২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশীকে হত্যা

ফরিদপুরে মানবপাচার চক্রের আরো দুই সদস্যকে গ্রেফতার

ফরিদপুরে মানবপাচার চক্রের আরো দুই সদস্যকে গ্রেফতার - নয়া দিগন্ত

লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশীকে হত্যার ঘটনায় মানবপাচারের চক্রের আরো দুই সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। বুধবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে তাদেরকে গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর হতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

আটককৃতরা হলো, গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার লোহাইড় গ্রামের মৃত রত্তন শিকদারের ছেলে সেন্টু শিকদার (৪৫) ও একই উপজেলার যাত্রবাড়ি এলাকার আব্দুর রব মন্ডলের স্ত্রী নার্গিস বেগম (৪০)। তাদেরকে নিজ নিজ গ্রাম হতে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব-৮, সিপিসি-২ এর কোম্পানী অধিনায়ক দেবাশীষ কর্মকার জানান, গ্রেফতারকৃতরা বিদেশে মানব পাচারকারী চক্রের অন্যতম সদস্য। এদের মধ্যে সেন্টু শিকদারের ভাই বশির শিকদার ও সেলিম শেখ (৩৫) নামে আরেক ব্যক্তি লিবিয়ায় থাকে। তাদের নেতৃত্বে লিবিয়ার বন্দীশালায় পাচারকৃত বাংলাদেশি যুবকদেরকে অর্ধাহারে-অনাহারে রেখে নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে এদেশে থাকা বিদেশগামীদের পরিবার বা আত্মিয়স্বজনদের নিকট হতে মুক্তিপণের নামে মোটা অংকের টাকা অদায় করা হয়।

তিনি জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ একটি আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্র ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মোটা অংকের বেতনের চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে মানবপাচার করছে। এই চক্রের সদস্যরা বাংলাদেশ, লিবিয়া ও ইতালিতে সমানভাবে সক্রিয়। এদের শিকার মূলত মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের উঠতি বয়সের বেকার যুবকরা। এরা বাংলাদেশ থেকে প্রাাথমিকভাবে যুবকদের লিবিয়ায় পাচার করে থাকে। এরপর লিবিয়ায় অবস্থানরত চক্রের সদস্যরা বিদেশগামীদেরকে বন্দিশালায় আটক রেখে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে এবং উক্ত বন্দীদের নিকটাত্মীয়দের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা দাবী করে। টাকা পেলে তাদেরকে লিবিয়া হতে নৌকাযোগে অবৈধ পন্থায় ইতালিতে গমনের সুযোগ করে দেয়া হয়। ক্ষেত্র বিশেষে বন্দীপ্রতি উক্ত চক্রটি পাঁচ থেকে দশ লক্ষ টাকা পর্যন্ত মুক্তিপণ আদায় করে বলে র‌্যাব জানতে পারে।

গ্রেফতারকৃত নার্গিসসহ বাংলাদেশে অবস্থানরত পাচারকারীরা ভিকটিমদের নিকটাত্মীয়দের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করে বলে র‌্যাবের এই অধিনায়ক জানান। তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২ অনুাযায়ী মামলা দায়ের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ মে লিবিয়ার মিজদা শহরে ২৬ বাংলাদেশীকে গুলি করে হত্যা করে আন্তর্জাাতিক মানব পাচারকারী চক্রের এক হোতা। নিহতদের মধ্যে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী গ্রামের আলমপুর গ্রামের কবির শেখের ছেলে কামরুল ইসলাম (২৫) নামে এক যুবক রয়েছে। এ ঘটনার পর কামরুল শেখ কামরুলের পাচারের ঘটনায় জড়িত ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ২০১২ সালের মানবপাচার দমন প্রতিরোধ আইনে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন কামরুলের বাবা। পুলিশ ওই মামলায় আসামী হিসেবে ইতিপূর্বে গত মঙ্গলবার ভোরে এনামুল হক গাজী (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement