২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

অক্সিজেনের অভাবে শ্বাসকষ্টে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ফমেক হাসপাতালে

রিপা দাস - সংগৃহীত

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক প্রসূতি নারী অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন বলে অভিযোগ করেছেন মৃতের স্বজনেরা। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত্যুবরণকারী ওই নারীর নাম রিপা দাস (৩২)। তিনি রাজবাড়ি জেলার পাংশা উপজেলার রামকল গ্রামের মিঠুন সরকার (৩৮) এর স্ত্রী। রিপা রামকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ছিলেন। তিনি ফরিদপুরের টেপাখোলা নিবাসী অনিল কুমার দাসের মেয়ে। চার বছরের বিবাহিত জীবনে এই প্রথম সন্তানসম্ভবা হয়েছিলেন তিনি।
নিহত রিপার ভগ্নিপতি ধীরাজ কুমার (৪০) জানান, রিপা আড়াই মসের গর্ভবতী ছিলেন। কিন্তু এরই মাঝে তার রক্তক্ষরণ হওয়ায় রোববার দুপুর ২টার দিকে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এমআর (গর্ভপাত) করাতে বলেন।

ধীরাজ জানান, এরপর রোববার সন্ধা ৭টার দিকে রিপাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ কানিজ ফাতেমা তার এমআর করান। সকাল ৭টার দিকে সেখান থেকে তাকে বের করে বেডে দেয়া হয়। এসময় রিপার প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। দীর্ঘক্ষণ হাসপাতালের নার্স ও ইন্টার্নিদের কাছে অনুরোধ করেও তারা অক্সিজেন দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারেননি। প্রায় এক ঘণ্টা পর একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার আনা হলেও তার আগেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি। দুপুরে তার লাশ নিয়ে যাওয়া হয় রামকল গ্রামে।

সাইফুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সোমবার সকালে গাইনি বিশেষজ্ঞ কানিজ ফাতেমা আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, অক্সিজেনের অভাবে ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তবে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

ডা. কানিজ ফাতেমা জানান, অস্ত্রপচারের পর রোগীর অবস্থা অবস্থা ভালো ছিল। তবে সকালে হঠাৎ তার অবস্থার অবনতি ঘটায় তিনি মারা গেছেন। তখন তিনি সেখানে ছিলেন না।

এদিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে এসে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করেও চিকিৎসকের দেখা পাচ্ছেন না অনেক রোগী। শহরের পশ্চিম খাবাসপুর মহল্লার ব্যবসায়ী দিলদাল হোসেন (৪৪) জানান, গত রোববার তিনি সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই ঘন্টা টিকিট কেটে বসে থেকেও তিনি চর্মবিষয়ক কোনো চিকিৎসককে দেখাতে পারেননি।
সাইফুর রহমান বলেন, চিকিৎসকরা সরকারি নির্দেশনা মেনে ডাক্তাররা রোগী দেখছেন। এখানে এসে চিকিৎসা পায়নি এ জাতীয় কোনো অভিযোগ তাকে কেউ দেয়নি।

হাসপাতালে ডাক্তার না থাকায় এমপির উদ্বেগ
ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের এমপি খন্দকার মোশাররফ হোসেন বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে হাসপাতালে ডাক্তারদের অনুপস্থিতির ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আজ সোমবার দুপুরে তিনি সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেন, হাসপাতালে এসে রোগীরা ঠিকমত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না এ জাতীয় অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। এই সংকটকালে চিকিৎসকদের প্রতি মানুষের আস্থা ও ভরসা বেশী। তাই তাদের (চিকিৎসক) কর্তব্যকাজে গাফিলতি দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। তিনি বলেন, এ সমস্যার সমাধানে সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চিকৎসকসহ সংশ্লিষ্ট সব মহলকে নিয়ে জরুরি সভা আহ্বান করা হয়েছে।
ফরিদপুরে হাসপাতালে ডাক্তার না পেয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের দুর্ভোগের বিষয়ে সোমবার দৈনিক নয়াদিগন্তে একটি বিশদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।


আরো সংবাদ



premium cement