১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

নিজ বাসায় পুলিশ কর্মকর্তার বাবা-মাকে কুপিয়ে হত্যা

-

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মোমেনবাগে নিজের বাসায় দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের কোপে খুন হয়েছেন মো: শফিকুর রহমান (৬০) ও তার স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিন (৫০)। তারা পুলিশের এসআই (এসবি) ইমনের বাবা-মা। শফিকুর নিজে জনতা ব্যাংকের সাবেক গাড়ি চালক। গত বুুধবার রাতের কোনো এক সময় তাদের কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। শফিকুরের লাশ পড়েছিল ভবনের নিচে গ্যারেজে। আর ফরিদার লাশ পাওয়া যায় শোবার ঘরে খাটের ওপর। ধারণা করা হচ্ছে, শফিকুর রহমান ফজরের নামাজ আদায়ের জন্য নিচে এলে তার ওপর হামলা চালানো হয়। এরপর তার কাছ থেকে চাবি নিয়ে দ্বিতীয় তলায় থাকা ঘুমন্ত ফরিদাকেও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
যাত্রাবাড়ী থানার ওসি আবুল হাসান, গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে মোমেনবাগের আড়াবাড়ি বটতলার ওই বাসায় গিয়ে নিচে গ্যারেজে শফিকুর রহমানের গলাকাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এরপর দ্বিতীয় তলায় গিয়ে দেখা যায়, তার বাসার প্রধান দরজা খোলা। স্বামী-স্ত্রীর শোবার ঘরে খাটের ওপর পড়ে রয়েছে ফরিদা ইয়াসমিনের রক্তাক্ত লাশ। তাদের দুজনকেই কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, সম্প্রতি ওই চারতলার বাড়িটি নির্মাণ করেছেন শফিকুর রহমান। পুলিশ সন্তান ইমন ও তার স্ত্রীসহ তারা দোতলায় থাকতেন। নিচতলার এক পাশ এবং তিন ও চারতলা ভাড়া দেয়া। গত বুধবার রাতে ইমন তার দাদাবাড়ি ফেনী এবং তার স্ত্রী নিজের বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান। বাসায় তাদের বৃদ্ধ বাবা-মাই ছিলেন। শফিকুরের লাশের পাশে পড়ে থাকা চাবি দেখে ধারণা করা হচ্ছে তিনি ফজরের নামাজের জন্য চাবি নিয়ে নিচে নামেন। গেট খুলতেই আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা প্রথমে তার উপর হামলা চালায়। এরপর ওই চাবি নিয়ে তাদের বাসার দরজা খুলে হত্যা করা হয় ফরিদাকে। সকাল ৭ টার দিকে ভাড়াটিয়ারা নিচে নামলে শফিকুরের লাশ পড়ে থাকতে দেখে ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশে খবর দেন। তারা এই ঘটনার কিছুই টের পাননি বলে দাবি করছেন।
পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার মো: ইকবাল হোসাইন বলেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড নাকি ডাকাতির ঘটনা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে বাসার ভেতর সব আলমারি খোলা পাওয়া গেছে। পুলিশ এবং সিআইডির ক্রাইম সিনের সদস্যরা বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছেন। শিগগিরই জানা যাবে হত্যাকাণ্ডের রহস্য।
ওসি আবুল হাসান বলেন, বাসার নিচের প্রধান ফটক ও ঘরের দোতলার দরজা খোলা ছিল। শফিকুরের কাছে প্রধান ফটকসহ বাসার চাবি পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রধান ফটক খুলতেই দুর্বৃত্তরা প্রবেশ করেছে। বাসার পেছনের দেয়ালের সাথে লাগোয়া অন্য একটি ভবন রয়েছে যেখান বেয়ে এই ভবনে ওঠা যায়। সেখান দিয়ে তারাও প্রবেশ করতে পারে। তবে পুরো বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়। পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে ঘটনাটি তদন্ত শুরু করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement