১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কিশোরগঞ্জের গৃহকর্মীকে বর্বর নির্যাতন, থানায় অভিযোগ

কিশোরগঞ্জের গৃহকর্মীকে বর্বর নির্যাতন, থানায় মামালা - নয়া দিগন্ত

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার সামিরা (১৪) নামের এক গৃহকর্মীকে বর্বর নির্যাতনের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বুধবার ওগৃহকর্তা একই গ্রামের মাহবুবুর রহমান ও তার স্ত্রী বিউটি আক্তারসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করে পাকুন্দিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন সেলিম মিয়া।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই মাস আগে একই গ্রামের সরকারি চাকুরীজীবি মাহবুবুর রহমানের ঢাকাস্থ মিরপুরের ভাড়া বাসায় সামিরাকে গৃহকর্মী হিসেবে নেওয়া হয়। এর কিছুদিন পর থেকেই নানা বিষয় নিয়ে গৃহকর্তী বিউটি আক্তার সামিরাকে বকাঝকা ও মারধর করে। একপর্যায়ে সামিরা মারধরের ভয়ে পাশের বাসায় পালিয়ে আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে গৃহকর্তা মাহবুবুর রহমান সামিরাকে তার বাসায় নিয়ে আসে। বাসায় এনে মশলা ভাটার শীল দিয়ে মাহবুবুর রহমান ও রুটি বানানোর বেলাইন দিয়ে গৃহকর্তী বিউটি আক্তার সামিরার শরীরের বিভিন্ন অংশে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। একপর্যায়ে সামিরা অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। গত ৩০ জুলাই মুমূর্ষ অবস্থায় সামিরাকে মাহবুবুর রহমান নিজ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসে। বাড়িতে এনে নির্যাতনের বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য তাকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। পরে মাহবুবুর রহমান মুঠোফোনে সামিরার বাবাকে খবর দেয় তার বাড়িতে আসার জন্য।

খবর পেয়ে সামিরার বাবা ওই বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হলে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে তার হাতে সামিরাকে তুলে দেন। বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর সামিরা তার ওপর অমানবিক নির্যাতনের বিষয়টি তার মা-বাবার কাছে খুলে বলে। সামিরার শারীরিক অবস্থা অবনতি হতে থাকলে গত ২ আগস্ট বাজিতপুরের ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় গৃহকর্তা মাহবুবুর রহমান। সেখানে ভর্তি না রাখায় পরে তাকে কিশোরগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে পালিয়ে আসে মাহবুবুর রহমান। বর্তমানে সামিরা ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সামিরার বাবা সেলিম মিয়া বলেন, আমার অভাব-অনটনের সংসার। তাই মেয়ের সুখের আশায় তার বাসায় দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা মেয়ের ওপর এমন অত্যাচার-নির্যাতন করবে আমি কল্পনাও করতে পারিনি। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।

অভিযুক্ত গৃহকর্তা মো. মাহবুবুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তাই ঘটনার ব্যাপারে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মফিজুর রহমান অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, যেহেতু ঘটনাটি ঢাকার মিরপুরের। তাই বাসার প্রকৃত ঠিকানা সংগ্রহ করে অভিযোগটি সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement