২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ফরিদপুরে ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণে অভিযান : অটোরিকশারও ছাড় নেই

পৌর মেয়র শেখ মাহতাব আলী মেথুর নেতৃত্বে মঙ্গলবার ইজিবাইকের বিরুদ্ধে অভিযান - ছবি : নয়া দিগন্ত

ফরিদপুরে ইঞ্জিনচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের পর এবার ইজিবাইক চলাচল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যে শহরে চার হাজার ইজিবাইককে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এখন এসব লাইসেন্সপ্রাপ্তদের বাইরে যেসব ইজিবাইক চলাচল করছে তাদেরকে আটক করা হচ্ছে।

পৌর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে নতুন করে কোনো ইজিবাইককে আপাতত আর লাইসেন্স দেয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি ইঞ্জিনচালিত রিকশার বিরুদ্ধেও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে, প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রিকশা চালকদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে শহরে রিকশা চলাচল সীমিত হয়ে পড়েছে। এতে নাগরিকগণ নানা ধরণের বিড়ম্বনায় পড়েছেন।

ফরিদপুর পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, এপর্যন্ত লাল ও সবুজ রঙে চিহ্নিত করে চার হাজার ইজিবাইককে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এসব ইজিবাইকের লাইসেন্স বাবদ ফি নেয়া হয়েছে ১১ শ’ ২৫ টাকা। এরমধ্যে ৯ শ’ ৭৫ টাকা ইজিবাইকের লাইসেন্স বাবদ আর বাকি টাকা চালকের লাইসেন্স ফি।

ফরিদপুর পৌর মেয়র শেখ মাহতাব আলী মেথু বলেন, জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা এ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। শহরের যানজট নিরসনের লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মঙ্গলবার থেকে শহরে ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণে অভিযান শুরু করা হয়েছে আবার।

তিনি জানান, শহরের বাইরে থেকে যেসব ইজিবাইক আসছে আমরা তাদেরকে একটি নির্দিষ্ট স্থান পর্যন্ত প্রবেশের অনুমতি দিয়েছি। যারা লাইসেন্স ছাড়া শহরে ইজিবাইক চালাবে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হবে। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে এখন এসব ইজিবাইকের বাইরে যেসব ইজিবাইক চলছে তাদেরকে আটক করা হচ্ছে। তবে তাদের আর নতুন করে লাইসেন্স নেয়ার সুযোগ নেই।

ইঞ্জিনচালিত রিকশাচালকদের ছাড় নয়
এদিকে, শহরে ইঞ্জিনচালিত রিকশাচালকদের কোনোপ্রকার ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন পৌর মেয়র মেখ মাহতাব আলী মেথু। তিনি জানান, প্যাডেলের বাইরে কোনোভাবেই ইঞ্জিনচালিত রিকশা চলাচলের অনুমতি দেয়া হবে না। এব্যাপারে পূর্বের সিদ্ধান্তই বহাল রয়েছে।

পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, নতুন করে প্যাডেলে চালিত ১০টি রিকশার লাইসেন্স নিয়েছে। এসব রিকশার লাইসেন্স এখনো দেয়া হচ্ছে। শহরে পায়েচালিত এসব রিকশার বাইরে কোনো রিকশা চালানো যাবে না।

এদিকে, শহরে ইঞ্জিনচালিত রিকশা চলাচলের অনুমতির দাবিতে দুদিন বিরতির পর বুধবার ২৩ অক্টোবর থেকে তারা আবারো আন্দোলনে নামবেন বলে জানান। তাদের দাবি, ধার-দেনা করে এসব রিকশা তারা তৈরি করেছেন। এখন নিষিদ্ধ করা হলে তারা কিস্তির টাকা পরিশোধ করবেন কিভাবে?

বর্তমানে শহরে এভাবে রিকশা চলাচল সীমিত হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ পড়েছেন বিপাকে। স্কুল-কলেজে ও অফিস আদালতে যাওয়া-আসায় সমস্যাসহ হাটবাজার ফেরত যাত্রীদের পায়ে হেটে ফিরতে হচ্ছে। তারা এ সমস্যার আশু সমাধান কামনা করেছেন।

পৌর মেয়র শেখ মাহতাব আলী মেথু জানান, গত ছয় মাস আগে থেকে রিকশাচালকদের বলা হচ্ছে এসব ইঞ্জিনচালিত রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করা হবে। আমাদের নিকট তথ্য আছে অনেকে ৭০ থেকে ৮০টি রিকশার মালিক যারা কেউই রিকশাচালক নন। তারা এসব রিকশা ভাড়ায় খাটাচ্ছেন। আমরা এখন এসব গ্যারেজেও অভিযান চালাবো।

নাগরিক সমস্যার ব্যাপারে তিনি জানান, প্যাডেলে চালিত রিকশা চলাচল পুনরায় শুরু হলে এ সমস্যা থাকবে না।

প্রসঙ্গত, গত ৮ সেপ্টেম্বর জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় শহরের ইঞ্জিচালিত রিকশা নিষিদ্ধ ও ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আলটিমেটাম দিয়ে পরের দিন থেকে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অভিযানে নামে পৌরসভা। এরপর থেকেই আন্দোলনে নামে রিকশাচালকেরা।


আরো সংবাদ



premium cement