২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

মাহমুদউল্লাহ-সাকিবের ব্যাটে চ্যালেঞ্জিং স্কোর বাংলাদেশের

টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ষষ্ঠ ফিফটি করেছেন মাহমুদউল্লাহ। - ছবি : সংগৃহীত

অবশেষে দেখা মিলল টপ অর্ডার ব্যাটারদের ব্যাটে রান। বিশ্বকাপে ডু অর ডাই ম্যাচে বাংলাদেশ পেল চ্যালেঞ্জিং স্কোর। বৃহস্পতিবার ওমানের আল আমেরাত স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮১ রান করেছে বাংলাদেশ।

জয়ের জন্য পাপুয়া নিউগিনির দরকার ১৮২ রান। এত রান তাড়া করে দলটি জিতবে, তা অনেকটাই অসম্ভব। বরং নেট রান রেট এগিয়ে থাকার জন্য বড় ব্যবধানে জেতার চেষ্টা করবে বাংলাদেশ। যত কম রানে প্রতিপক্ষকে আটকে রাখা যায়, সেই পথেই হাঁটবে টাইগাররা।

টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই বিদায় নেন আগের ম্যাচে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মোহাম্মদ নাঈম শেখ। ইনিংসের প্রথম বলেই হতে পারত ক্যাচ। কিন্তু হয়নি। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে পড়ল উইকেটরক্ষকের একটু সামনে। পরের বলেই ক্যাচ গেল ফিল্ডারের হাতে। ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

কাবুয়া মোরেয়ার লেগ স্টাম্পের বাইরের হাফ ভলি অনায়াসেই হতে পারতো ছক্কা। বাঁহাতি ওপেনার নাঈমের ফ্লিক খুঁজে পেল ডিপ স্কয়ার লেগে থাকা সেসে বাসকে। বেশ কিছুটা দৌড়ে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ মুঠোয় জমান তিনি। রানের খাতা খুলার আগেই সাজঘরে নাঈম।

আগের ম্যাচের তুলনায় এই ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে ৩০ এর বেশি রান তুলতে পেরেছে বাংলাদেশ। যা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো। ৬ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ১ উইকেটে ৪৫। যদিও পাওয়ার প্লেতে এসেছে দুই ছক্কা ও একটি চার। আশার কথা, ডট বল হয়েছে কম আগের তুলানায়।

দলীয় ৫০ রান যখন, তখন বিদায় নেন লিটন দাস। আগের তুলনায় এবার রানের দেখা পেয়ছেন তিনি। যদিও থিতু হতে পেরেছিলেন। কিন্তু ইনিংস বড় হয়নি। স্লগ সুইপে ছক্কার চেষ্টায় ফিরে যান এই ডান হাতি ওপেনার।

পাপুয়া অধিনায়ক আসাদ ভালার প্রথম বলটি ছিল অফ স্টাম্পের একটু বাইরে। শাফল করে স্লগ সুইপ করেন লিটন। ঠিক মতো টাইমিং করতে পারেননি তিনি। ২০ গজ দৌড়ে এসে চমৎকার স্লাইডিং ক্যাচ মুঠোয় জমান সেসে বাউ। ভাঙে ৪১ বল স্থায়ী ৫০ রানের জুটি। ২৩ বলে একটি করে ছক্কা ও চারে ২৯ রান করেন লিটন।

ক্রিজে সাকিবের সাথে তখন যোগ দেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। এবারো ব্যর্থ এই পকেট ডায়নামো। হাঁটলেন পিছন পথে। মন্থর শর্ট বল, লেগ সাইটে পাঠানো সম্ভব যে কোনো জায়গায়। হাতে সময় ছিল অঢেল। মুশফিকুর রহিম তুলে দিলেন ডিপ স্কয়ার লেগ ফিল্ডারের হাতে! দ্বিতীয় চেষ্টায় ক্যাচ মুঠোয় জমান হিরি হিরি। ৮ বলে ৫ রান সম্বল মুশফিকের। ১১ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর তখন ৩ উইকেটে ৭৭। ক্রিজে সাকিব আল হাসানের সঙ্গী অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।

আগের ম্যাচের মতোই এবারও ফিফটির পথে হাঁটছিলেন সাকিব। কিন্তু অপূর্ণতা থেকে যায়। দেখা মেলেনি পঞ্চাশের। একটি ছক্কা হাকানোর পরই ধরা পড়লেন তিনি। লং অনে একটু এগিয়ে সামনের দিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত ক্যাচ মুঠোয় জমান চার্লস আমিনি। ব্যক্তিগত ৪৬ রানে থামেন সাকিব। ৩৭ বলের ইনিংসে তিনি হাঁকাতে পারেননি কোনো চার। তবে তার ইনিংসে ছিল তিনটি ছক্কার মার।

সাকিব না পারলেও পেরেছেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সবাই যেখানে খেলেছেন ওয়ানডে কিংবা টেস্ট স্টাইলে তিনি ছিলেন সত্যিকারের টি-টোয়েন্টি ফেরিওয়ালা। ভেতরের ক্ষোভ যেন তিনি ঝেড়ে ফেলেছেন ব্যাটে। খেলেছেন মনোমুগ্ধকর ঝড়ো ইনিংস। বরাবর ৫০ রান করে তিনি ফেরেন সাজঘরে। বল খরচ করেছেন মাত্র ২৮টি। তিনটি করে সমান চার ও ছক্কা ছিল তার ইনিংসে। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে মাহমুদউল্লাহর এটি ষষ্ঠ ফিফটি।

তার এই ইনিংসের সুবাদেই বলতে গেলে বড় স্কোর গড়তে পারে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত রভুর বলে সোপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন টাইগার ক্যাপ্টেন। বাংলাদেশের স্কোর তখন ১৭.২ ওভারে ১৪৪ রান।

শেষের দিকে আফিফের ব্যাটে ছিল ছোট্ট ঝড়। ১৪ বলে তিনি করেন ২১ রান। তার ইনিংসে ছিল তিনটি চারের মার। তবে নুরুল হাসেন সোহান মারেন গোল্ডেন ডাক। শেষের দিকে সাইফউদ্দিন ছিলেন আরো মারমুখি। মাত্র ৬ বলে তিনি খেলেন ১৯ রানের মারকাটারি ইনিংস। হাঁকান একটি চার ও দুটি ছক্কা। ৩ বলে দুই রানে অপরাজিত থাকেন মেহেদী হাসান।

বাংলাদেশ স্কোয়াড
লিটন কুমার দাস, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান (উইকেটরক্ষক), শেখ মেহেদি হাসান, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ।


আরো সংবাদ



premium cement