২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

‘ভীতু’ কোহলিদের হারিয়ে দারুণ জয় সাহসী রুট, বেয়ারস্টোদের

‘ভীতু’ কোহলিদের হারিয়ে দারুণ জয় সাহসী রুট, বেয়ারস্টোদের - ছবি : সংগ্রহ

হার বাঁচাতে পারল না যশপ্রীত বুমরার ভারত। মঙ্গলবার এজবাস্টন টেস্টে ইংল্যান্ডের জিতল ৭ উইকেটে। চতুর্থ দিনে যেখানে শেষ করেছিলেন, পঞ্চম দিন সকালে সেখান থেকেই শুরু করেন দুই অপরাজিত ব্যাটার জো রুট এবং জনি বেয়ারস্টো। এক দিনের মেজাজে ব্যাট করে মধ্যহ্নভোজের বিরতির আগেই প্রয়োজনীয় ১১৯ রান তুলে নিলেন তারা। ৩ উইকেট হারিয়েই ৩৭৮ রান তুলে নিলো ইংল্যান্ড।

দৃশ্যত অতিরিক্ত রক্ষণাত্মক হতে গিয়েই সিরিজ জেতা হলো না ভারতের। ম্যাচের শেষ সকালেও ভারত তেমন আগ্রাসী বোলিংয়ের পথে হাঁটল না। বুমরা ফিল্ডিংও সাজান কিছুটা সাবধানী হয়ে। ইংল্যান্ডের ব্যাটারদের আউট করার থেকেও রান তোলার গতি কমানোই যেন লক্ষ্য ছিল ভারতীয় দলের। ফলে শেষ দিনে একটা উইকেটও তুলতে পারল না ভারতীয় দল। বরং সাহসী ব্যাটিং করলেন রুটরা। অনেকটা নেটে ব্যাটিংয়ের মেজাজেই ম্যাচ শেষ করে দিলেন তারা।

টেস্টে নিজের ২৮তম শতরানও তুলেন নিলেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক। টেস্ট শতরানের সংখ্যায় টপকে গেলেন বিরাট কোহলিকে। রুট অপরাজিত থাকলেন ১৪২ রান করে। বেয়ারস্টোর ব্যাট থেকেও এল অনবদ্য শতরানের ইনিংস। টেস্টে ১১তম শতরান করে শেষ পর্যন্ত ১১৪ রানে অপরাজিত থাকলেন তিনি। ১০৯ রানে ৩ উইকেট পড়ার পর ইংল্যান্ডের ইনিংসের হাল ধরেন রুট এবং বেয়ারস্টো। তাদের জুটি ভাঙতেই হিমশিম খেলেন ভারতীয় বোলাররা। তাদের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে উঠল ২৬৯ রান। বেয়ারস্টো সোমবার সুযোগ দিলেও কাজে লাগাতে পারেননি কোহলীরা। শেষ পর্যন্ত দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়লেন রুট, বেয়ারস্টো।

চতুর্থ দিনের খেলা দেখে ভারতীয় দলের রণনীতিকে ভীতুর মতো বলেছিলেন রবি শাস্ত্রী। ধারাভাষ্য দেয়া প্রাক্তন কোচের টোটকাও সাহসী করতে পারল না রাহুল দ্রাবিড়ের ছেলেদের। ক্রিকেট জীবনে দ্রাবিড় যেমন রক্ষণাত্মক মানসিকতা নিয়ে ব্যাট করতেন, সেই মানসিকতাই কি তিনি ঢুকিয়ে দিলেন বুমরা, কোহলিদের মজ্জায়? প্রশ্ন উঠতে পারে। বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু তাতে বদলাবে না এজবাস্টন টেস্টে সুবিধাজনক জায়গায় থেকেও ভারতের পরাজয়ের গ্লানি।

ভারতের কোনো বোলারই ইংরেজদের তেমন বিব্রত করতে পারলেন না। রুট, বেয়ারস্টো স্বচ্ছন্দে ব্যাটিং করলেন। তাদের চোখে-মুখেও কোনো উদ্বেগের ছাপ ছিল না। রোদ ঝলমলে সকালে বুমরাদের বল তেমন সুইং করল না। করলে ম্যাচের ফল সুইং করত কি না বলা কঠিন। কিন্তু রুটদের সামনে চ্যালেঞ্জিং প্রশ্নপত্রও মেলে ধরতে পারল না ভারতীয় দল। পারল না ম্যাচ বাঁচাতে। পারল না সিরিজ জিততে।

অথচ এই ভারতই প্রথম ইনিংসে ৯৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় চলে গিয়েছিল। ঋষভ পন্থের ডাকাবুকো ব্যাটিং এবং রবীন্দ্র জাডেজার দায়িত্বশীল ইনিংস বুমরাদের উদ্ধার করে। আগ্রাসী বোলিং করে প্রথম ইনিংসে ১৩২ রানে এগিয়েও যায় ভারত। কিন্তু বাকি ম্যাচে সেই সাহসী, পরিণত ক্রিকেট আর দেখা গেল না। সুবিধাজনক জায়গায় থেকেও এভাবে পরাজয় পরে ভাবলে হয়তো বিশ্বাস করতে পারবেন না বুমরা, কোহলীরাও। সাহসের অভাব না অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস- কী কারণে অধরা থাকল সিরিজ জয়, তার কাটাছেঁড়া করতেই পারেন দ্রাবিড়রা।

আসল কথাটা চতুর্থ দিনের খেলার শেষেই বলে দিয়েছেন ভারতের ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠৌর। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং- কিছুই প্রত্যাশা মতো করতে পারেনি বুমরার দল। যে সিরিজে অধিনায়ক কোহলি ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে রেখেছিলেন, সেই সিরিজই তার চোখের সামনে হাতছাড়া হলো।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


আরো সংবাদ



premium cement