২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বইদ উৎসব

বইদ উৎসব -

আজ তোমরা জানবে বইদ উৎসব সম্পর্কে। এ উৎসব এখন বিলুপ্ত। তবে কিছু অঞ্চলে এটি টিকে আছে। লিখেছেন মৃত্যুঞ্জয় রায়
জানো, বইদ উৎসব এ দেশের এক বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্য? গ্রামের বিস্তীর্ণ সমতল নিচু জায়গাগুলোকে বলে বিল। বিলের মধ্যে যে খানাখন্দ বা ডোবা থাকে, সেগুলোকে স্থানবিশেষে বাইদ বা বইদ বলে। টিলার মধ্যবর্তী সমতল নিচু জায়গাকেও গাজীপুরে বাইদ বলে। বর্ষাকালে এসব নিচু জায়গা পানিতে ভরে যায়। এ পানিতে মাছ হয়। ফাল্গুন মাসে যখন গ্রামের বিলগুলোর পানি শুকিয়ে আসে তখন সেসব ডোবা থেকে মাছ ধরা হয়। তবে অতীতে এমনকি এখনো এ দেশের কোনো জায়গায় এ সময়ে গ্রামের সব লোক মিলে একটি নির্দিষ্ট দিনে উৎসব করে মাছ ধরতে নামে। একে বলে ‘বইদ উৎসব’।
গ্রামের কয়েকজন মিলে মাছ ধরার জন্য একটি দিন স্থির করে। সেদিন সকালবেলায় একজন মহিষের শিঙায় ফুঁ দিয়ে আওয়াজ তোলে। কোথাও কোথাও ঢোল বাজিয়ে মাছ ধরতে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়। আওয়াজ পেয়ে গ্রামের লোকেরা পলো, কোঁচ, ঠেলা জাল ইত্যাদি নিয়ে বিলের পাড়ে জড়ো হয়। এরপর শুরু হয় মাছ ধরা। দুপুর পর্যন্ত চলতে থাকে মাছ ধরা। দলে দলে একসাথে মাছ ধরার সে দৃশ্য অপূর্ব। পঞ্চগড়ে এভাবে মাছ ধরার পর সে মাছ থেকে চ্যাংমাছ পুড়িয়ে ভর্তা করে পরিবারের সবাই মিলে খাওয়ার প্রথা একসময় চালু ছিল। এমনকি অতীতে কোনো কোনো অঞ্চলের হিন্দু জেলে বা মৎস্যজীবী সম্প্রদায় ধৃত মাছ দেবতার উদ্দেশে নিবেদন করত। তারা দেবতার আশীর্বাদ কামনা করত যেন সারা বছর তারা বেশি বেশি মাছ ধরতে পারে। মূলত বইদ উৎসবের মাধ্যমে বছরের মাছ ধরা শুরু হয়। এসব প্রথা এখন বিলুপ্ত। তবে গাইবান্ধা, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ প্রভৃতি অঞ্চলে বইদ উৎসব রয়ে গেছে। পাবনায় একে বলে বউদ। ছবি : লেখক


আরো সংবাদ



premium cement