২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ব্যাপক জনসমাগম ঘটিয়ে ছেলের বৌভাত করায় ইউএনও অফিস সুপারকে শোকজ

প্রতীকী ছবি -

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে করোনারভাইরাসের প্রার্দুভাবের মাঝেই ব্যাপক জনসমাগম ঘটিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘটনা ঘটেছে। এর পরিপ্রেক্ষতে অফিস সুপারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম হেদায়েতুল ইসলাম। তিন কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেছেন। উপজেলা প্রশাসনের দফতরের অফিস সুপারের ছেলের বৌভাত অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় এ শোকজ করা হয়েছে।

জানা গেছে, শনিবার সকালে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সুপার এসএম আসলামের ছেলে আয়াতুল্লাহর বৌভাত অনুষ্ঠানে প্রায় চার থেকে পাঁচ শ’ লোকের জনসমাগম হয়। আড়কান্দি গ্রামে গত শুক্রবার তার ছেলের বিয়ে হয়। বেলা সাড়ে ১২টার সময় বহরপুর ইউনিয়নের ইলিশকোল গ্রামের বালিয়াকান্দি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অফিসের পূর্ব দিকে আসলামের বাড়িতে বহু মানুষের উপস্থিতি ছিল। বাড়ির ভিতরের প্যান্ডেলে পর্যাপ্ত আসন না থাকায় এ সময় অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেল, মাইক্রো, ভ্যান, অটোগাড়ি যোগে আসা আমন্ত্রিত অতিথিদের বাড়ির বাইরে ও ভিতরে অপেক্ষা করতে থাকেন। প্রতিটি বৈঠকে ছিলো ৫০-৬০ জন করে বসার ব্যবস্থা। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে পুরো বাড়ি মানুষে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। নারীরা গাদাগাদি করে বসে ছিলেন ঘরের মধ্যে। কোনো প্রকার শারীরিক দূরত্বের বালাই ছিল না। বাড়ির বাইরে তখনো অপেক্ষায় ছিল বহু মানুষ।

বেলা সাড়ে ১২টায় অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব থেকে বের হয়ে একজন বৃদ্ধা বলেন, প্রতিটি পর্বে ৫০-৬০ জন লোক বসে খানা খাচ্ছে। এখনো অনেক মানুষ খাওয়ার বাকি আছে। বাইরের বাইরে ও ভিতরে অনেকেই অপেক্ষা করছে। তাতে করে আরো ৫-৭টি বৈঠকের মাঝে অতিথি আপ্যায়ন সম্পন্ন হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি বলেন, ‘তিনি ইউএনও অফিসের স্টাফ। যা করবে তাই ঠিক। তা না হলে এই করোনার মধ্যে যেখানে জানাযায় লোকজন জড়ো হচ্ছে না, মসজিদে একসঙ্গে নামাজ পরতে পারছি না, সেখানে শত শত মানুষের উপস্থিতি ঘটেছে এই বৌভাত অনুষ্টানে, সত্যিই অদ্ভুত!’

এ বিষয়ে বৌভাতের আয়োজনকারী ইউএনও অফিসের অফিস সুপার এস এম আসলাম বলেন, আমার একমাত্র ছেলে আয়াতুল্লাহকে পারিবারিকভাবে বিয়ে দেয়া হয়। তবে যত সামান্য আয়োজন করেছি। বেশি লোকজনকে বলিনি। বিষয়টি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। যে পরিমান লোকজনের কথা বলা হচ্ছে, তা সঠিক নয়। এক থেকে দেড় শত লোকের আয়োজন ছিল। সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্য সম্মতভাবে পর্যায়ক্রমে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, ‘আমার কাছে আসলাম সাহেব তার পুত্রের বিয়ের বিষয়টি বলেছিলেন। আমি তাকে নিরুৎসাহিত করেছিলাম এখন পুত্রের বিয়ে দিতে, কোনোভাবেই যেন স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন না হয় সেটিও স্পষ্টভাবে বলেছি। পারিবারিকভাবে সীমিত পরিসরে তাকে কাজ সম্পন্ন করতে বলেছি। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। তিন কর্মদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব প্রেরণের জন্য বলা হয়েছে। জবার পাওয়ার পর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’


আরো সংবাদ



premium cement