২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

দোহারে ভূমিহীনদের মানবেতর জীবন যাপন, ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ

দোহারের কাঁশিয়াখালী বেঁরিবাধে ভূমিহীন একটি পরিবারের ঘর - নয়া দিগন্ত

কয়েক বছর আগে পদ্মা নদীর প্রবল ভাঙনে পূর্বপুরুষের ভিটামাটি হারায় দোহারের অরঙ্গাবাদ ও নবাবগঞ্জের চারাখালী এলাকার শত শত পরিবার। এক সময় সব থাকলেও এখন তারা ভূমিহীন। চলমান করোনায় গভীর সংকটে পড়েছে তারা। অনেকেই ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ করেছে।

নদী ভাঙনে ভিটামাটি হারানো মানুষগুলো জীবন ও জীবিকার তাগিদে নতুন করে ঘর সংসার শুরু করে। ভিটেমাটি হারিয়ে অনেকেই অন্যত্র চলে যান। জমি কিনে নতুন বসতি গড়ে তোলেন। কিন্তু যাদের সহায় সম্বল বলতে কিছুই ছিল না তারা নিরুপায় হয়ে আশ্রয় নেয় কাঁশিয়াখালী বেঁরিবাধে। কল্যানশ্রী এলাকায় রাস্তার পাশে ঘর বানিয়ে বসবাস শুরু করে। এমন পরিবারের সংখ্যা একেবারেই কম নয়। দুই থেকে তিন শতাধিক পরিবারের বসতি গড়ে উঠেছে এ এলাকায়।

এরমধ্যে রাস্তার পাড়ে বসতি গড়ে উঠেছে কমপক্ষে ৫০টি পরিবারের। রাস্তাঘেষেই সারিবদ্ধভাবে তোলা হয়েছে ঘরগুলো। এসব পরিবারের সদস্যরা কেউ দিনমজুরের, কেউ ফেরিওয়ালা, আবার কেউ স্কুলে আচার-ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালায়। সবাই দিন এনে দিন খাওয়ার মতো। কিন্তু করোনায় চলমান পরিস্থিতির কারণে থমকে গেছে  এদের জীবন জীবিকা। লকডাউনের দিন গুলো আহারে অর্ধাহারে কেটেছে তাদের।  লকডাউন উঠে গেলেও এখনো অনেকের ঘরেই খাবার নেই।

জনপদটি দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী হওয়ায় মানুষের কষ্টগুলো সবার নজরে আসে না। যে কারণে সামাজিক সংগঠন  কিংবা সরকারি সহযেগিতা থেকে বরাবরই তারা বঞ্চিত।

করোনার দুর্যোগে সরকার প্রতিটি এলাকায় কর্মহীনদের খাদ্য সহায়তা দিলেও এই এলাকায় তেমনটি দেখতে পাওয়া যায়নি। তাদের অভিযোগ এখানকার বাসিন্দারা যে কোনো দুর্যোগে কোনো ধরনের সহযোগিতা পায় না। সব সময়ই অবহেলিত নদী পাড়ের এসব মানুষ।

এদিকে নয়াবাড়ি ইউনিয়নের ৯ নং নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ইয়ার আলীর খাদ্য সহযেগিতা বিতরণের কথা জানালেও জয়কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ১ ও ৯ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য কর্তৃক কোন ধরনের ত্রাণ বিতরণ হয়নি বলে জানা যায়।

১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাবল শেখের বিরোদ্ধে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। করোনা দুর্যোগে সরকারের একাধিক বরাদ্দ আসলেও এখানকার বাসিন্দারা কোনো সহযোগিতা পাননি বলে জানান তারা।

এ ব্যাপারে কল্যানশ্রী এলাকার কিতাব আলী নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমরা কী অবস্থায় আছি এ ব্যাপারে কোনো খোঁজ খবরই নেয়নি  জন প্রতিনিধিরা।

জয়কৃষ্ণপুরের ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মরিয়ম নামের এক বৃদ্ধা নারী অভিযোগ করেন, আমার ঘরে খাবার নেই। অনেক কষ্ট করে দিন চলে কিন্তু এখানো পর্যন্ত কেউই খবর নেয়নি। 

এ ব্যাপারে জয়কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, সরকারের খাদ্য কর্মসূচীর খাদ্য আমরা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিতরণ করেছি। যদি কেউ না পেয়ে থাকে তাহলে আমরা তাদের পরবর্তীতে দেয়ার ব্যবস্থা করব।

এখানকার মানুষেরা জানান, করোনামুক্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারলে এ ধরনের সহযোগিতার মুখাপেক্ষী হতে হবে না তাদের। নিজ নিজ কর্মের মাধ্যমে জীবিকায় ফিরতে চান তারা।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল