২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

নাগরপুরে জমে উঠেছে নৌকার হাট

নাগরপুরে জমে উঠেছে নৌকার হাট - ছবি : নয়া দিগন্ত

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে জমে উঠেছে নৌকা বিক্রির হাট। করোনা মহামারির সময়ে সামাজিক দূরত্ববজায় রেখে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সরগরম এখন উপজেলার গয়হাটার নৌকার হাট। সারি সারি নৌকার পসরা দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। সপ্তাহের প্রতি শনিবারে গয়হাটার উদয় তারা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে কেনা-বেচা হয় বিভিন্ন প্রকারের বাহারি নৌকা।

সরেজমিনে শনিবার দুপুরে উপজেলার গয়হাটা নৌকার হাটে গিয়ে জানা যায়, আশির দশকের প্রথম দিকে এ বাজারে নৌকা বিক্রির হাট শুরু হয়। সহস্রাধিক পরিবার দীর্ঘদিন ধরে নৌকা-বৈঠা তৈরি ও বিক্রি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। বর্ষায় নদীমাতৃক এ অঞ্চলের কৃষিজীবী মানুষের জীবন-জীবিকার অন্যতম বাহনই হচ্ছে নৌকা। আষাঢ় মাস থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত বসে এ নৌকার হাট। গয়হাটা বাজারে ও খালের পাড়ে রাস্তার ওপরে দুপাশজুড়ে বিভিন্ন সাইজের নৌকার বেচাকেনা চলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত।

নৌকা হাটে গয়হাটা এলাকার নৌকা তৈরির কারিগর বিষ্ণ সূত্রধর বলেন, বাপ-দাদার এ পেশা তিনি ১০ বছর যাবৎ টিকিয়ে রেখে রেইনট্রি, মেহগিনি, কড়ই, আমড়া, চাম্বল প্রভৃতি গাছের কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরি করে আসছেন। একটি নৌকা তৈরি করতে দু’জন শ্রমিকের সময় লাগে এক থেকে তিন দিন আর প্রকারভেদে খরচ হয় তিন হাজার থেকে সাত হাজার টাকা। অপরদিকে এগুলো বিক্রি হয় ছয় থেকে ১২ হাজার টাকায়।

উপজেলার তিরছা এলাকার নৌকা বিক্রেতা অনিল সরকার জানান, একশ্রেণির পাইকাররা এখান থেকে নৌকা কিনে অন্য জেলায় নিয়ে বিক্রি করেন। বিশেষ করে মানিকগঞ্জের ঘিওর এলাকার পাইকার বেশি আসে এখানে। শ্রমিকদের মজুরি ও কাঠের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আগের চেয়ে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। ফলে লাভ কম হয়। অপর দিকে বর্ষায় এবার নৌকার চাহিদা বেশি বলে বেচাকিনি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তিনি আরো বলেন, আজ সকালে ৩০টি নৌকা বাজারে এনেছেন ১৫টির মত বিক্রিও হয়েছে। আরো বিক্রি হবে বলেও আশা করছেন। প্রতিবছর তিনি প্রায় তিন হাজার থেকে সারে তিন হাজার নৌকা পাইকারী ও খুচরা বিক্রি করে থাকেন।

একাধিক নৌকা বিক্রেতারা জানান, এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা বর্ষা ও পানির এ মৌসুমে ধান, বিলের শাপলা, শাক সবজি, নার্সারি ব্যবসা, পেয়ারা, আমড়া, পানি কচু, লেবু, কলা প্রভৃতি কাঁচামাল ও ফসলের বেচাকেনা হয় নৌকায় করেই। আর এ কারণেই এ সময় নৌকার কদর বেড়ে যায়। প্রতি হাটে দেড়’শ থেকে দুই’শ নৌকা বিক্রি হয় বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

ইজারাদার জয়নাল আবেদীন বিদ্যুৎ জানান, বিগত কয়েক বছর যাবৎ স্বাভাবিকভাবেই নৌকা প্রতি ১০০ থেকে দেড়’শ টাকা খাজনা করে তোলা হচ্ছে। এবারো একইভাবে তোলা হচ্ছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তাসহ সব ধরণের অনিয়ম ও চাঁদাবাজী ঠেকাতে ইজারাদারের ৭-৮ জন সদস্য সচেষ্ট ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। যদি কেউ বাজারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার প্রয়াসে অনিয়ম করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement