২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

টাঙ্গাইলে জিনের বাদশা সেজে কলেজছাত্রীকে নির্যাতন!

কথিত জিনের বাদশার নির্যাতনের শিকার কলেজছাত্রী শাহনাজ খাতুন। - ছবি : নয়া দিগন্ত

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে জিনের বাদশা সেজে শাহনাজ খাতুন (২০) নামে এক কলেজছাত্রীকে অমানুষিক নির্যাতন করেছেন সত্তর বছর বয়সী এক বৃদ্ধ।

২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে কালিহাতী উপজেলার মাদারিয়াপাড়া গ্রামে মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটে। শাহনাজের অবস্থা এখন আশঙ্কাজনক।

কথিত জিনের বাদশা হলেন একই গ্রামের হাজী দারোগ আলী। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, শাহনাজ ভূঞাপুরের ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। বাবা মারা যান বেশ আগে। শাহনাজ তার মা ও এক প্রতিবন্ধী চাচাকে নিয়ে বাড়িতে বসবাস করেন। তার অন্য চাচারা ঢাকায় থাকেন। গত ২৪ ফ্রেব্রুয়ারি শাহনাজ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় হাজী দারোগ আলী বলেন যে, শাহনাজকে জিনে ধরেছে। জিনের বাদশা ছাড়া তাকে বাঁচানো যাবে না।

তখন হাজী দারোগ আলী নিজেই জিনের বাদশা সেজে কলেজছাত্রী শাহনাজকে ঝাড়-ফুকের নামে শারীরিকভাবে ব্যাপক নির্যাতন করেন। এতে শাহনাজ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ওইদিনই রাত ১২টার দিকে তাকে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে শাহনাজের অবস্থার অবনতি হলে পরদিন মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসকেরা তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে রেফার করেন।

কিন্তু কথিত জিনের বাদশা দারোগ আলী প্রভাবশালী হওয়ায় তার ভয়ে অসহায় শাহনাজ আশঙ্কাজনক অবস্থায়ই হাসপাতাল ছাড়তে বাধ্য হন।

শাহনাজ এখন উঠে দাঁড়াতেই পারছেন না। তার চোখ দুটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শাহনাজ খাতুন ও তার মা নির্যাতনকারী দারোগ আলীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে দারোগ আলীর বাড়িতে গেলে পিছনের গেট দিয়ে তিনি পালিয়ে যান। তবে এলাকায় তিনি বেশ প্রভাবশালী বলে জানা গেছে। তার লোকজনের ভয়ে আতঙ্কে রয়েছে শাহনাজের পরিবার।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কালিহাতী থানার ওসি হাসান আল মামুন নয়া দিগন্তকে বলেন, বিষয়টি শুনেছি। এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। আমি নিজেই ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে অবশ্যই আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল