লাফা শাকের ঝোল
- মৃত্যুঞ্জয় রায়
- ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
লাফা শাকের কথা বলছি। বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গে বাড়িতে বাড়িতে এই বিশেষ ধরনের শাক চাষ করা হয়। ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর প্রভৃতি এলাকায় লাফা শাক এক অন্যতম ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় খাবার। শীতকালেই এর চাষ ও খাওয়া হয়। লাফা শাকের গাছ অনেকটা ঘুঘরো আগাছার মতো। পাতা গোলাকার, কিনারা ঢেউ খেলানো, নরম। বীজ বোনার পনেরো দিন পর থেকেই শাক খাওয়া যায়। এক-দেড় মাস পর্যন্ত খাওয়া যায়। এরপর গাছ শক্ত হয়ে যায়। তিন মাস পরই গাছ থেকে বীজ পাওয়া যায়। গোলাকার গুটির ভেতরে বাদামি রঙের আট-দশ দানা বীজ হয়। বীজ বুনলেই চারা হয়।
লাফা শাক কচি অবস্থায় খেতে বেশ সুস্বাদু। শাক তুলে ওখানকার লোকেরা প্রথমে পানিতে ধুয়ে নেন। পরে টুকরো টুকরো করে কাটা হয়। তেল দিয়ে বা তেল ছাড়াই রান্না করা যায়। তবে অল্প তেল, লবণ, মরিচ, পেঁয়াজ ও রসুন দিয়ে রাঁধলে অত্যন্ত সুস্বাদু হয়।
ওখানকার অধিবাসীদের ধারণা, লাফা শাকের ঝোল শরীরের জন্য ঠা-া। এজন্য সর্দি-কাশি হলে তারা লাফা শাকের ঝোল খান না। এর স্বাদ কেমন আর কেনই বা লাফা শাকের ঝোল এ অঞ্চলে এত জনপ্রিয় জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও সদরের খলিসাকুড়ি গ্রামের মানিক চন্দ্র বর্মণ বলেন, লাফা শাক লাফা শাকই। লালশাক পুঁইশাকের মতো নয়। ওটার স্বাদই আলাদা। গরম ভাত আর লাফা শাকের ঝোল হলে আর কিছুর দরকার নেই। যুগের পর যুগ ধরে পূর্বপুরুষরা লাফা শাকের ঝোল খেয়ে আসছেন, তাই তারাও খেয়ে যাচ্ছেন এবং শিখিয়ে রেখে যাচ্ছেন শিশুদের। বাপ-দাদারা মজা করে খেতেন, আমরাও মজা করে খাই- বললেন আর এক গ্রামবাসী। এটা ওই অঞ্চলে এতটাই জনপ্রিয় খাবার যে, ঠাকুরগাঁওয়ের গ্রামগুলোতে এমন একটা বাড়িও খুঁজে পাওয়া কষ্টকর, যে বাড়িতে অল্প হলেও লাফা শাক নেই। সুপ্রাচীন কাল থেকে তা চলে আসছে। আর ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ তাদের সে ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। দেশের অন্য কোথাও লাফা শাকের চাষ হয় না। তাই ওখানকার লোকদের ধারণা, ওটা ওদের একান্তই নিজস্ব ঐতিহ্য।
ছবি: সংগ্রহ
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা