আনোয়ার হত্যা মামলায় দু’জন ৩ দিনের রিমান্ডে

বাংলাদেশ গম গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আনোয়ার শাহীদ হত্যা মামলায় দু’জনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, জাকির হোসেন ও সাইফুল ইসলাম।

এর আগে সোমবার তাদেরকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার উপ-পরিদর্শক (নিরস্ত্র) সানাউল হক তাদের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিট ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম তাদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রাজধানীর শ্যামলীতে পাওনা ১২ লাখ টাকা ফেরত ও জমি আত্মসাত করার উদ্দেশ্যে গম গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আনোয়ার শহীদকে (৭২) পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয় বলে জানিয়েছে এলিট ফোর্স র‌্যাব।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি জানান, রোববার রাজধানীর গাবতলী থেকে এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে মো: জাকির হোসেন (৩৭) ও তার সহযোগী মো: সাইফুলকে (২৬) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন জাকির হোসেন।

গ্রেফতারকৃত জাকির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাবকে জানান, আনোয়ার শহীদ দিনাজপুর শহরে কর্মরত থাকা অবস্থায় তার সাথে পরিচয় হয়। পরবর্তীতে তার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠে। আনোয়ার শহীদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে জাকির ১২ লাখ টাকা ধার হিসেবে নেন।

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী জাকির হোসেনের সাথে দীর্ঘ দিনের পরিচয়ের সূত্র ধরে তাকে টাকা ধার দিয়েছিলেন নিহত শহীদ আনোয়ার (৭২)।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আনোয়ার শহীদের গ্রামের বাড়ি নীলফামারী জেলার ডোমারে। অবসরের পর অবসরের পর পেনশনের টাকা থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে তিনি দিনাজপুর জেলায় একটি জমি কিনে বাড়ি তৈরি করে ভাড়া দেন। তিনি ১৯৯০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত দিনাজপুরে কর্মরত ছিলেন। সেখানেই তার সাথে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী জাকির হোসেনের পরিচয় হয়।

র‌্যাবের মুখপাত্র আরো বলেন, আনোয়ারকে হত্যার উদ্দেশ্যে জাকির ও সাইফুল ১১ নভেম্বর সকালে দিনাজপুর থেকে ঢাকায় আসেন। তারা কল্যাণপুর এলাকায় একটি আবাসিক হোটেলে ওঠেন। পরে জাকির আনোয়ারকে হলিলেন গলিতে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই ওঁত পেতে ছিলেন সাইফুল। গলিতে যাওয়ার পরই সাইফুলকে চোখের ইশারা দিয়ে আনোয়ারকে দেখিয়ে দেয়। এরপর সাইফুল তাকে ছুরিকাঘাত করে। ছুরিকাঘাতের পর জাকির প্রথমে আনোয়ারকে ধরে মাটিতে শুয়ে দেয় এবং পথচারীরা এগিয়ে এলে তিনি সটকে পড়েন। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

হত্যাকাণ্ডের পর সাইফুল ও জাকির রাতেই দিনাজপুর চলে যান।

এ ঘটনায় নিহত আনোয়ারের ছোট বোন ফেরদৌস সুলতানা (৫৯) আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।