২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

যে ঝোপে বাঘ থাকে

-

জানো, এ ফার্ন ঝোপে বাঘ থাকে বলে হয়তো হুদো ঘাসের ইংরেজি নাম Tiger fern হয়েছে। ফার্নের বাংলা নাম কেন হুদো ঘাস করা হলো, তা বোঝা মুশকিল। তবে এ কথা সত্য, হুদো ঘাসের যে উচ্চতা ও ঘনত্ব তাতে এর ভেতর একটা আস্ত বাঘ দিব্যি নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারে। জয়মুনির বাওয়ালিদের কাছেও শোনা গেল সে কথা। তবে হুদো ঘাসকে খুঁজতে গহিন সুন্দরবনে যাওয়ার দরকার হয়নি। সুন্দরবন সংলগ্ন জনপদগুলোতে খাল, নদী এমনকি ছোট জলাশয়ের ধারেও এগুলোকে দিব্যি জন্মাতে দেখেছি। তবে বনের ভেতরে স্বাভাবিক পরিবেশে যত লম্বা ও ঘন ঝোপ হতে দেখেছি, ততটা এসব জায়গায় হয়নি।
হুদো ঘাসের উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Acrostichum aureum, পরিবার Pteridiaceae. অপেক্ষাকৃত স্বাদুপানির প্রভাবযুক্ত নদী বা খালের তীরে হুদো ঘাস জন্মে। যেসব অঞ্চলে উপকূলীয় বনাঞ্চলের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়, সেসব অঞ্চলে হুদো ঘাস বেশি হয়। ঘন হয়ে জন্মানোর কারণে লুকানোর জায়গা হিসেবে বাঘ হুদো ঘাস বেছে নেয়। পাতা বেশ লম্বা, পত্রফলক আয়তাকার লম্বা, আগা ভোঁতা। কচিপাতার রঙ লালচে খয়েরি, কিন্তু পরে সবুজ হয়ে যায়। পাতার ফলক বা ফ্রন্ড দৈর্ঘ্যে প্রায় এক মিটার পর্যন্ত হয়। হুদো ঘাস সুন্দরবনের একটি অতিপরিচিত উদ্ভিদ সম্পদ হলেও আসলে সে অন্য সব গাছপালার জন্য শত্রু। অন্য গাছকে জন্মাতে বা বাড়তে অনেক সময় বাধা দেয়। এ জন্য একে সুন্দরবনের এক অযাচিত আগাছা হিসেবে দেখা হয়। সুন্দরবনের বেশ কিছু প্রজাতির বড় গাছের নিচে নদীর চরে যেখানে শ্বাসমূল জন্মায়, সেখানে হুদো গাছের ঝোপ হলে সেসব গাছের ক্ষতি হয়; এমনকি মারা যায়। শুধু সুন্দরবনে নয়, টাইগার ফার্ন আছে থাইল্যান্ডের উপকূলীয় বনাঞ্চলেও।


আরো সংবাদ



premium cement