গম্ভীরার ইতিকথা
- ১৮ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০
আজ তোমরা জানবে গম্ভীরা সম্পর্কে। গম্ভীরার উৎপত্তিস্থল মালদহ বলে ধারণা করা হয়। লিখেছেন মৃত্যুঞ্জয় রায়
জানো, গম্ভীরা আমাদের দেশের একটি ঐতিহ্যবাহী লোকগান? চাঁপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চলে এই গানের প্রচলন আছে। সেখানে গম্ভীরা অত্যন্ত জনপ্রিয়। গম্ভীরা শব্দের উৎপত্তি খুব স্পষ্ট নয়। জনৈক গবেষকের মতে, দেবতা শিবের আরেক নাম গম্ভীর। গম্ভীর শব্দটি সংস্কৃত। তাই ধারণা করা হয় গম্ভীরা এক কথায় শিবেরই বন্দনাগীতি। কিন্তু বর্তমান গম্ভীরা আসলে তা নয়, এই গানে শিবের কোনো স্তুতি বা সম্পৃক্ততা নেই, আছে সমাজ, নানা ঘটনা ও জীবনের কথা। গম্ভীরা গানের উদ্ভব প্রায় দেড় হাজার বছর আগে। প্রাচীনকালে গম্ভীরা পূজা উৎসব হিসেবেই প্রচলিত ছিল। ভারতের মালদহ, দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি; বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীতে গম্ভীরা গান প্রচলিত আছে।
গম্ভীরা গান আদিতে দুই রকম থাকলেও এখন আদ্যের গম্ভীরা বিলুপ্ত, আছে পালা গম্ভীরা। পালা গম্ভীরায় বর্তমান সামাজিক পরিস্থিতি বা গুরুত্বপূর্ণ কোনো ঘটনা নিয়ে পালাগান আকারে তা পরিবেশন করা হয়। গম্ভীরার উৎপত্তিস্থল মালদহ বলে ধারণা করা হয়। এ গান দু’জন শিল্পী পরিবেশন করেন, সাথে থাকে বাদক দল। এই দু’জন শিল্পীর একজন নানা ও অন্যজন নাতির চরিত্রে বেশ কৌতুকপূর্ণ সংলাপ, নাচ ও গানের মাধ্যমে গান পরিবেশন করেন। নানা-নাতি ছাড়াও গম্ভীরা গানে ছয় থেকে সাতজন দোহার, একজন তবলাবাদক, একজন হারমোনিয়াম বাদক ও একজন জুড়িবাদক থাকেন। নানা ও নাতির পোশাক থাকে বাংলার কৃষকের মতো। নানার মুখে পাকা দাড়ি, মাথায় মাথাল, হাতে লাঠি, গায়ে গেঞ্জি, লুঙ্গি ও কোমরে গামছা। নাতি তালি দেয়া হাফপ্যান্ট ও গেঞ্জি পরে বেশ রস করেন। একেকটি গানের বা পালার পরিবেশনকাল এক থেকে দু’ঘণ্টার মধ্যেই থাকে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষায় গম্ভীরা গাওয়া হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের রাকিব উদ্দিন, কুতুবুল আলম, মাহবুবুল আলম, ধীরেন্দ্রনাথ ঘোষ, সফিউর রহমান, সৈয়দ শাহ জামাল প্রমুখ উল্লেখযোগ্য গম্ভীরা শিল্পী। মূলত এদের প্রচেষ্টা ও পরিবেশনাতেই গম্ভীরা একালে একটি জনপ্রিয় লোকগানে প্রাণ পায়। রসকষসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছয়টি গম্ভীরা দল বর্তমানে আছে।
ছবি : লেখক
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা