১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

স্বামীর সাথে সম্পর্ক! গৃহকর্মীকে খুন করে লাশ ঝাউবনে ফেললেন গৃহকর্ত্রী

স্বামীর সাথে সম্পর্ক! গৃহকর্মীকে খুন করে লাশ ঝাউবনে ফেললেন গৃহকর্ত্রী - ছবি : সংগৃহীত

গৃহকর্তার সাথে সম্পর্ক রয়েছে এমন সন্দেহে গুলশানের নিকেতনে পারভীন ফেন্সি নামের এক গৃহকর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন গৃহকর্ত্রী। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গৃহকর্তা সৈয়দ জসীমুল হাসান (৬৩) ও গৃহকর্ত্রী সৈয়দা সামিনা হাসানকে (৬০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

শুক্রবার আসামিদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় হত্যায় ব্যবহৃত প্রাইভেটকার, একটি লাঠি ও বিছানার চাদর ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করে পিবিআই।

রোববার পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তরের বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর তুরাগ দিয়াবাড়ীর ঝাউবন এলাকা থেকে এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে তুরাগ থানা পুলিশ। ওই সংবাদের ভিত্তিতে পিবিআই’র ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদারের নির্দেশনায় ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) বিশেষ পুলিশ সুপার মো: জাহাঙ্গীর আলম পুলিশ পরিদর্শক (নি:) মোহাম্মাদ তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিমকে লাশ শনাক্তের জন্য ঘটনাস্থলে পাঠান। এর পর পিবিআই তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ওই নারীর নাম পরিচয় শনাক্তে সক্ষম হয়। তারা জানতে পারেন ওই নারীর নাম পারভীন ফেন্সি। পরে পিবিআই তদন্ত করে জানতে পারে ফেন্সি দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার বাসিন্দা রমজান আলীর মেয়ে। সংসারে অভাবের কারণে এক থেকে দেড় বছর আগে তিনি ঢাকায় আসেন। পরে তিনি গুলশানে নিকেতনের সৈয়দ জসীমুল হাসানের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেন।

তিনি আরো বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা যায়, ঘটনার দিন অর্থাৎ ১ ডিসেম্বর সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে ফেন্সির সাথে ঝগড়া হয় গৃহকর্ত্রী সৈয়দা সামিনা হাসানের। একপর্যায়ে গৃহকর্মী সামিনা হাসান তাকে (ফেন্সি) লাঠি দিয়ে বেদম প্রেহার করেন। এতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ফেন্সি। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলেই ফেন্সির মৃত্যু হলে গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী পরামর্শ করে লাশ গোপনের জন্য ড্রাইভার রমজান আলীর (৪১) সহায়তা নেন। পরে গাড়িতে করে লাশটি তুরাগ এলাকার দিয়াবাড়ীর ঝাউবনে ফেলে আসেন।

ঘটনার তদন্তের সময় আরো জানা যায়, ভিকটিম ফেন্সির স্বামী মোমিনুল ঢাকা শহরে রিকশা চালাতেন। ফেন্সি ওই বাসায় কাজ নেয়ার পর থেকে তিনি তার স্ত্রীর সাথে দেখা করার সুযোগ পেতেন না। এর আগে গৃহকর্ত্রী নির্যাতনের কথা জানালে স্বামী মোমিনুল গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেন। এক দিন ওই বাসায় গিয়ে স্ত্রীর সাথে দেখা করে আসেন। কিন্তু এরপর আর কোনো দিন দেখা করতে পারেননি। পরে তিনি গ্রামের বাড়ি চলে যান।

জিজ্ঞাসাবাদে মোমিনুল আরো জানান, তার স্ত্রী ওই বাসায় কাজ নেয়ার পর থেকে গৃহকর্তা জসীমুল হাসান প্রতি মাসে বিকাশের মাধ্যমে তার মোবাইলে ১ হাজার টাকা করে পাঠাতেন। কিন্তু তার সাথে দেখা সাক্ষাৎ করতে দিতেন না। ওই ঘটনায় ভিকটিম ফেন্সির স্বামী মোমিনুল ইসলাম তুরাগ থানায় মামলা দায়ের করেন।

এছাড়া পিবিআই’র জোর প্রচেষ্টায় ঘটনার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তরুণীর লাশ শনাক্ত ও মূল আসামি গ্রেফতার এবং আলামত উদ্ধার সম্ভব হয়। আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে বলেও জানান পিবিআই’র এই কর্মকর্তা।


আরো সংবাদ



premium cement