২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
কে কী কেন কিভাবে

ক্রা খ্রাইং বৃত্তান্ত

ক্রা খ্রাইং বৃত্তান্ত -

আজ তোমরা জানবে ক্রা খ্রাইং সম্পর্কে । এটি দেখা যায় পার্বত্য চট্টগ্রামে। একটা ক্রা খ্রাইংয়ে চার-পাঁচটা মুরগি রাখা যায়। লিখেছেন মৃত্যুঞ্জয় রায়
জানো, মারমা ভাষায় মুরগিকে বলা হয় ‘ক্রা’ আর খাঁচাকে বলা হয় ‘খ্রাইং’? ক্রা খ্রাইং মানে মুরগির খাঁচা।
পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রায় সব উপজাতির মানুষ মুরগি পালন করেন। আর সেখানকার পাহাড়ে প্রচুর বাঁশও জন্মে। তাই আদিবাসীরা সেসব বাঁশ দিয়ে আদিকাল থেকেই এক বিশেষ ধরনের খাঁচা তৈরি করে আসছেন, যাকে মারমা ভাষায় বলা হয় ‘ক্রা খ্রাইং’, টিপরা ভাষায় ‘তা কু’। তবে ক্রা খ্রাইং শুধু মোরগ-মুরগি রাখার জন্যই তারা ব্যবহার করেন না, তার ভেতরে খরগোশও পালন করেন।
পার্বত্য অঞ্চলে নানা রকম বুনো জন্তুর উপদ্রব বেশি। তাই অনেকেই মোরগ-মুরগি ঘরের বাইরে আলাদা কোনো ঘর তৈরি করে লালনপালন করতে ঝুঁকি মনে করেন। তা ছাড়া আদিকাল থেকে তাদের অনেকেই আধুনিক পদ্ধতিতে মুরগি পালনের ঘর বানাতে শেখেননি। তারা তাদের অনেকেই এখনো পূর্বপুরুষদের নিয়মই অনুসরণ করে আসছেন। তাই তারা স্থানান্তর বা বহনযোগ্য এমন এক ধরনের খাঁচা তৈরি করেন, যার ভেতরে মুরগি রেখে সেই খাঁচা নিজেদের ঘরের ভেতরে এনে রাতে রাখা যায়। এ খাঁচায় শুধু মুরগিই নয়, তারা খারগোশও পালন করেন।
উপজাতিদের এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলোÑ তারা জীবনধারণের জন্য যা প্রয়োজন তার প্রায় সবই নিজেরা তৈরি করতে পারেন বা উৎপাদন করেন। বাঁশের বেতি তুলে তারা নিজেরাই খাঁচা বা ক্রা খ্রাইং তৈরি করেন। বেতি বুনে শম্বুকাকারে ক্রা খ্রাইং তৈরি করা হয়। নিচের দিকটা থাকে প্রশস্ত। সে প্রান্তে একটা জায়গা চৌকা করে কেটে দরজার মতো বানানো হয়। বেতি দিয়ে বোনা খাঁচাটা হয় জালের মতো ফাঁকা। ক্রা খ্রাইংয়ে করে অনেক সময় বাজারে কয়েকটা মুরগি বেচতেও নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে খাঁচাসুদ্ধ মুরগি ঘরে রেখে সকালে আবার সেগুলো বের করে দেয়া হয়। একটা ক্রা খ্রাইংয়ে চার-পাঁচটা মুরগি রাখা যায়।


আরো সংবাদ



premium cement