২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

নাগফণা নাগেশ্বর বৃত্তান্ত

-

জানো, নাগেশ্বরই যে নাগকেশর তা রাঙ্গামাটি গিয়েই পরিষ্কার হলো। তবে ঢাকায় বিভিন্নœ উদ্যানে ও রাস্তার পাশে, ভবন প্রাঙ্গণে যেসব নাগেশ্বরের দেখা মেলে, রাঙ্গামাটির নাগেশ্বরের সাথে তার কিছুটা তফাত আছে বৈকি। ঢাকার গাছগুলো বামন, ফুলও ছোট। অন্য দিকে পার্বত্য এলাকায় দেখা নাগেশ্বরের গাছ অনেক বেশি হৃষ্টপুষ্ট, বড় ও ঝোপালো। শুধু কি তাই? ফুলও ফোটে বেশ বড় বড়। ফেব্রুয়ারিতে রাঙ্গামাটি গিয়ে গাছের মাথায় মাথায় হলদে কেন্দ্রযুক্ত সাদা পাপড়ির নাগেশ্বর ফুলগুলো ফুটতে দেখলাম। ক’দিন পর ঢাকায় ফিরে এসে ঢাকার নাগেশ্বরের দিকে তাকিয়ে ফুল খোঁজার চেষ্টা করলাম। কিন্তু হায়! ফুল কোথায়? কোনো গাছে একটা ফুলও ফোটেনি। তাই ফুল ফোটার অপেক্ষায় রইলাম। দিন যায়, রাত যায়। অবশেষে মার্চে গিয়ে ঢাকার নাগেশ্বর গাছে ফুলের দেখা পেলাম। অবস্থান, আবহাওয়া না প্রজাতি- এর কোন কারণটা যে নাগেশ্বরের ফুল ফোটানোয় এমন পার্থক্য ঘটিয়ে দিলো কে জানে? তবে পার্বত্য এলাকায় দেখা নাগকেশর তথা নাগেশ্বরের আদিনিবাস যে পার্বত্য চট্টগ্রাম, সেটা মেনে নিতে সংশয় রইল না। পুঁথিপত্রে নাগেশ্বরের উৎপত্তি পেলাম ইন্দো-মালয় অঞ্চল। ভারতের পূর্বাংশ, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, আন্দামান, মিয়ানমার, বাংলাদেশ প্রভৃতি দেশে গাছটির বিস্তৃৃতি রয়েছে।
নাগেশ্বরের ইংরেজি নাম আয়রন উড ট্রি। তাহলে নাগেশ্বরই কি এ দেশের লোহাকাঠ। হবে হয়তো। কেননা নাগেশ্বরের কাঠের রঙ লোহার মতোই লালচে ধূসর ও শক্ত। নাগেশ্বর মাঝারি আকারের চিরসবুজ বৃক্ষ। তবে বইপত্রে আর একটি গাছও লোহাকাঠ নামে এ দেশে পরিচিত। নাগেশ্বরগাছ ১৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। কা- গোলাকৃতি, সরল, বাকল ধূসর ও মসৃণ। ছোট গাছকে পিরামিডের মতো দেখায়। যদিও চিরসবুজ গাছ, তথাপি তার পাতা ছাড়ার সময় বেশ বিক্ষিপ্ত। তাই গাছে মাঝে মাঝেই তামাটে রঙের কচিপাতার উপস্থিতি দেখা যায়। সেও নাগেশ্বরের আরেক সৌন্দর্য।
নাগেশ্বরের পাতা সরু, বর্শা ফলাকৃতি ও মসৃণ, ৫-১০ সেন্টিমিটার লম্বা। গাছ খুব ধীরে বাড়ে। ফুলের রঙ সাদা, চার পাপড়ি বিশিষ্ট। পাপড়ির অগ্রভাগ ভেতর দিকে সাপের ফণার মতো কিছুটা বাঁকানো। ফুল মাতাল করা সুগন্ধযুক্ত বলেই হয়তো এ থেকে এক রকমের আতর তৈরির কথা শোনা যায়। আদিবাসীরা নাগেশ্বরের শুকনো ফুল অরেচক, বমি, রক্ত আমাশয়, কাশি ও অর্শরোগ সারাতে ব্যবহার করে থাকেন। নাগেশ্বরের তেল বাতের মালিশে আরাম দেয়। ফল ডিম্বাকার, তবে অগ্রভাগ সুচালো। ফলের রঙ প্রথমে তামাটে পরে বাদামি। ফুল ফোটে ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত। ফুল সাদা রঙের হলেও মাঝে মাঝে কোনো কোনো গাছে হালকা গোলাপি আভাযুক্ত পাপড়ির ফুলও চোখে পড়ে। ফুলের কেন্দ্রস্থলে অসংখ্য হলুদ রঙের পুংকেশর ঝুঁটির মতো থাকে, যা ফুলের সৌন্দর্যকে অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। ঢাকার চন্দ্রিমা উদ্যান, রমনা পার্ক ও আইডিবি ভবনের সামনে এ গাছ আছে। এমনকি ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানেও নাগেশ্বর গাছের দেখা মেলে।
ছবি : লেখক, গাজীপুর ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান থেকে


আরো সংবাদ



premium cement
মোরেলগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে নদীতে ডুবে কিশোরের মৃত্যু আল-আকসায় কোনো ধরণের সহিংসতা ছাড়াই অনুষ্ঠিত হলো তৃতীয় জুমআর জামাত ‘পেশাগত স্বার্থে সাংবাদিকদের ঐক্যবব্ধ হতে হবে’ গাজাবাসীর প্রধান কথা- ‘আমাদের খাবার চাই’ অধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশপ্রেমিক জনতার ঐক্যের বিকল্প নেই : ডা: শফিকুর রহমান সোনাগাজীতে জামাতে নামাজ পড়ে বাইসাইকেল পুরস্কার পেল ২২ কিশোর গফরগাঁওয়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল লিবিয়ায় নিয়ে সালথার যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১ মনুষ্য চামড়ায় তৈরি বইয়ের মলাট সরানো হলো হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে : ডা: ইরান

সকল