২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বরিশালের হারে চট্টগ্রামের হ্যাটট্রিক জয়

বরিশালের হারে চট্টগ্রামের হ্যাটট্রিক জয় - সংগৃহীত

বরিশালকে হারিয়ে হ্যাটট্রিক জয় তুলে নিয়েছে চট্টগ্রাম। সোমবার মিরপুর জাতীয় স্টেডিয়ামে তৃতীয় জয়ের লক্ষে ফরচুন বরিশালের বিরুদ্ধে মাঠে নামে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম।

টি-টোয়েন্টি বিবেচনায় তেমন কঠিন লক্ষ্য ছিল না ১৫২ রানের টার্গেট। তবে দুই পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ও শরীফুল ইসলামের তোপে ফরচুন বরিশালের ব্যাটসম্যানদের জন্য এটিই হয়ে যায় দূরের বাতিঘর।

বাঁহাতি এ দুই পেসারের তোপেই ১৫২ রানের লক্ষ তাড়া করতে পারেনি বরিশাল। আগের দুই ম্যাচে বেক্সিমকো ঢাকা ও জেমকন খুলনাকে যথাক্রমে ৮৮ ও ৮৬ রানে অলআউট করলেও, এবার চট্টগ্রামের বিপক্ষে ১৪১ রান করে ফেলেছে বরিশাল। তাতেও লাভ হয়নি কোনো, ম্যাচ শেষে ১০ রানের ব্যবধানে জয়টা পেয়েছে চট্টগ্রামই।

১৫২ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বরিশাল। রানের জন্য হাঁসফাঁশ করতে করতে নাহিদুল ইসলামের ওভারে একটি ছক্কা হাঁকালেও, শরীফুলের বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দেন মেহেদি মিরাজ, ফিরতি ক্যাচে ধরা পড়েন বোলারের হাতেই। আউট হওয়ার আগে করেন ১৩ বলে ১৩ রান।

তিন নম্বরে পারভেজ হোসেন ইমনও পারেননি সাবলীল ব্যাটিং করতে। অপরপ্রান্তে তামিমের ব্যাট থেকেও আসে একের পর এক ডট। তবে শরীফুল ও নাহিদুলকে একটি করে ছক্কা হাঁকিয়ে রানের চাপটা কমানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু বেশিক্ষণ চালিয়ে নিতে পারেননি। ১১তম ওভারে মোসাদ্দেক সৈকতকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লংঅফ বাউন্ডারিতে সৈকত আলির হাতে ধরা পড়েন।

আউট হওয়ার আগে ১ চার ও ২ ছয়ের মারে ৩২ বল খেলে ঠিক ৩২ রান করেন বরিশাল অধিনায়ক। এর আগে ইনিংসের দলীয় ৫৯ রানের মাথায় ৩৬ রানের জুটির সমাপ্তি ঘটিয়ে মোস্তাফিজের করা প্রথম ওভারেই আউট হন পারভেজ ইমন। তার ব্যাট থেকে আসে ২ চারের মারে ১৬ বলে ১১ রান। তামিম-ইমন ফিরে যাওয়ার পরই মূলত ম্যাচ ঝুঁকে যায় চট্টগ্রামের দিকে।

তবু শেষ চেষ্টাটা করেছিলেন তৌহিদ হৃদয় ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। কিন্তু তারা কেউই ম্যাচ জেতানোর মতো লম্বা সময় উইকেটে থাকতে পারেননি। সৌম্যর বোলিংয়ে খোঁচা মারতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন ১০ বলে ১৭ রান করা তৌহিদ এবং ২২ বলে ২৪ রান করা আফিফকে সোজা বোল্ড করে দেন শরীফুল।

এরপর স্রেফ বাকি ছিল আনুষ্ঠানিকতা। বরিশালের শেষ দুই স্বীকৃত ব্যাটসম্যান ইরফান শুক্কুর ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে আউট করে জয় নিশ্চিত করে দেন মোস্তাফিজ। শেষপর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৪১ রানের বরিশাল, চট্টগ্রাম পায় ১০ রানের জয়।

বল হাতে চট্টগ্রামের দুই পেসারের ঝুলিতেই জমা পড়েছে তিনটি করে উইকেট। এর জন্য মোস্তাফিজকে খরচ করতে হয় ২২ ও শরীফুলের ৪ ওভারে যায় ২৭ রান। এর বাইরে সৌম্য ও মোসাদ্দেক নেন একটি করে উইকেট।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই সাজঘরে ফিরে যান সৌম্য, এক চারের মারে করেন ৬ বলে ৫ রান। ইনজুরিতে মুমিনুল হক ছিটকে পড়ায় তিন নম্বরে নামেন অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন। লিটন দাসকে নিয়ে ঝড়ো ব্যাটিংয়ের ইঙ্গিত দেন তিনি।

কিন্তু সুমন খানের করা ৬তম ওভারে পরপর চার ও ছক্কা হাঁকিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন চট্টগ্রামের অধিনায়ক। আউট হওয়ার আগে ১৩ বলে করেন ১৭ রান। অপরপ্রান্তে লিটন ছিলেন সাবলীল। আগের ম্যাচে করা ফিফটির ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দৃষ্টিনন্দন সব শট খেলতে থাকেন লিটন। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি নিজের ওপর।

ইনিংসের ১০তম ওভারে আবু জায়েদ রাহী বোলিংয়ে উদ্ভাবনী শট খেলতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে মেহেদি মিরাজের হাতে ধরা পড়েন তিনি। তখন তার নামের পাশে ৪টি চারের মারে ২৫ বলে ৩৫ রানের ইনিংস, পরে দেখেশুনে খেলতে শুরু করেন শামসুর শুভ ও মোসাদ্দেক সৈকত। দু’জন মিলে যোগ করেন ২৮ রান।

দলীয় ৯৬ রানের মাথায় ২৮ বলে ২৬ রান করে আউট হন শুভ। দলকে হতাশ করে ৯ বলে মাত্র ২ রান নিয়ে সাজঘরে ফেরেন জিয়াউর রহমান। এরপর ইনিংসের বাকিটা সাজান মূলত সৈকত আলি। মোসাদ্দেক সৈকতের সাথে মাত্র ১৮ বলে যোগ করেন ৪০ রান। এর মধ্যে আবু জায়েদ রাহীর করা ১৯তম ওভারে তিন ছক্কার মারে ২৩ রান তুলে নেন সৈকত আলি।

ইনিংসের শেষ বলে রানআউট হওয়ার আগে ১১ বলে এক চার ও তিন ছক্কার মারে ২৭ রানের ইনিংস খেলেন সৈকত আলি। মোসাদ্দেক সৈকতের ব্যাট থেকে আসে এক ছক্কার মারে ২৪ বলে ২৮ রানের ইনিংস। শেষদিকে দুই চারের মারে ৪ বলে ৮ রান করেন নাহিদুল ইসলাম।

বল হাতে বরিশালের পক্ষে ২ উইকেট নেন আবু জায়েদ রাহী। এছাড়া সুমন খান, কামরুল রাব্বি, তাসকিন আহমেদ ও মেহেদি মিরাজের ঝুলিতে যায় একটি করে উইকেট।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল