২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মানবপাচার : ৬ সহযোগীসহ নদী ৪ দিনের রিমান্ডে

মানবপাচার : ৬ সহযোগীসহ নদী ৪ দিনের রিমান্ডে - ছবি- সংগৃহীত

মানবপাচারের অভিযোগে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রের ‘মূল হোতা’ নদী আক্তার ইতি ও তার ছয় সহযোগীকে চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম মাহমুদা আক্তার এই রিমান্ড আদেশ দেন।

পরে এ তথ্য গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার ওমেদার মোহাম্মদ সরোয়ার। তিনি বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ১০ দিন করে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের বিচারক চার দিন করে তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সম্প্রতি ভারতে বিবস্ত্র করে বাংলাদেশী তরুণীকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। পরে রাজধানীর হাতিরঝিল থানা পুলিশ ভুক্তভোগীর পরিচয় বের করে ও নির্যাতনে জড়িত বাংলাদেশী তরুণ হৃদয় বাবু ওরফে টিকটক বাবুকে শনাক্ত করে। এরপর থেকেই বেরিয়ে আসে ভারতে নারী পাচারের ঘটনাগুলো। এ সময় উঠে আসে নদী ওরফে জয়ার নামও।

হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, সিনথিয়া নামের এক নারী শনিবার মানবপাচারের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। এতে নদীসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়। মামলার পর সোমবার যশোর ও নড়াইলে অভিযান চালিয়ে নদীসহ সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ বলছে, হাতিরঝিল থানার দু’টি মামলায় নদীর বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে। তিনি হৃদয় বাবুর ঘনিষ্ঠ।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁও ডিসি কার্যালয়ে তেজগাঁও বিভাগের পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো: শহিদুল্লাহ বলেন, আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্রের অন্যতম সদস্য নদী আক্তার ইতি তিনটি দেশে নারী পাচার করতেন। তিনি মূলত ওই দেশগুলোতে নারী পাচারের সমন্বয় হিসেবে কাজ করতেন। আর পাচারের কৌশল হিসেবে তিনি বিভিন্ন সময় ১০টি নাম ব্যবহার করেছেন।

সোমবার নদীসহ মানবপাচার চক্রের গ্রেফতার অন্যরা হলেন আল আমিন হোসেন (২৮), সাইফুল ইসলাম (২৮), আমিরুল ইসলাম (৩০), পলক মন্ডল (২৬), তরিকুল ইসলাম (২৬) ও বিনাশ শিকদার (৩৩)।


মো: শহিদুল্লাহ বলেন, পাচারের উদ্দেশে আনা মেয়েদের যশোর সীমান্তে বিভিন্ন বাড়িতে রেখে সুযোগমতো ভারতে পাচার করত চক্রটি। পাচারকরা প্রত্যেক মেয়ের জন্য স্থানীয় এক ইউপি সদস্য এক হাজার টাকা করে নেন। পাচারকালে কোনো মেয়ে বিজিবির কাছে আটক হলে সেই ইউপি সদস্য তাকে আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে আসতেন।

তিনি বলেন, ২০০৫ সালে শীর্ষ সন্ত্রাসী রাজীব হোসেনের সাথে নদীর বিয়ে হয়। ২০১৫ সালে রাজীব বন্দুকযুদ্ধে মারা যান। এরপর থেকেই নদী পাচার চক্রের সাথে জড়িয়ে পড়েন। পাচার করা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে নদীর ১০টির মতো নাম পাওয়া যায়। ভারত, মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ের নারী পাচার চক্রের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করেন নদী।

ডিসি শহিদুল্লাহ আরো বলেন, পাচার নারীদের কাছে তিনি নদী হিসেবে পরিচয় দিলেও ভারতে তাকে সবাই ইতি নামে চেনে। ভারতীয় আধার কার্ডে তার নাম জয়া আক্তার জান্নাত। বাংলাদেশী পাসপোর্টে তার নাম নুর জাহান। সাতক্ষীরা সীমান্তে তার নাম জলি, যশোর সীমান্তে তিনি প্রীতি নামে পরিচিত।

ভারতে বাংলাদেশী এক নারীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে ওই ভিডিওর সাথে নদীর সম্পৃক্ততা কতটুকু? এ বিষয়ে তেজগাঁও ডিসি বলেন, টিকটক হৃদয়ের সাথে যেহেতু নদীর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে সেহেতু ওই ভিডিওর সাথেও নদীর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল