২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বাবরের শতকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের ১০ উইকেটের জয়

জয়ের পর উদযাপনে ওপেনিং জুটি; বাবর-রিজওয়ান - ছবি : সংগৃহীত

সফলতার থেকে বড় প্রতিশোধ আর কী হতে পারে? ববর আজমও হয়তো তা ভেবেই শান্ত রেখেছেন নিজেকে। কতো বিদ্রুপ, কতো টিপ্পনী, কতো সমালোচনা; সোশাল মিডিয়া থেকে সাবেকরা, কতো জনের কতো কথা। সব সমালোচনার জবাব যেন শতকেই দিয়ে দিলেন বাবর। যেন বললেন, আমি মাইক্রোফোনে নয়, মাঠে কথা বলি।

বৃহস্পতিবার বাবর-রিজওয়ান রেকর্ড জুটিতে ক্ষত-বিক্ষত ইংল্যান্ড। নিজেদের সর্বোচ্চ ১৯৭* রানের জুটি ভেঙে, নতুন জুটি গড়লেন আজ ২০৩ রানে! দুজনের অবিচ্ছেদ্য ২০৩ রানের জুটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে পাকিস্তান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসের পঞ্চম সর্বোচ্চ জুটি এটি। আবার বাবর-রিজওয়ানও জুটি করে ১৫০-এর বেশি রান করেছেন এই পাঁচ বার। যা তাদের থেকে বেশি নেই আর কারো। অথচ আগে ব্যাট করে ১৯৯ রান তুলে ইংল্যান্ড জয়ের সুবাসই পাচ্ছিলো।

যাহোক, প্রথম ম্যাচে রান তাড়া করে বড় জয় পেলেও এদিন করাচিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ইংলিশ অধিনায়ক মইন আলী। একাদশে এক পরিবর্তন নিয়ে আসে ইংল্যান্ড। রিচার্ড গ্লেসনের পরিবর্তে একাদশে যোগ হয় লিয়াম ডসনের নাম। পাকিস্তানও মাঠে নামে এক পরিবর্তন নিয়ে। নাসিম শাহের পরিবর্তে একাদশে ফিরেন মোহাম্মদ হাসনাইন।

ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু করে ইংল্যান্ড। পাওয়ার প্লের পাঁচ ওভারেই তোলে ফেলে ৪২ রান। তবে ষষ্ঠ ওভারে প্রথম দুই বলে দাহানির জোড়া শিকারে পরিণত হন এলেক্স হেলস ও ডেভিড মালান। এলেক্স হেলস ২১ বলে ২৬ করলেও, মালান ফিরেন প্রথম বলেই, কোনো রান না করেই। তবে জোড়া আঘাতে ভীত না হয়ে ইংলেন্ডে শুরু করে পাল্টা আক্রমণ। ফলশ্রুতিতে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ১০ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৮০ রান।

১২তম ওভারে হারিস রউফের শিকার হয়ে ২৭ বলে ৩০ রান করে সাজঘরে ফিরেন ফিলিপ সল্ট। ২২ বলে ৪৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলা বেন ডাকেট ফিরেন পরের ওভারেই, নাওয়াজের শিকার হয়ে। পরের অধ্যায় জুড়ে শুধুই মইন আলী। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তিনিই কি সব থেকে আন্ডাররেটেট চরিত্র, প্রশ্নটা যেন আবার তুলে দিলেন তিনিই! আরেকটা প্রশ্নও করা যেতে পারে, এমন ছিপছিপে শরীর নিয়েও এতো বিশাল ছক্কা কি করে মারেন তিনি?

তাকে শেষ পর্যন্ত আউট করতে পারেনি পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত সমান চারটি করে চার-ছয়ে ২৩ বলে করেন অপরাজিত ৫৫ রান। অধিনায়কের এমন ব্যাটিংয়ে দলও পায় পাহাড়সম ১৯৯ রানের সংগ্রহ। মাঝে ১৯ বলে ৩১ রান করে হ্যারি ব্রক। পাকিস্তানি বোলারদের শিকার করা ৫টি উইকেটের ৫টিই ছিলো বোল্ড আউট। নাসিম শাহর বদলি সুযোগ পাওয়া মোহাম্মদ হাসনাইন ৫১ রান দিয়ে থাকেন উইকেটবিহীন।

বড় রান তাড়া করতে নেমে শুরু হতেই আগ্রাসী দুই ওপেনার। আগের ম্যাচে যেখান থেকে ফিরেছিলেন দুজনে, সেখান থেকেই যেন শুরু করলেন আজ। তবে আগের থেকেও আরও তেজস্বী, আরো ধারালো। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারেই স্কোরবোর্ডে তুলেছেন ৫৯ রান। বাবর আজম স্বভাবসুলভ, এককাঠি সরেস রিজওয়ান। যেন লড়াইয়ে নেমেছেন, কে কাকে ছাড়িয়ে আগে যেতে পারেন!

শুরুতে রিজওয়ান থেকে খানিকটা পিছিয়ে থাকলেও সময়ের সাথে সাথে পাক অধিনায়ক ছাড়িয়ে যান তাকে। ৬২ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ১১ চার আর পাঁচ ছয়ে ৬৬ বলে ১১০ রানে৷ তবে শেষে এসে সব আলো কেড়ে নিলেও পাকিস্তানের জয়ের পথের প্রথম দিশারী রিজওয়ান ৫ চার আর ৪ ছক্কায় ৫১ বলে ৮৮ রানে অপরাজিত ইনিংস। একটি উইকেটও নিতে পারেনি ইংল্যান্ডের কোনো বোলার।


আরো সংবাদ



premium cement