১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গজারিয়ায় যুবকের কাটা হাত দুই সপ্তাহেও উদ্ধার হয়নি

গজারিয়ায় যুবকের কাটা হাত দুই সপ্তাহেও উদ্ধার হয়নি - ছবি : নয়া দিগন্ত

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় চাঁদা না দেয়ায় সন্ত্রাসীরা রুবেল প্রধান নামে এক যুবকের হাত কেটে নিয়ে গেছে। এ ঘটনার ১২ দিন পরও পুলিশ ওই কাটা হাত উদ্ধার করতে পারেনি।

দাবিকৃত ১০ লাখ টাকা না দেয়ায় যুবলীগ নেতা শাহজাহান খানের নেতৃত্বে গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০-২৫ জনের সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল নিয়ে রুবেল প্রধানের ওপর হামলা চালায়।

১০ লাখ টাকার মধ্যে দুই লাখ টাকা চাঁদা নিয়েও ক্ষ্যান্ত হয়নি সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজরা। আরো ৮ লাখ টাকার জন্য রুবেল প্রধানকে মেরে রক্তাক্ত করে তার বাম হাতের কব্জি কেটে উল্লাস করে শাহজাহান খানের সন্ত্রাসী বাহিনী।

এমন নির্মম ঘটনার দুই সপ্তাহ পরও এখন পর্যন্ত রুবেল প্রধানের কাটা ওই হাত পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি।

পুলিশের নীরব ভূমিকার কারণে এলাকায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। হাতের কব্জি কেটে মোয়াজ্জেম মাস্টারের বাড়ির বিছানার চাঁদরে রেখে এটার ছবি তোলা হয় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা। সেই রক্তাক্ত চাঁদরটিও উদ্ধার করেনি পুলিশ।

এলাকাবাসীর দাবি, গজারিয়া উপজেলার টেঙ্গারচর ইউনিয়নের বৈদ্যেরগাঁও এলাকার শাহজাহান খানের ক্লাব ঘর কেন্দ্র করেই টেঙ্গারচর ইউনিয়নে একটার পর একটা ঘটনা ঘটেই চলছে। ২৫-২৬ জনের একটি কিশোর গ্যাং তৈরি করে এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক শাহজাহান খান।

কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধ এখন সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ প্রশাসনকেও তারা পরোয়া করছে না। এ কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে আরমান (২৫), সাইদুল (২৫), জাহিদুল (২৩), আল আমিন খান (২৭), আব্দুল কাদির খান (২৫), মাঈন (২২), সজিব খান (২৩), মহিউদ্দিন (২২), তামজিদ সরকার (২৩), নাঈম (১৮) ও সাদেক খানের (২৬) বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ সবচেয়ে বেশি।

সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, যৌন হয়রানি ও ধর্ষণসহ এহেন অপকর্ম নেই যে এ বাহিনী করে না। এক বছরের মধ্যে এদের বিরুদ্ধে ৮ থেকে ১০টি মামলা হয়েছে গজারিয়া থানায়। পুলিশ মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করলে কোর্টেও মামলা করা হয়েছে। এদের ভয়ে এলাকার সাধারণ নারী-পুরুষ কেউই স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছেন না। এমন আরো ৮-১০টি সন্ত্রাসী ঘটনা ঘঠিয়েছে এই বাহিনী, মামলা করতে সাহসই পাননি ভুক্তভোগীরা।

এ বিষয়ে শাহজাহান খান জানান, ঘটনার দিন আমি নারায়ণগঞ্জে একটি মিটিংয়ে ছিলাম, এসপি ও ডিসি অফিসে বিভিন্ন কাজে ছিলাম। আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না এবং এ সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাইনুদ্দিন জানান, এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ কয়েক দফা অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু আসামিদের পাওয়া যায়নি। রুবেল প্রধানের কাটা হাত উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। একজন আসামিকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে আনা হয়েছে।

হাতের কব্জি কাটা অংশটি ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে। কারা এই কাটা হাতের ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দিল তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা উচিত বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।


আরো সংবাদ



premium cement