দুর্নীতিবাজ ঋণখেলাপি ঘুষখোরদেরকেই আমরা বেশি সম্মান করি
- নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
- ০৭ জুন ২০২৪, ০০:০৫
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার (তদন্ত) মো: জহুরুল হক বলেছেন, ঘুষ গ্রহণ বা প্রদান অথবা দুর্নীতি করা দুটি বিষয়ে দুদক কাজ করে। এ দুটোর সাথে যে বা যারা জড়িত নন তাদের দুদক কিছুই করতে পারবে না। যে দুর্নীতিগ্রস্ত আর যে ঘুষ গ্রহণ বা প্রদান করে তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন দেশ এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, যারা দুর্নীতি করে, তারা বেশি বেশি কথা বলে, বিভিন্নজনকে উপদেশ দেয়। এজন্য তাদের কথা কেউ শোনে না। আবার দুর্নীতিবাজ, ঋণখেলাপি, ঘুষখোরদেরকেই আমরা বেশি সম্মান করি। এতে তারা দুর্নীতি-অনিয়মে আরো উৎসাহ পায়। বিশ্বের অন্য কোথাও এমনটি নেই।
গতকাল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের কালীরবাজারে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে দুদক আয়োজিত গণশুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো: মাহমুদুল হকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুদকের মহাপরিচালক আখতার হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল প্রমুখ।
মো: জহিরুল হক আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জ ধনী এলাকা, এখানে প্রভাবশালীর সংখ্যা বেশি। আর প্রভাবশালীরাই বেশি দুর্নীতি করে। এখানে যারা অভিযোগ দিবেন তাদের যেন কোনো প্রকার হয়রানি করা না হয়। আপনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব দুদকের। প্রতিটি অভিযোগের বিষয়ে দুদকের জেলা কার্যালয় যেন অত্যন্ত কঠোর থাকে। অন্যায্য অভিযোগ গ্রহণ করা হবে না জানিয়ে দুদক কমিশনার আরো বলেন, অনেকেই এসে অভিযোগ করেন, আমার জমি অধিগ্রহণ করা হলেও সরকার আমাকে টাকা দিচ্ছে না। পরে খতিয়ে দেখা যায়, তার জমির খাজনা, খতিয়ান, নামজারি কিছুই ঠিক নেই। তাহলে অফিসার তাকে কীভাবে টাকা দিবেন। কেউ হিংসাত্মক মনোভাব নিয়ে অভিযোগ দায়ের করবেন না। কেউ অন্যায্য অভিযোগ দিলে দুদক সেটি গ্রহণ করবে না। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আখতার হোসেন বলেন, আমাদের নিরলস প্রচেষ্টার পরেও দুর্নীতিকে সহনীয় পর্যায়ে আনা যায়নি। কিন্তু আপনাদের সকলের সহযোগিতা পেলে আমরা অবশ্যই সফলকাম হবো।
পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ব্যক্তির দায় কখনোই প্রতিষ্ঠান নিবে না। একটি প্রতিষ্ঠানের ১-২% লোক দুর্নীতিতে জড়িত থাকেন। আমি যদি দুর্নীতি না করি, তাহলে আমার অধস্তনেরা এটি অনুসরণ করবে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো: মাহমুদুল হক বলেন, দুর্নীতি এ দেশে নতুন নয়। এটি অনেক পুরনো। চানক্যের অর্থশাস্ত্রে দুই হাজার বছর আগে বলা হয়েছে, এ ভূখণ্ডে চল্লিশ প্রকারের দুর্নীতি হতে পারে। দুদকের আজকের আয়োজন সরকারি অফিসে সেবাপ্রার্থীরা কী ধরনের হয়রানি হচ্ছেন তা জানতে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যদি ৫০ ভাগ সেবাও দিতে পারে তাও মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস পাবে।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো), তিতাস গ্যাস, ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল, ভূমি অফিস, খানপুর ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল, কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আসা, যাতে সর্বমোট ৫৫টি অভিযোগ উত্থাপিত হয়। সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সেবাদাতারা সরাসরি উত্তর দেন। গণশুনানিতে মডারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জেলা প্রশাসক মো: মাহমুদুল হক।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা