পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা : অমির ৯ সহযোগী গ্রেফতার
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২২ জুন ২০২১, ১৭:৩০
ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত চিত্রনায়িকা পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলার অন্যতম আসামি তুহিন সিদ্দিকী অমির নয়জন সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অমির মালিকানাধীন জনশক্তি রফতানির কার্যালয় থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি দফতরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ওমর ফারুক।
গ্রেফতাকৃতরা হলেন অমির ঘনিষ্ঠ জসিম উদ্দিন (৩৬), অমির গাড়িচালক সালাউদ্দিন (৩৫), অমির শ্যালক রাকিবুল ইসলাম রানা (৩৪), মো: মুসা (২৬), গোলাপ হোসেন বুলবুল (৩৪), জাকির হোসেন (৩৪), মো: নাজমুল (২৫), মো: আলম (৩৫) ও শাহজাহান সরকার (৪৩)।
গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে ব্রিফকালে ওমর ফারুক বলেন, শাহীন আলম নামের এক ব্যক্তির দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্তরা বিদেশগামী সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করতেন। বিভিন্ন দেশের পাঠানোর নাম করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলেও জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সিআইডির এলআইসি শাখার একটি দল ও ঢাকা মেট্রো উত্তর দল-১ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
সিআইডি কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তিদের কাছ থেকে ৩৯৫টি পাসপোর্ট, ২২টি কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক, সম্পত্তির দলিল, ক্রেডিট কার্ড, অলিখিত স্টাম্প, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ভিসা কার্ড, পেনড্রাইভ, মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়েছে।
তুহিন সিদ্দীক অমি আশকোনার আয়াত আরাফাত ট্রাভেল ট্যুর সার্ভিসের কর্ণধার। তিনি ‘সিঙ্গাপুর ট্রেইনিং সেন্টার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানও পরিচালনা করতেন। বিদেশে কর্মী পাঠানোর নামে প্রতারণার অভিযোগে গত ১৭ জুন দক্ষিণখান থানায় শাহীন আলম নামে এক ব্যক্তি ওই মামলাটি দায়ের করেন।
সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ওমর ফারুক বলেন, গ্রেফতারকৃতরা শাহীন আলমসহ শত শত লোকজনকে ভালো বেতনে বিদেশে ভালো চাকরির লোভ দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করেছেন। এই মানবপাচারকারী চক্র ভিকটিমদের প্রতিশ্রুত চাকরি না দিয়ে বিভিন্ন দেশে পাচার করে। এ ছাড়া আরো অনেককে দুবাই, মালেয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে পাঠানোর কথা বলে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে বিদেশ পাঠানোর ফলে অনেকে সেখানে গিয়ে কোনো প্রকার কাজ করতে পারছে না বলে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছ থেকে জানা গেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়।
এর আগে গত ১৮ জুন আব্দুল কাদের নামের এক ব্যক্তি মানবপাচার আইনে মামলা করার পর অমির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে তিনটি গাড়ি ও ১৯টি হার্ডডিস্ক জব্দ করে সিআইডি পুলিশ। এ ছাড়া গত ১৫ জুন দক্ষিণখান থানা এলাকায় অমির একটি অফিস থেকে ১০২টি পাসপোর্ট ও ১৭ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। এতগুলো পাসপোর্ট রাখায় অমির বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইনেও দক্ষিণখান থানায় মামলা হয়েছে।
এর আগে ১৪ জুন অমি গ্রেফতার হন চিত্রনায়িকা পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলায়। ওই দিনই নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও অমিসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন পরী। তার অভিযোগ, ৮ জুন রাতে অমি তাকে ‘পরিকল্পিতভাবে’ উত্তরা বোট ক্লাবে নিয়ে যান। সেখানে তাকে ‘ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা’ চালান ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ। মামলা দায়েরের পর উত্তরায় অমির বাসা থেকে উত্তরা বোট ক্লাবের বহিষ্কৃত সদস্য নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তখন অমির বাসা থেকে মদ ও ইয়াবা উদ্ধারের কথা জানায় গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তাদের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মাদকের মামলা করা হয়। অমি ও নাসির দু’জনেই এই মামলায় রিমান্ডে রয়েছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা