২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

মুশফিকের ভাগাভাগি কিপিং নিয়ে যা বললেন মাশরাফি

মুশফিকের ভাগাভাগি কিপিং নিয়ে যা বললেন মাশরাফি -

এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের ক্রিকেটে আগে হয়েছে কিনা, তা গবেষণার বিষয়। কিন্তু কোচ ডমিঙ্গা তাই করে দেখালেন। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে কিপিং ভাগাভাগি করবেন মুশফিক ও সোহান।

কিন্তু এমন সিদ্ধান্ত মনপুত হয়নি বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার। তার মতে, এই চর্চার অভ্যাসটা অসুস্থ। দুজনের সামর্থ্যকেই প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে।

সব শেষ দুটি সিরিজে ছিলেন না মুশফিক। তার বদলে দলে ঢুকে নয়নকাড়া পারফরম্যান্স দেখান সোহান। তার রেশ ধরে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজে দেখা মিলল নতুন সিদ্ধান্তের। ডমিঙ্গা গতকাল জানালেন, প্রথম দুই ম্যাচে কিপিং করবেন সোহান, পরের দুটিতে মুশফিক। পঞ্চম ম্যাচে কে করবেন, তা চতুর্থ ম্যাচের পর ঠিক করা হবে।

এমন হাস্যকর সিদ্ধান্তে নিজের মতামত ফেসবুকে পোস্ট করেছেন মাশরাফি। সোমবার রাতে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক পাতায় লম্বা একটি লেখায় নিজের ভাবনা জানান মাশরাফি।

তিনি লিখিছেন, ‘১৬ বছর যে মানুষটা বাংলাদেশ ক্রিকেটকে সার্ভিস দিচ্ছে, তাকে নিয়ে মন্তব্য করার আগে আপনি যত বড় ক্ষমতাধর মানুষ হোন না কেন, একটু জায়গা বুঝে বলা উচিত। মুশফিক কিভাবে জাতীয় দলে এসেছে, তা সবাই জানে। সিম্পিলি তার ব্যাটিং দক্ষতা।’

‘একটা সময় পর্যন্ত বিশ্ব ক্রিকেটে শুধু কিপার হিসাবেই খেলা যেত, উদাহরণ ভুরি ভুরি। কিন্তু গিলক্রিস্ট আসার পর সব হিসাব পাল্টে যায়, যার সূত্র ধরে ইন্ডিয়া টিমে দেখেছি রাহুল দ্রাবিড় কেও কিপিং করতে, যাতে দল সুবিধা মতো এক্সট্রা একজন ব্যাটসম্যান বা বোলার খেলাতে পারে। অবশ্যই সেটা লিমিটেড (ওভার ক্রিকেটে)।’

তিনি আরো লেখেন, ‘বিশ্ব ক্রিকেটের দুজন সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটারকে, সেটা আবার নিজ দলের খেলোয়াড়কে, আপনি যুদ্ধ করে বাঁচতে বলবেন, সেটা ড্রেসিংরুম পর্যন্ত থাকাই ভালো। অবশ্যই দলের স্বার্থ, সবার আগে দলের আগে কোনো খেলোয়াড় হতে পারে না। কিন্তু যে ক্রিকেটারগুলো দেশের হয়ে খেলতে নামে, তারা কোনো সহানুভূতি নিয়ে নয়, বরং তার শরীরের সর্বোচ্চটুকু নিংড়ে দলে জায়গা পায়। মুশফিকের গল্প আমরা সবাই জানি, তার নিবেদন কী পর্যায়ে। বাংলাদেশের হাজার হাজার উঠতি ক্রিকেটারদের আইডল সে।’

‘টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত তারা তাদের মতো করে নেবে, এটাই তো স্বাভাবিক এবং অবশ্যই ভালোর জন্য নেবে। সফল হলে তালি, না হলে গালি, যা সারা বিশ্বেই হচ্ছে। কে খেলবে, কোন পজিশনে খেলবে, কার রোল কী, এগুলো তো দলের একান্ত পরিকল্পনা, যা ড্রেসিং রুমে শুরু, আবার ড্রেসিং রুমেই শেষ হয়। বাইরে বলতে গেলে তো খেলোয়ারের পর চাপ সৃষ্টি হয় যা, তার স্বাভাবিকতাকে বাধাগ্রস্ত করবে।’

এমন সিদ্ধান্ত মুশফিক ও সোহান কারোর জন্যই স্বস্তিদায়ক নয়। তিনি লেখেন, ‘সোহান সম্ভবত দলের সেরা কিপার। সাথে লিটন, এক সিরিজ গ্যাপে যোগ হলো মুশফিক। এক দলে এত কিপার, এ তো আনন্দের। তা না হয়ে, বের হয় বিষাদ। এতটুকু সামাল দিতে না পারলে তো সমস্যা, যা একপর্যায়ে দলের ভিতর অদৃশ্য এক বাজে প্রতিযোগিতা চলে আসবে।’

‘আমি শুধু ভাবছি এতে কি সোহানের জন্যও খুব ভালো হলো, যে দুই ম্যাচে সব দেখিয়ে টিকে থাকতে হবে, তাহলে বিগত দুই সিরিজ সে যা করল, তার কী হবে! লিটন কী বলবে? এখনো তো কিপিং ভুলেই যাবে।’

মুশফিক প্রসঙ্গে তিনি লেখেন, ‘মুশফিককে পারফর্ম করতে হবে ১৬ বছর খেলার পর, এটা বলে দেয়ার কিছু নাই। সে খুব ভালো করেই জানে। বরং বাইরে এভাবে বললে তার নিবেদনকে অসম্মানিত করা হয়, যা তার প্রাপ্য নয়। সে সেরা ব্যাটসম্যান বলেই ১৬ বছর দেশকে সার্ভিস দিয়েছে। আবার দলের প্রয়োজনে তাকেই কিপিং করতে হতে পারে। তখন যদি সে ‘না’ বলে, সেটা কি ভালো শোনাবে?’

‘দলে প্রতিযোগিতা সব সময় দলের সেরাটা বের করে আনে, তবে সেটা সুস্থ হতে হবে। কাউকে আঘাত করে নয়।’


আরো সংবাদ



premium cement