২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

স্ত্রীকে বলেছিলেন, রাতে ফিরবেন...

আহাজারি করছেন নিহতের স্ত্রী, - ছবি : নয়া দিগন্ত

লাল রঙের টেপ দিয়ে মুখ পেঁচানো, রশি দিয়ে হাত-পা বাধা ও দুই চোখ উপড়ানো অবস্থায় এক ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা চালকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

অটোরিকশা ছিনিয়ে নেয়ার জন্য চালককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় বলে ধারণা করছে পুলিশ।

মঙ্গলবার সকালে উপজেলার ব্রাক্ষন্দী ইউনিয়নের মারুয়াদী এলাকার আড়াইহাজার-মদনপুর সড়কে ঢাল থেকে ওই লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।

নিহতের নাম জামান হোসেন (৪৬)। তিনি উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বগাদি গ্রামের শফিউদ্দিনের ছেলে। তার স্ত্রী সহ এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

জামানের ভাই জাকির হোসেন জানান, গত শুক্রবার সকালে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ক্রয় করেন জামান হোসেন। কিন্তু সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় বের হয়নি। ২৯ মার্চ সন্ধ্যায় গাড়ি নিয়ে বের হওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন জামান। এ ঘটনায় পরদিন সন্ধ্যায় জাকির আড়াইহাজার থানায় নিখোঁজের জিডি করেন। পরে মঙ্গলবার সকালে স্থানীয়রা রাস্তার পাশে লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশ ও স্বজনদের জানান। পরে পরিবারের লোকজন গিয়ে লাশ শনাক্ত করে।

আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়রা জানালে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। নিহতের হাত-পা রশি দিয়ে বাধা, দুই চোখ উপড়ানো ও মুখ লাল রঙয়ের টেপ দিয়ে পেঁচানো ছিল। এছাড়াও শরীরে একাধিক লাঠি বা কাঠ দিয়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অটোরিকশাটি পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, অটোরিকশা ছিনিয়ে নেয়ার জন্য তাকে এ নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

নিহতের স্ত্রী মারজিয়া বেগম বলেন, ‘অটোরিকশা কেনার পর সংসার চালানোর মতো হতে কোনো টাকা ছিল না। দুই দিন ঘরে বসে থাকায় চাল, ডাল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসও শেষ হয়ে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে রোববার সন্ধ্যায় নতুন অটোরিকশা নিয়ে বের হয়। আর যাওয়ার সময় বলে যায় রাতে ফিরে আসবে। কিন্তু সেই যে গেলো আর ফিরে আসলো না।’

আহাজারি করতে করতে তিনি বলেন, ‘অটোরিকশা নিয়ে গেছে নিয়ে যেতো। আমার স্বামীকে না মারতো। আমার সন্তানদের এতিম কেন করলো। আমার সব শেষ করে দিয়ে গেলো।’


আরো সংবাদ



premium cement