১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

কোটা পুনর্বহাল সিদ্ধান্ত বাতিলে আলটিমেটাম শিক্ষার্থীদের

চাকরির বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে ঢাবি টিএসসিতে চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি : নয়া দিগন্ত -

সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে ৩০ জুন পর্যন্ত আলটিমেটাম বেঁধে দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোটা বাতিল ঘোষণা করা না হলে সর্বাত্মক আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দেন তারা। গতকাল সকালে তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় আলটিমেটামের ঘোষণা দেন তারা।
কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর এই সমাবেশে, সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে, আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার, জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে, লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে ‘কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ স্লোগানে মুখরিত হতে থাকে ঢাবি ক্যাম্পাস। সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীদের একাংশ সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে অ্যার্টনি জেনারেলের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহিম বলেন, ২০১৮ সালে আমাদের কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনে রক্ত ঝরেছে। প্রধানমন্ত্রী প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর কোটা সংসদে বাতিল করেছিলেন। কিন্তু হাইকোর্টের নেয়া কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের স্বপ্নকে ভেঙে দিয়েছে। মেধার ভিত্তিতে দেশ গড়ার স্বপ্নকে নস্যাৎ করেছে। সাম্য ও সামাজিক ন্যায়বিচার ভঙ্গ করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তামান্না আকতার বলেন, বাংলাদেশে কোনো কোটা থাকা উচিত নয়। আমি নারী হয়ে বলছি, আমি কোনো নারী কোটা চাই না। আমরা মেধার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পরিচালনা করতে চাই। আমরা রাষ্ট্র কর্তৃপক্ষের কাছে বলতে চাই, মেধাবীদের হাতে দেশটাকে ছেড়ে দিন। মেধা বিচারে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করুন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাত রশিদ বলেন, এই কোটাব্যবস্থায় চাকরিতে সমতা নিশ্চিতের কথা বলা হয়। কোটার মাধ্যমে মেধাবীদের অবহেলা করা হচ্ছে। ঢাবি ছাত্রসমাজ কোনো দাবি আদায়ে যতবারই রাস্তায় নেমেছে সেই দাবি আদায় করেই রাজপথ ছেড়েছে। আজকেও আমরা কোটা পুনর্বহালের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছি। যদি এই বৈষম্যমূলক কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত বাতিল না করা হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা এই রাজপথ ছাড়বে ন। প্রয়োজনে রক্ত ঝরবে, রাজপথে লাশ পড়বে তবুও দাবি আদায় করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। এ রায়ের ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাপদ্ধতি বহাল থাকল বলে জানানো হয়। রায়টি ঘোষণা হওয়ার পর থেকে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।

 


আরো সংবাদ



premium cement