১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আইয়ুবিয়া জাতীয় উদ্যানের কথা

আইয়ুবিয়া জাতীয় উদ্যানের কথা -

আইয়ুবিয়া জাতীয় উদ্যানের কথা বলছি। এটি একটি সংরক্ষিত এলাকা। উদ্যানটি পাকিস্তানে টিকে থাকা আর্দ্র হিমালয়ান শীতপ্রধান বনের এক উদাহরণ। এর নামকরণ করা হয়েছে অবিভক্ত পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের নামানুসারে।
হিমালয়ের পাদদেশে মারি পাহাড়ে এ উদ্যানের অবস্থান। মারি হিল স্টেশন থেকে এর দূরত্ব প্রায় ২৬ কিলোমিটার। প্রাকৃতিক এ উদ্যানের উন্নয়ন করা হয়েছে একটি রিসোর্ট কমপ্লেক্স হিসেবে, যা গঠিত হয়েছে খায়রা গ্যালি, চ্যাংলা গ্যালি, খান্সপুর ও ঘোরাঢাকা মিনি রিসোর্টের সমন্বয়ে। ১৯৮৪ সালে উদ্যানের প্রতিষ্ঠাকালীন আয়তন ছিল ১ হাজার ৬৮৪ হেক্টর। ১৯৯৮ সাল নাগাদ এর আয়তন দাঁড়ায় ৩ হাজার ৩১২ হেক্টর।
আইয়ুবিয়া উদ্যানকে ঘিরে আছে সাতটি প্রধান গ্রাম এবং তিনটি ছোট শহর (নাথিয়াগ্যালি, আইয়ুবিয়া ও খান্সপুর)। জাতীয় উদ্যানটি তৈরি করা হয়েছে সংরক্ষিত বনভূমিতে। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসাধারণ। পাহাড় ঢেকে রেখেছে পাইন বন, যা ছোট ও বড় স্তন্যপায়ী প্রাণীর আশ্রয়স্থল। এখানে রয়েছে এশিয়াটিক চিতাবাঘ, কালো ভালুক, হলুদ গলার মার্টেন (নেউল জাতীয় প্রাণীবিশেষ), কাশ্মীর হিল ফক্স (এক ধরনের শেয়াল), লাল উড়–ক্কু কাঠবিড়াল, হিমালয়ান পাম সিভেট (এক ধরনের গন্ধগোকুল), মাস্কড সিভেট গন্ধগোকুলবিশেষ) ও রেসাস ম্যাকক (প্রাচীন প্রজাতির বানরবিশেষ)।
বিভিন্ন ধরনের পাখি দেখা যায় এখানে। এগুলোর মধ্যে কিছু পাখি পরিযায়ী, যারা এ উদ্যান হয়ে চলে যায় দূর অজানায়। সোনালি ঈগল, হিমালয়ান গ্রিফন ভালচার (পুরনো বিশ্বের শকুন), হানি বাজার্ড, পাহাড়-কবুতর, বিভিন্ন প্রজাতির ঘুঘু, ভিনদেশী বাজ ইত্যাদি পাখি দেখা যায় এখানে।
ভেষজ উদ্ভিদের জন্যও আইয়ুবিয়া জাতীয় উদ্যানের খ্যাতি আছে। এখানে প্রায় ২১ প্রকার ভেষজ উদ্ভিদ রয়েছে। এ উদ্যান পাকিস্তানের একটি প্রধান বিনোদন কেন্দ্র। প্রতি বছর ১ লাখের বেশি স্থানীয় পর্যটক এখানে আসে। এদের বেশিরভাগ আসে ইসলামাবাদ ও অ্যাবোটাবাদ থেকে।
আনন্দ বা শরীরচর্চার জন্য দীর্ঘ পদযাত্রা, দুর্গম পাহাড়ি পথে ভ্রমণ ইত্যাদির ব্যবস্থা আছে এখানে। রয়েছে বনভোজনের স্থান এবং মোটেল। এ ছাড়া এ উদ্যানে রয়েছে একটি চেয়ারলিফট, যাতে আরোহণ করে আনন্দের সাথে চারপাশের অনেক কিছু দেখা সম্ভব।

 


আরো সংবাদ



premium cement