২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

করোনাকালে কৃষিতে ব্যস্ত দোহারের রাজিব

দিনের অধিকাংশ সময় রাজিব শরীফ এই জমিতেই কাটাচ্ছেন - ছবি : নয়া দিগন্ত

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে মানুষ যখন দিশেহারা, তখন কৃষিকাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঢাকার দোহার উপজেলার কাটাখালী এলাকার রাজিব শরীফ। ছাত্র রাজনীতিতে পরিচিতির পাশাপাশি কৃষি কাজের জন্য এলাকার মানুষের কাছে রয়েছে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে তার।

উপজেলার কাটাখালীর নিজ বাড়ির পাশেই রয়েছে নিজস্ব ফসলি জমি। করোনাকালে দিনের অধিকাংশ সময় কাটে সেই জমিতে। এই এলাকার মানুষজন আগে থেকেই কৃষি কাজের সাথে নিবীড়ভাবে সম্পৃক্ত থেকে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। তাই অন্যদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে উৎপাদন করে যাচ্ছেন নানা ধরনের ফসল। ভালো ফলন পাওয়ার জন্য প্রযুক্তির সাথে কৃষি কাজ করে লাভবান হচ্ছেন তিনি। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে সবজি চাষ না করলেও নিজের ও স্বজনদের দেয়ার পর যা থাকে তা বিক্রি করে দেন। কখনো দাম ভালো পান, আবার কখনো উৎপাদন খরচ উঠে না। তাই এ নিয়ে তিনি ভাবেন না। নিজের হাতে ফসল উৎপাদন করার আনন্দই অন্যরকম বলে জানান তিনি। বীজ বপন করা থেকে ফসল আসা পর্যন্ত এই যে সময়টা খুবই মধুর। ফসল ফলানোর জন্য জমিতে যে সময় ব্যয় করি, গাছে ফলন আসার পর সত্যিকার অর্থে মনটা ভরে যায়, যা ভাষায় বুঝানো সম্ভব নয়!

বিষাক্ত সবজিতে যখন বাজার সয়লাব তখন বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করাটা স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য খুবই জরুরী। তাই তিনি স্বাস্থ্য সচেতনতা থেকে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করছেন শুরু থেকেই।

অন্য সময় রাজনীতি নিয়ে ব্যস্থ সময় পার করায় ইচ্ছা থাকা সত্বেও কৃষিকাজে যথেষ্ট সময় দিতে পারতেন না রাজিব শরীফ। করোনা পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক কর্মসূচি না থাকায় এই সময়টা কৃষিকাজে ব্যয় করছেন। তার দেখাদেখি এলাকায় তরুণ সমাজ কৃষিকাজের দিকে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। সঠিক বীজ বোপন, ভাল বীজ সংগ্রহ, মাটির গুনাগুন পরীক্ষা, আগাছা পরিষ্কার করা, গাছের সঠিক পরিচর্যা, রোগ নির্ণয়, পোকা দমন, সার প্রয়োগ ইত্যাদি কাজগুলো তিনি নিজেই করে থাকেন। এজন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ থাকা দরকার তা কৃষি অফিস থেকে গ্রহণ করেছেন, যার কারণে ফসলি গাছের কোনো সমস্যা হলে নিজেই তা সমাধান করতে পারেন।

বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও পোকা দমনের জন্য কীটনাশক ব্যবহার করা হলেও রাজিব ফসল উৎপাদনে জৈব সার ও জৈবিক পদ্ধতিতে পোকা দমনের কাজটি করেন থাকেন। সবজিতে রাসায়নিক সার ব্যবহার না করায় উৎপাদীত সবজি মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর নয় বলে জানান তিনি।

বর্তমানে রাজিবের সবজি বাগানে উৎপাদিত হচ্ছে বেগুন, কাঁচামরিচ, ঝিঙে, ধুন্দল, শশা, চিচিংগা, কুমড়া, চালকুমড়া, পেঁপে, ডাটা, ঢেঁড়স, করলা, পুদিনাসহ নানা ধরনের সবজি।

এ ব্যাপারে রাজিব শরীফ বলেন, বর্তমানে প্রযুক্তির সাথে কৃষিকাজ করতে হবে, তাহলে কৃষক লাভবান হতে পারবে। অন্যথায় এলোমেলো কৃষিতে সারাবছরই ভর্তুকি গুনতে হবে কৃষককে। বিষমুক্ত সবজি ফলমূল খেতে চাইতে সামান্য পরিশ্রমেই সবকিছুই বাড়িতে উৎপাদন করে খাওয়া সম্ভব।

দোহার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মামুন ইয়াকুব জানান, শখের বশে কিংবা বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে যারা এগিয়ে আসবেন তাদের সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার করা হবে। যাতে একজন কৃষক উদ্ধুদ্ধ হয়ে অনুপ্রেরণা নিয়ে কাজ করতে পারেন।


আরো সংবাদ



premium cement