২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বেইরা হ্রদের কথা

-


আজ তোমরা জানবে বেইরা হ্রদ সম্পর্কে । শ্রীলঙ্কার সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে রয়েছে বেইরা হ্রদের ভূমিকা। লিখেছেন লোপাশ্রী আকন্দ

জানো, বেইরা একটি হ্রদের নাম? এটি একটি সুন্দর হ্রদ। শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর কেন্দ্রে এর অবস্থান। ঔপনিবেশিক স্মৃতিবিজড়িত বেইরা হ্রদ নগরীর একটি ল্যান্ডমার্ক। শত শত বছর ধরে ঔপনিবেশিক প্রভুরা তাদের অধিকৃত ভূখণ্ড রক্ষা এবং মালামাল পরিবহনে এ হ্রদ ব্যবহার করেছে। এর রয়েছে প্রায় পাঁচ শ’ বছরের ইতিহাস।
শ্রীলঙ্কার সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে রয়েছে বেইরা হ্রদের ভূমিকা। এর তীরে অনেক ঐকতানবাদন (কনসার্ট) অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং মঞ্চস্থ হয়েছে নাটক।
ধারণা করা হয়, ওলন্দাজ প্রকৌশলী ডি বিয়ারের নামানুসারে হ্রদটির নামকরণ করা হয়েছে বেইরা। কারো কারো মতে, পর্তুগিজ প্রকৌশলী বেইরার নামানুসারে হ্রদটির এরূপ নাম হয়েছে।
বেইরা হ্রদ একসময় জলাভূমি ছিল। এখানকার বন্যা ব্রিটিশ শাসন আমলে তাদের রক্ষীসেনা দুর্গের (গ্যারিসন) জন্য বৃহত্তর প্রতিরক্ষা হিসেবে কাজ করত। এ জলাভূমির মাঝ দিয়ে বয়ে যেত ছোট্ট কেলানি নদী। এ নদীর কারণেই জলাভূমি প্লাবিত হতো। আজকের দাম স্ট্রিট ওই নদীর ওপর গড়ে উঠেছে।
পর্তুগিজরাও তাদের দুর্গের সুরক্ষায় বেইরা হ্রদ ব্যবহার করেছে। তাদের দুর্গের অপর পাশে ছিল গড়খাই বা জলপ্লাবিত পরিখা। ওলন্দাজরা এ হ্রদে কুমির ছাড়ে। শত্রুর আক্রমণ কঠিন করতেই তারা এ কাজ করেছিল। ১৯০৪ সালে বেইরা হ্রদের আয়তন ছিল ১৬৫ হেক্টর। বর্তমানে এর আয়তন মাত্র ৬৫ হেক্টর। দখলদারদের কারণে দিনের পর দিন হ্রদটির আয়তন কমে এসেছে। শুষ্ক ঋতুগুলোয় আগে হ্রদের উপরিভাগে বেশি শ্যাওলা গজাত। মিথেন, হাইড্রোজেন, সালফাইড এবং অ্যামোনিয়া গ্যাসের সৃষ্টি হতো তলদেশে। এসব গ্যাস এবং এর সাথে জঞ্জাল, নর্দমা দিয়ে নিষ্কাশিত তরল পদার্থ গন্ধ ছড়াত।
গত শতকের (২০ শতক) শেষ দিকে দুই হাজারের বেশি ময়লা নির্গমনপথ নেমে এসেছিল এ হ্রদে। এ ছাড়া আবর্জনা ও ময়লা ফেলার আধার (ট্যাঙ্ক), দখলদারদের খোলা পায়খানা বিষিয়ে তুলেছিল হ্রদের পরিবেশ। অর্থাৎ হ্রদটি প্রায় আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছিল। বর্তমানে হ্রদের অবস্থা ভালো, নয়নাভিরাম।
কয়েক বছর আগে হ্রদটিকে আগের সুন্দর অবস্থায় ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। ফলে পাল্টে গেছে হ্রদের চেহারা। বর্তমানে এটি দুর্গন্ধ ছড়ায় না। এর সুন্দর দৃশ্য মানুষকে আকৃষ্ট করছে। সম্প্রতি হ্রদে একটি রজ্জু সেতু (ক্যাবল ব্রিজ) এবং আর্ট গ্যালারি প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। নৌকাবাইচ, উদ্যান, মাছ ধরার পাটাতন, রেস্তোরাঁ ইত্যাদি হ্রদ উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ। Ñওয়েবসাইট অবলম্বনে


আরো সংবাদ



premium cement