২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভালোবাসার লাল-সবুজ জার্সি

ভালোবাসার লাল-সবুজ জার্সি - ছবি : সংগৃহীত

পাড়ার মোড়ের চায়ের দোকানে কাজ করা ছেলেটাও অপেক্ষার প্রহর গুনে, আবার বড়লোক বাবার বিগড়ে যাওয়া বেখেয়ালি ছেলেটাও দিনে বেশ ক’বার অনলাইনে খুঁজে ফিরে। মধ্যবিত্ত ঘরের হিসাবি ছেলেটাও টিফিনের পয়সা জমিয়ে রেখেছে। ব্যাংকার বাবাও কলিগদের প্রতিদিন জিজ্ঞাসা করে, রিকশাওয়ালা চাচাও প্রতিদিন ফুটপাতের ওই জার্সি দোকানটার সামনে গিয়ে তাকিয়ে থাকে।

সেলিম মিয়া কারখানা ম্যানেজারকে বলে রেখেছেন, জার্সির অর্ডার আসলে একটা জার্সি যেন তার জন্য রাখেন। রহিমা বেগম মালকিনকে এই মাসের বেতনটা আগে আগেই দিয়ে দিতে আর্জি করেছেন। ছেলে তার জার্সির বায়না ধরেছে। এদিকে মালকিনও স্বামীকে বলে রেখেছে দুই বাচ্চার জন্যেই নতুন জার্সি চাই বিশ্বকাপে।

প্রায় প্রতিটি পরিবারের চিত্র এখন এইটা। সবাই এখন আছে একই ঘোরে, একই স্বপ্নে বিভোর হয়ে। বিশ্বকাপ যখন নাকের ডগায়, তখন তো স্বাভাবিক এমনটা হওয়াই। দু মুঠো ভাত কম খাই, তবুও এখন জার্সি চাই। প্রেমিকা তার প্রেমিকের জন্যে, প্রেমিক তাদের দুজনেরই জন্যে; সবাই এখন হন্যে হয়ে জার্সির খুঁজে।

লাল-সবুজ জার্সিটা তো শুধুই একটা পোষাক নয়, জার্সিটা কোটি বাঙালীর পরিচয়। ইতিহাস, ঐতিহ্য, আবেগ, ভালোবাসা; সবই আছে এখানে লাল সবুজ সুতোয় গাঁথা। জাত-ধর্ম-বর্ণ উর্দ্ধে রেখে, শ্রেণী বৈষম্যতার বিভেদ ভুলে প্রায় প্রতিটি মানুষের ইচ্ছেগুলো এই একটা জায়গায় এসে মিলে যায়, মিশে যায়; লাল-সবুজের জার্সিটা সবাই গায়ে জড়াতে চায়।

সাকিব সেদিন বলেছিলেন, জার্সির পেছনে থাকা নিজের নাম নয়; বুকে লেখা থাকা দেশের নামের জন্যই মাঠে নামেন তারা। এই আবেগটা শুধু সাকিবের নয়, গোটা বাংলাদেশই তো এই জার্সিতে সুখ খুঁজে। ফলেই তো বুকে দেশের নাম না পেয়ে, প্রতিবাদের জোয়ার উঠে।

যাহোক, বিশ্বকাপকে সামনে রেখে দলগুলো নিজেদের জার্সি উন্মোচন করতে শুরু করেছে। নানা রঙে, নানান ডঙে, বিচিত্র সব সাজে, বৈচিত্রময় ডিজাইনে মন মুগ্ধকর সব জার্সি উপহার দিচ্ছে দলগুলো। তবে এখনো বাংলাদেশের জার্সি প্রকাশ পায়নি কোনখানে। ফলে হন্যে হয়ে সবাই অপেক্ষায় আছে, কবে প্রিয় জার্সিটা প্রকাশ্যে আসবে। গায়ে জড়িয়ে সুখ নিবে।


আরো সংবাদ



premium cement