১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সাবেক বিচারপতি টি এইচ খানের দাফন সম্পন্ন

- ছবি : নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সিনিয়র অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন খানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে হালুয়াঘাট ও বিকেলে নিজ জন্মভূমি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ওটি গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নামাজে জানাজা শেষে সেখানেই পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

টি এইচ খান বার্ধক্যজনিত কারণে রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে গত রোববার মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১০২ বছর। গত ২১ অক্টোবরে তার ১০২তম জন্মদিন জন্মদিন উদযাপন করা হয়।

দেশবরেণ্য ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় এই আইনবিদ ১৯২০ সালের ২১ অক্টোবর ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলাধীন ওটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে তিনি আইন পেশায় যোগ দেন। তার প্রকৃত নাম মো: তাফাজ্জাল হোসেন খান। তিনি ১৯৬৮ সনে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তিনি হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর ১৯৭৩ সালের জুলাই মাস থেকে পুনরায় আইন ব্যবসায় ফিরে আসেন। ১৯৭৪ সালে তিনি প্রথমবারের মতো সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত হন।

১৯৭৯ সালে তিনি পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮১ সালের ১৫ নভেম্বর আইন, শিক্ষা, ধর্ম, ভূমি ও রাজস্ব এবং ক্রীড়ামন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। এরপর ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এরশাদের নেতৃত্বে নতুন সামরিক আইন জারি করা হয়। তখন তিনি আবার আইন পেশায় ফিরে যান। ১৯৮৬ সালে এরশাদের নির্বাচনে বিরোধিতা করার জন্য গ্রেফতার হন।

বিচারপতি টি এইচ খান ১৯৯২ সালে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নির্বাচিত হন। এই পদে তিনি ২০১১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বিএনপির প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান।

১৯৯২ সালে তিনি সুইজারল্যান্ডের জেনেভাস্থ জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস কমিশনের মেম্বার এবং একই বছর জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৪ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের দ্বিতীয়বারের মতো সভাপতি নির্বাচিত হন।

১৯৯৫ সালে বিচারপতি টি এইচ খান এশিয়া জোন থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত রুয়ান্ডা ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯৯ সালের ১৯ জুন পর্যন্ত জাতিসঙ্ঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল পদে বিচারকার্য পরিচালনা করেন।

১৯৪০ সালে বিচারপতি টি এইচ খান ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন এবং ১৯৪২ সালে তৎকালীন কলকাতা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএ অনার্সে ভর্তি হন। ১৯৪৫ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্স এবং ১৯৪৬ সালে এমএ পাস করেন। ১৯৫১ সালের ১৪ মার্চ তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হন।

আইন পেশা ছাড়াও বিচারপতি টি এইচ খান পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ, ঢাকার জগন্নাথ কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন ও আইন বিষয়ে অধ্যাপনা করেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement