১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

১৭ হাজার নয় ৬ হাজার কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে পারেনি

সংবাদ সম্মেলনে বায়রার দাবি
-

মালয়েশিয়া সরকারের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে ১৭ হাজার কর্মী দেশটিতে না যাওয়ার কথা বলা হলেও আমাদের হিসাবে এখন পর্যন্ত এটি ছয় হাজারের বেশি না। গতকাল মঙ্গলবার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এবং মতবিনিময় সভায় এমনটা দাবি করেন রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা।
মালয়েশিয়া সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, ভিসা পাওয়া বাংলাদেশী কর্মীদের দেশটিতে প্রবেশের শেষ সময় ছিল ৩১ মে। শেষ সময়ে বহু চেষ্টার পরও জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ছাড়পত্র পাওয়া প্রায় ১৭ হাজার বাংলাদেশী শ্রমিক দেশটিতে যেতে পারেনি। এ অবস্থায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দেশটিতে কর্মী পাঠাতে না পারার ব্যর্থতার দায় নিতে নারাজ মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা।
সাংবাদিকদের বায়রার সাবেক মহাসচিব মোহাম্মদ রুহুল আমিন স্বপন বলেন, ৩১ মে পর্যন্ত মালয়েশিয়া সরকার ই ভিসা ইস্যু করেছে। বাংলাদেশ সরকারও অনুমোদন দিয়েছে। ৩১ মেও যদি ই-ভিসা ইস্যু করা হয় তাহলে আমরা তালিকা কিভাবে তৈরি করব? ১৫ মার্চ থেকে যদি ভিসা ইস্যু বন্ধ করা হতো তাহলে সঙ্কট তৈরি হতো না। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও মালয়েশিয়া সরকার বিষয়টি দেখলে এ সঙ্কট তৈরি হতো না।

এ প্রসঙ্গে বায়রার সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাশার বলেন, ১০১ জন ব্যবসা করেছে, তাদের সুযোগ দিয়েছে কে? দুই দেশের মন্ত্রণালয়। আমাদের যে লোকগুলো যেতে পারেনি তাদের পাঠানোর জন্য আমরা সরকারের কাছে আবেদন করেছি, সরকারও চেষ্টা করেছে। তিনি বলেন, কথা দিলাম, যারা মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি তাদের তালিকা করতে আমরা পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেবো। আমরা তাদের বলব, যেসব এজেন্সি তাদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাঠাতে পারেনি তাদের নাম আমাদের এখানে এসে লিপিবদ্ধ করার। এজেন্সিকে কত টাকা দিয়েছে সেটাও লিপিবদ্ধ থাকবে। সরকার যদি তাদের পাঠাতে ব্যর্থ হয় তাহলে আমরা এজেন্সিগুলোর কাছ থেকে টাকা আদায় করে কর্মীদের ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করব। কর্মীদের কাছ থেকে চার গুণ টাকা বেশি নেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রত্যেক কর্মীর কাছ থেকে ৪-৫ লাখ নেয়ার যে অভিযোগ উঠেছে সেটা সঠিক নয়। এ রকম অভিযোগ অনেকে করে। বায়রার বর্তমান মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, মন্ত্রণালয় যে তদন্ত কমিটি করেছে সেই তদন্ত কমিটির চিঠি আমাদের কাছেও এসেছে। চিঠিতে তদন্তকাজে সহযোগিতা করার বিষয়টি বলা হয়েছে। আমরা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির সাথে আছি। একসাথে কাজ করছি। তিনি বলেন, আমরা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনের পরে যেসব কর্মীরা আসলেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের টাকা ফেরত দেয়ার চেষ্টা করব।

রিক্রুটি এজেন্সি মালিকদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, প্রায় ৬ হাজার কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে পারে। এ প্রসঙ্গে বায়রার সাবেক মহাসচিব মোহাম্মদ রুহুল আমিন স্বপন বলেন, ১৬-১৭ হাজার কর্মী যায়নি সেটা আজকের বিষয় না, এটা গত ২২ মাস আগের। এটা অনেক আগে থেকেই সেটেল্ড হচ্ছিল। বছর শেষে যখন ব্যবসা শেষ হলো তখন আমরা বলছি টোটাল ১৭ হাজার কর্মী যেতে পারেনি। ১০১টা এজেন্সি যখন তাদের নম্বর সাবমিট করবে তখনই বলা যাবে আসলে কতজন কর্মীর এখনো যাওয়া বাকি আছে। এ ছাড়া সব সময় যতগুলো ক্লিয়ারেন্স হয় ততজন কর্মী যায় কথাটা সত্য নয়। বায়রার সাবেক সভাপতি বেনজির আহমদ বলেন, এমপিদের নেতৃত্বে ২৪ কোটি টাকা আত্মসাতের যে অভিযোগ উঠেছে সেটা ভিত্তিহীন। কোনোভাবেই আপনারা এটা প্রমাণ করতে পারবেন না যে এমপিরা এমনটা করেছেন। কারণ হলো ১০১টা লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। আমরা তো মালয়েশিয়ায় যাইনি। কাউকে বলিনি যে আমাদের লাইসেন্স দেন। নিয়ম মেনেই সব হয়েছে। সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে সংসদসদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী বলেন, সিন্ডিকেট বলে কোনো শব্দ নেই। ১০১ এজেন্সির মধ্যে সরকারও আছে। যেখানে সরকার আছে সেখানে সিন্ডিকেট নেই। মালয়েশিয়া সরকার যাদের সিলেক্ট করেছে শুধু তারাই কর্মী পাঠিয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement