২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

বুলেট পিঁপড়া

-

জানো, আমাদের চার পাশে কত ধরনেরই না পিঁপড়া হাঁটতে দেখা যায়। এদের মধ্যে রয়েছে কালো পিঁপড়া, লাল পিঁপড়া ইত্যাদি। আকারে এরা ছোট-বড়ও হয়ে থাকে। ছোট এ প্রাণীকে আমরা তেমন ভয় করি না। তবে লাল পিঁপড়াকে অনেকে বিষ পিঁপড়া বলে থাকেন। কেননা, এ পিঁপড়া মানুষকে কামড়ালে বেশ ব্যথা অনুভূত হয়। কালো বড় পিঁপড়া কামড়ালেও বেশ ব্যথা লাগে। তবে ছোট কালো পিঁপড়ারা বেশ শান্ত। মানুষকে কামড় দেয় না বললেই চলে। লাল পিঁপড়াকে অনেকে কাঠপিঁপড়াও বলে থাকেন। তবে এ পৃথিবীতে এমনো পিঁপড়া আছে, যা কামড় দিলে অল্পক্ষণ পরই অসহনীয় যন্ত্রণা শুরু হয়। এই যন্ত্রণা সহ্য করতে হয় টানা ২৪-২৫ ঘণ্টা। বিষাক্ত এ পিঁপড়াকে দক্ষিণ আমেরিকার মানুষ বুলেট পিঁপড়া বলে থাকে। সাধারণত দক্ষিণ আমেরিকায়ই এ পিঁপড়া দেখা যায়।
জানা গেছে, এরা মানুষের হাতে বা পায়ে কামড়ালে মারাত্মক যন্ত্রণার কারণে এসব অঙ্গ নাড়াচাড়া করাও যায় না। এরা কাউকে কামড়ালে অসহনীয় যন্ত্রণার কারণে তাকে প্রচণ্ড ঘামতে দেখা যায়। এমনকি শরীরে কাঁপুনি ওঠে। বমি বমি ভাবও হয়। এ কঠিন অবস্থা দেখে অনেকে রীতিমতো ঘাবড়ে যায়। খুবই যন্ত্রণাদায়ক প্রাণী বলে এ পিঁপড়াকে অনেকে ‘বুলেট পিঁপড়া’ বলে। তবে এর আসল বা প্রকৃত নাম ‘প্যারাপনেরা’ বলে জানা গেছে। এরা আকারে অন্যান্য পিঁপড়ার তুলনায় একটু বেশি বড়। এরা লম্বায় প্রায় এক ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে। আর গায়ের রঙ লালচে-কালো। তীব্র বিষাক্ত এ পিঁপড়াকে ২৪ ঘণ্টার প্রাণী বলে ডাকে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ প্যারাগুয়ার মানুষ। পৃথিবীতে যত ধরনের পোকামাকড় রয়েছে তার মধ্যে প্যারাপনেরাদের হুল বা স্টিং সবচেয়ে বেশি বিষাক্ত। এদের হুল সবচেয়ে বেশি বিষাক্ত হলেও এরা যথেষ্ট শান্তিপ্রিয়। শুধু নিজেদের আত্মরক্ষার জন্যই হুল ফুটিয়ে থাকে এরা। একটি দলে থাকে হাজার হাজার পিঁপড়া। রানী পিঁপড়ারা আকারে অন্যদের তুলনায় সামান্য বড় হয়ে থাকে। তবে এটি তীব্র বিষাক্ত পিঁপড়া হলেও দেশটির সংস্কৃতিতে এরা পালন করে ব্যাপক ভূমিকা। এ পিঁপড়া নিয়ে প্রায় নিয়মিত অনুষ্ঠান করে থাকে দক্ষিণ আমেরিকার একশ্রেণীর উপজাতি। একটি গোষ্ঠীর ছেলেদের ক্ষেত্রে নাবালক থেকে প্রাপ্ত বয়স্কে উপনীত হওয়ার জন্য এ পিঁপড়ার ব্যাপক ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। অর্থাৎ এ ধরনের ছেলেদের শরীরে এদের হুল ফুটানো হয়। সেখানে বিশেষ একধরনের হাতমোজা তৈরি করা হয় বাঁশ কিংবা অন্য কোনো পাতা দিয়ে। পিঁপড়া ধরে ওই মোজায় আটকে রাখা হয়। পরে সেই হাতমোজার মধ্যে হাত ঢুকিয়ে দেয়া হয়। এর ভেতর হাত রাখতে হয় আট থেকে ১০ মিনিট। এ সময়ের মধ্যে হাতে প্রচুর হুল ফুটানো হয়। এতে চিৎকারও করতে থাকে অনেকে। কারণ এত যন্ত্রণা কি সহ্য করা যায়? এমন পরীক্ষা দিতে হয় ২০ বার। যে এতে সফল হয় তাকে ‘পুরুষ’ হতে পেরেছে বলে ধরে নেয়া হয়। এ পিঁপড়ার পুরো নাম প্যারাপনেরা ক্লাভাটা, যার ইংরেজি নাম চধৎধঢ়ড়হবৎধ পষধাধঃধ.


আরো সংবাদ



premium cement