১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গোয়ালন্দে পদ্মা নদীতে ইলিশ শিকারের ধুম!

-

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীতে ইলিশ শিকারের ধুম পড়েছে। রোববার সোহেল রানা নামের এক যুবক ইলিশ শিকার করে মনের আনন্দে তার ছবি গর্বের সাথে ফেসবুকেও পোস্ট করে। নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে অসাধু জেলেরা সুযোগ পেলেই মাছ শিকার করছে। উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগ অভিযান চালিয়ে প্রতিদিন জেলে আটক ও মাছসহ জাল জব্দ করছে। এরমধ্যেও সুযোগ পেলেই জেলেরা নদীতে নেমে পড়ছে।

মৎস্য বিভাগ বলছে, জনবল ঘাটতি, আর্থিক সঙ্কট, জেলেদের অধিক গতি সম্পন্ন ইঞ্জিনের নৌকা ব্যবহার ও টাস্কফোর্স সদস্যদের মধ্যে আন্তরিকতার ঘাটতি রয়েছে। যে কারণে সব সময় অভিযান চালানো যাচ্ছে না।

সরেজমিন দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম অঞ্চলের কয়েকটি পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, নদীতে অসংখ্য জেলে নৌকা। নদীর দিকে তাকালে শুধু নৌকা দেখা যায়। দ্রুতগতির ইঞ্জিন সম্পন্ন নৌকাগুলি কালো ধোঁয়া ছেড়ে ছুটাছুটি করছে। অনেক উজানে গিয়ে নদীতে জাল ফেলে ফের ভাটির দিকে ভেসে যাচ্ছে। ভাসতে ভাসতে জাল তুলে ফেলছে। আর তাতেই আটকা পড়ছে ইলিশ। অনেক নৌকায় থাকা লোকজনের মুখমণ্ডল কাপড় দিয়ে ঢাকা দেখা যায়।

অন্তার মোড় নদীর পাড়ে কয়েকজন জানান, নদীর এই এলাকায় অন্তঃত ২০০ নৌকা তো চলছেই। এত নৌকা আসল কোত্থেকে জানতে চাইলে বলেন, স্থানীয়দের পাশাপাশি পাবনা ও মানিকগঞ্জ থেকে এসেছেন। তাদের সাথে করে সুযোগ বুঝে সবাই নেমে পড়ছেন।

নদীর পাড়ে মাছ কেনার অপেক্ষায় থাকা কয়েকজন বলেন, প্রতিটি নৌকায় বর্তমানে ২০ কেজি থেকে দেড় মন করে ইলিশ মাছ রয়েছে। মাছ শিকার নিষিদ্ধকালিন সময়ে অনেকে ভয়ে নামে না। তাই এসময় যারা নামতে পারেন তাদের নৌকায় মাছ পাওয়া যায়। এছাড়া তুলনামূলক দামও কম, তাই অনেকে কিনতে আসেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, যখন প্রশাসন থেকে নদীতে নেমে ধাওয়া দেয় তখন তাড়াহুড়া করে জেলেরা নদীর পাড়ি বা গ্রামে ঢুকে পড়ে নিজেকে রক্ষা করতে। আর তখন অনেকটা কম দামে মাছ কেনা যায়।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় জানায়, ইলিশ মাছের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে মৎস্য বিভাগ ৯ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২২দিন নদীতে মাছ শিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এক শ্রেণির অসাধু জেলে নদীতে ইলিশ শিকার করায় বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) পর্যন্ত ৬২জনকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়ে জেলে পাঠিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। এছাড়া প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল ও ৫৬০ কেজির মতো ইলিশ মাছ জব্দ করেছে।

Untitled-2 (1)উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রেজাউল শরীফ বলেন, জনবল ঘাটতি ও আর্থিক সঙ্কট রয়েছে। এছাড়া জেলেদের নৌকার ইঞ্জিনের গতি এতই বেশি যে তাদের সাথে পেরে উঠতে পারিনা। আন্তমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত টাস্কফোর্স কমিটির মধ্যে আন্তরিকতার ঘাটতি রয়েছে। যেমন গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি রবিউল ইসলাম নিজের ইচ্ছেমতো নদীতে নামছেন। তিনি কাউকে না জানিয়ে বা সাথে না নিয়ে নদীতে নামছেন। কি করছে জানতে পারছিনা। যা আমার মতে মোটেও ঠিক হচ্ছে না।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি রবিউল ইসলাম বলেন, মৎস্য বিভাগ যদি একবার নামে আমরা নামছি বেলায় বেলায়। কারণ যখনই কোন এলাকায় যাই সেটাই আমাদের জন্য অভিযান। এসময় উপজেলা প্রশাসন বা মৎস্য কর্মকর্তাকে ফোনে জানিয়ে দেই। কাউকে আটক করলে ভ্রাম্যমান আদালতে বিচারের জন্য সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে পাঠিয়ে দেই। আর আমি যখন নদীর কিনারে যাব তখন আলাদা করে কি তাদেরকে বলতে হবে নাকি, ‘ভাই আমি এখন মৎস্য অভিযানের জন্য আসলাম !

 


আরো সংবাদ



premium cement