গাজীপুরে গার্মেন্টসকর্মী গণধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার ৩
- গাজীপুর সংবাদদাতা
- ২২ অক্টোবর ২০২০, ২০:৫৬
গাজীপুরের কাশিমপুরে গার্মেন্টস কর্মীকে গণধর্ষণের অভিযোগে তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরে ধর্ষণকারীদের শস্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে থানার সামনে বিক্ষোভ করেছে ওই পোশাক ধর্ষিতার সহকর্মীরা।
আটককৃত তিনজন হলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুর থানাধীন সারদাগঞ্জ এলাকার শাহাদত হোসেন (৩২), ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থানার গোবরকুড়া এলাকার আমিনুল ইসলাম (২৮), বগুড়া জেলার আদমদিঘী থানা এলাকার বায়োজিদ হোসেন (২৫)। এদের মধ্যে বায়েজিদ সারদাগঞ্জ এলাকার ৬৫ বিঘা হাউজিংয়ের সিকিউরিটি গার্ড।
কারখানার চেয়ারম্যান কাজী আতাউর রহমানসহ শ্রমিকরা ও স্থানীয়রা জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুর থানাধীন সারদাগঞ্জের হোসেনের বাসায় ভাড়া থেকে স্থানীয় কাজী মার্কেট এলাকার আরব ফ্যাশন লিমিটেড পোশাক কারখানায় চাকরি করেন ওই নারী (২৫)। তার গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলা সদর থানার সরকার পাড়া এলাকায়। শিপমেন্টের কাজ শেষে বুধবার রাত দেড়টার দিকে বাসায় ফিরছিলেন তিনি। তাকে বাসা পর্যন্ত এগিয়ে দেয়ার জন্য কারখানার কাটিং ম্যানেজার উজ্জল তার সাথে যাচ্ছিলেন। তারা স্থানীয় স্কয়ার গেইট পুকুরপাড় এলাকায় পৌঁছলে কয়েক যুবক তাদের পথরোধ করে। অভিযুক্তরা এসময় তাদেরকে মারধর করে পাশের হাউজিং এলাকার (৬৫ বিঘা হাউজিং) একটি জমিতে নিয়ে যায়। সেখানে ওই হাউজিংয়ের সিকিউরিটি গার্ডরুমের পাশের একটি বাঁশের খুঁটির সাথে উজ্জলকে বেঁধে পুনরায় মারধর করে পরে ওই দু’জনের স্বজনদের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা।
পরে অভিযুক্তরা ওই নারীকে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে। রাতভর গণধর্ষণ শেষে বৃহস্পতিবার ভোরে ওই দুই পোশাক কর্মীকে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই কারখানার শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে সকালে জিএমপি’র কাশিমপুর থানার গেইটে জড়ো হয়ে ঘটনার প্রতিবাদে ও ধর্ষণকারীদের শাস্তির দাবি জানায়।
জিএমপি’র কাশিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবে খুদা জানান, বুধবার দিবাগত রাতের গণধর্ষণের ঘটনায় ভিকটিমকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে আটক করা হলেও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দু’জনকে তাদের স্বজনদের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার খোন্দকার লুৎফুল কবির জানান, পোশাক কর্মীকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর একই থানার মোজার মিল এলাকায় বাসা থেকে নিয়ে এক কিশোরীকে গণধর্ষণ করেছে কয়েকজন যুবক। এ ঘটনায় জড়িত কারখানার কর্মী শাকিল (২৪) ও শান্ত (২০) নামের দু’জনকে পরদিন নওগাঁ সদর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এছাড়াও ওই ঘটনার এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১৪ অক্টোবর রাতে বেড়াতে গিয়ে একই থানার জিরানী এলাকায় প্রাইভেটকারের ভিতর ধর্ষণের শিকার হয়েছেন পার্লারের মালিক এক নারী। এঘটনায় পুলিশ ওই কারেরচালক পিন্টু মিয়াকে (২৯) গ্রেফতার করে। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে ধর্ষণের একাধিক ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।