২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চিকন সুতোর উপর ঝুলছে বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কার সফর

বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কা সফর এখনো অনিশ্চিত - ফাইল ছবি

সমস্যা এক জায়গায়- কোয়ারেন্টাইন। শ্রীলঙ্কার চাওয়া বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ক্রিকেটারদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। তবে বিসিবির সাফ কথা, এমন শর্ত মানা সম্ভব না। এরপর দুই বোর্ড থেকে ভিন্ন ভিন্ন প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। কিন্তু চূড়ান্ত হচ্ছে না কোনোটাই। এখন পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনামাফিক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে অনড় শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট।

তবে একটা নতুন প্রস্তাব এসেছে লঙ্কান বোর্ড কর্তৃক। যদিও সেটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ‘যেই লাউ সেই কদু’র মতো। বাংলাদেশকে সফরে নেয়ার পরিবেশ তৈরি করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট। কোয়ারেন্টাইনের সময় কমানোসহ স্বাস্থ্য নিরাপত্তাবিষয়ক নির্দেশনা শিথিল করতে নিজেদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে মানানোর চেষ্টা করছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে দুইবার কোয়ারেন্টাইনের আবেদন করেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট। অর্থাৎ, দেশ থেকে সাত দিনের কোয়ারেন্টাইন করে যাওয়ার পর শ্রীলঙ্কাতে আরো সাত দিনের কোয়ারেন্টাইন করতে হবে বাংলাদেশকে।

ক্রীড়ামন্ত্রী নামাল রাজাপাকসের সাথে এসএলসির সভাপতি শাম্মি সিলভার আলোচনার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিক আবেদন করা হয়। গত মঙ্গলবার শাম্মি সিলভার নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের একটি প্রতিনিধি দল শ্রীলঙ্কার ‘ন্যাশনাল অপারেশন সেন্টার ফর প্রিভেনশন অফ কোভিড-১৯ আউটব্রেক’-এর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল শাভেন্দ্রা সিলভার সাথে সেনা সদর দফতরে জরুরি বৈঠক করে। এরপর ক্রীড়ামন্ত্রীর সাথে শাম্মি সিলভার বৈঠক হয়। তারপর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়।

শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ তাদের আগের অবস্থানেই আছে। শ্রীলঙ্কায় পৌঁছানোর পর বাংলাদেশকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন করার নির্দেশনা দিয়েছে তারা। যা মানা সম্ভব নয় বলে বিসিবি ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে। এ কারণেই দুইবার কোয়ারেন্টাইনের কথা চিন্তা করেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট। যদিও শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বা বিসিবি; কেউই এমন পরিকল্পনার সাথে একমত হয়নি।

এ ছাড়া বায়ো সিকিউর অবস্থায় আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ব্যাপারটি জটিল ও কঠিন বলে বিবেচিত হচ্ছে। তারপরও শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বিকল্পভাবে ভাবছে। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ১৪ দিনের কম কোয়ারেন্টাইন না মানার বিষয়টি বাধা হিসেবেই থেকে যাচ্ছে।

কোভিড-১৯ টাস্কফোর্সের সাথে বৈঠক করেছে শ্রীলঙ্কা। যেখানে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে বলে জানান লঙ্কান বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাভিন বিকরামারাত্নে। তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ টাস্কফোর্সের সাথে আমাদের ইতিবাচক বৈঠক হয়েছে। সবাই এটার সাথে একমত হয়েছেন যে, এই সফরটি আমাদের নিশ্চিত করা উচিত। তবে চিকিৎসকরা কী বলছেন, সেটাও আমাদের মানতে হবে।’

তবে কোয়ারেন্টাইনের ঝামেলা এড়াতে না পারলে শ্রীলঙ্কায় যাওয়া হবে না বাংলাদেশের। এটি নিশ্চিত। কয়েকদিন আগে সাফ কথা জানিয়ে দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও। যেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমরা একটি বার্তাই ওদেরকে দিতে চাই, ওরা যে শর্তাবলী দিয়েছে, এটা ইতিহাসে বিরল। এটা দিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ সম্ভব নয়। তারপর ওরা যদি বলে যে, ‘আসো আলাপ-আলোচনা করি’, তখন আমরা দেখব কী বলা যায় বা কোথায় শিথিল করতে বলব। তবে এই কন্ডিশনে খেলা হবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের বলা হয়েছিল তাদের ওখানে করোনা নাই। তারপর দেখলাম ওদের ওখানেও আছে। পরে আমরা ওদের জানালাম যে, আমরা বড় স্কোয়াড নিয়ে যাব। তাদের ওখানে আমরা অনুশীলন করবো। ওরা এখন অনুশীলনেরও সুযোগ দিচ্ছে না। কোনো অনুশীলন ছাড়া, যেখানে আমাদের খেলোয়াদের সাত মাস ধরে খেলা নেই সেখানে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ তো হতেই পারে না। ওখানে গিয়েও আমরা অনুশীলন করতে পারবো না, সেটা তো সম্ভব না। কাজেই এই মুহূর্তে এটা হওয়া সম্ভব না।’

তিন মাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা বাংলাদেশ দলের।


আরো সংবাদ



premium cement