৃষক হিসেবে পরিচিত আবু সাঈদ চৌধুরী বারি বলেন, বৈরি আবহাওয়ার কারণে এবছর পাটের আবাদ করে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলাম। তবে বাজারে পাট ওঠার পর যে দাম পেয়েছি তাতে আমরা খুশি।

এদিকে, পাটের বাজারে মধ্যস্বত্ত্বভোগী ফড়িয়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে পাটভিত্তিক বিভিন্ন সংগঠন। তাদের অভিযোগ, অবৈধ মজুদদারদের কারসাজিতে বাজারে কাঁচা পাটের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি হচ্ছে। এতে পাটকলগুলোর উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে।

বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (জেএসএ) সহ-সভাপতি ফারিয়ান ইউসুফ বলেন, সরকারি আইন মোতাবেক এক হাজার মণ পাটের বেশি কাঁচা পাট মজুদ রাখার অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও অবৈধ মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা পাট মজুদ করে রাখছে। বাজারে লাইসেন্সবিহীন অবৈধ মজুদদারদের তৎপরতাও রয়েছে। এসব বন্ধে সরকারের কার্যকরি হস্তক্ষেপ জরুরি।


আরো সংবাদ



premium cement