২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জীবননগরে বিনা ধান ১৯ ও ২১ চাষে বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

- ছবি - নয়া দিগন্ত

জীবননগর উপজেলায় বিনা ধান ১৯ ও ২১ চাষে বাম্পার ফলন এবং বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া এই ধান চাষের উপযোগী হওয়ায় কৃষকেরা ভালো ফলন পেয়েছেন। কম খরচ আর স্বল্প সময়ের মধ্যে ফলন পাওয়ায় আগামীতে এই জাতের ধান ব্যাপকভাবে চাষের সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্র জানায়, বিনা ধান ১৯ চাষ বেশ কয়েক বছর ধরে চাষ হলেও বিনা ধান ২১ প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক চাষ করা হয়েছে। এ বছর উপজেলায় ২০ হেক্টর জমিতে বিনা ধান ২১ চাষ হয়েছে। এ ধান চাষে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন পাওয়া গেছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী আউশ মৌসুমে উপজেলায় বিনা ধান ২১ চাষ বাড়বে। কম সময়ে কম খরচে প্রায় দ্বিগুন ফলন হওয়ায় বিনা ধান ২১ চাষে দিন দিন চাষিদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে।

জীবননগর উপজেলার মাধবখালী গ্রামের প্রশিক্ষিত কৃষক রাজেদুল ইসলাম বলেন, এ বছর আউশ মৌসুমে প্রথমবারের মত দুই একর জমিতে পরীক্ষামূলক বিনা ধান ২১ আবাদ করেছিলাম। ফলন কেমন হবে তা নিয়ে বেশ চিন্তার মধ্যে ছিলাম। তবে শেষ পর্যন্ত ফলন বাম্পার হওয়ায় দুশ্চিন্তা কেটে গেছে। আগামীতে আরো বেশি জমিতে বিনা ধানের আবাদের আশা করছি। ধানের বাম্পার ফলন আর বাজারে দাম ভাল পাওয়ায়, আমার দেখাদেখি এলাকার চাষিরা তাদের জমিতে বিনা ধান ২১ চাষ করবেন বলে আমার কাছে পরামর্শ নিচ্ছেন। রাজেদুল ইসলাম আরো জানান,এ ধান বীজ বপনের ২৫ দিনের মধ্যে চারা রোপন করা যায় এবং ৩০ দিনের উৎপাদন সম্ভব। প্রতি বিঘা জমিতে ২০-২২ মণ ফলন হয়েছে। বাজারে এ ধানের চাহিদাও ভালো।

উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের বিনা ধান চাষি রেজাউল হক ও জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিনা ধান ২১ চাষে ফলন বেশি। ধান চিকন হওয়ায় বাজারে চাহিদা ও দাম ভালো। বিনা ধানের ভাতও খেতে সুস্বাদু। এ ধানের ২৯-২৫ দিনের চারা লাগালে ৭০-৮০ দিনের মধ্যে ধান কেটে ঘরে তোলা যায়। তবে কৃষকেরা বিনা ধানের চাষ করলে লাভবান হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

বিনা উপকেন্দ্র মাগুরা পরামণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত ও সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শেফাউর রহমান বলেন, আফ্রিকার নেরিকা ১০ ধানের জাত থেকে বিনা ধান ২১ জাতের উদ্ভব।

নেরিকার ফলন কম হতো বলে কৃষকের এ জাতের প্রতি আগ্রহও কম ছিল। গবেষণায় গামা রশ্মি প্রয়োগের ফলে ফলন বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। এতে গাছের কম-বেশি উচ্চতায় সমান করা হয়েছে। মোটা ধানকে চিকন করা হয়েছে। ফলে এ ধান চাষে দিন দিন কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। আগামী আউশ মৌসুমে এই ধানের আবাদ বাড়বে এবং খাদ্য উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল