ঢাকায় বায়ুদূষণ রোধে মন্ত্রীর আহ্বান মেয়রের ৫ ঘোষণা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৪ জুন ২০২৪, ০১:৫৪
বায়ু ও পরিবেশ দূষণ মোকাবেলায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘সেভ ইয়োর ব্রিদ : পলিসি ডায়ালগ অন ক্লিন এয়ার ইমপারেটিভস’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, বায়ু দূষণের কারণে মানুষ শারীরিক ক্ষতির পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রত্যেক নাগরিককে নিজ নিজ জায়গা থেকে দূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে হবে। বর্তমানে সরকার বিকল্প জ্বালানি ব্যবস্থার পরিকল্পনা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, বায়ু ও পরিবেশ দূষণ মোকাবেলায় আইনের যথাযথ প্রয়োগে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বায়ুদূষণ কোনো একটি দেশের সমস্যা নয়- এটি একটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সমস্যা। তাই এ সমস্যা মোকাবেলায় ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দক্ষিণ এশীয় পর্যায়ে আঞ্চলিক সহযোগিতা ও সমন্বয় প্রয়োজন। কারণ এক দেশের বায়ুদূষণের প্রভাব পড়ছে অন্য দেশের ওপর। এ ছাড়া বায়ুদূষণ রোধে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর পাশাপাশি সব পক্ষের সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করেন পরিবেশমন্ত্রী। সেমিনারে ঢাকার বায়ুদূষণের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম।
সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন- বাংলাদেশ ক্লাইমেট পার্লামেন্টের আহ্বায়ক ও সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, ইউএনডিপি বাংলাদেশের রেসিডেন্ট রিপ্রেজেনটেটিভ স্টেফান লিলার, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি আদিল মোহাম্মদ খান, ইউএসএইড এশিয়া ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অঞ্জলি কাউর এবং শক্তি ফাউন্ডেশনের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ইমরান আহমেদ। এ দিকে বায়ুদূষণ রোধে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো: আতিকুল ইসলাম পাঁচটি ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বায়ুদূষণ রোধে পাঁচটি ঘোষণায় ধূলাবাহিত বায়ুদূষণ রোধকল্পে নির্মাণস্থলে আচ্ছাদন ব্যবহার করা, বায়ুবাহিত সূক্ষ্ম কণা ছড়িয়ে দেয় এমন উপকরণ বহনকারী যানবাহনের জন্য উপযুক্ত আচ্ছাদন ব্যবহার নিশ্চিত করা, কালো ধোঁয়া নির্গমন হয় এমন অনুপযুক্ত যানবাহন নিষিদ্ধ করা, অপ্রয়োজনীয় পাতা এবং বর্জ্য পোড়ানো পরিহার করা, নালা ও খালের অবৈধ পয়ঃনিষ্কাশন লাইন বন্ধ করা।
গতকাল রাজধানীর শেরাটন হোটেলে শক্তি ফাউন্ডেশন এবং ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘সেভ ইয়োর ব্রেথ : পলিসি ডায়ালগ অন ক্লিন এয়ার ইমপারেটিভস’ শীর্ষক নীতিনির্ধারণী সংলাপে এ ঘোষণা দেন তিনি। বায়ুর গুণমান উন্নতকরণে তথ্যভিত্তিক সমাধান এবং তার যথাযথ প্রয়োগের ওপর গুরুত্বারোপের লক্ষ্যে ইউএসএআইডি এবং শক্তি ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই সংলাপের আয়োজন করে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, শহরের পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। বিভিন্ন সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। গুলশান ও বারিধারা এলাকায় একটি সার্ভে করেছিলাম। বেশির ভাগ ভবনে সঠিক স্যানিটেশন ব্যবস্থা নেই। অভিজাত এলাকায় পয়ঃবর্জ্যরে অবৈধ সংযোগ সিটি করপোরেশনের সারফেস ড্রেনে দিয়ে দূষণ করছে। গুলশান ও বারিধারা খালের পানি দূষিত। মাছের চাষ করা যায় না। সেখানে মশার চাষ হচ্ছে। মেয়র আরো বলেন, শহরের প্রায় সব ভবনেই এয়ার কন্ডিশন (শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র) লাগানো আছে। সবাই হাজার হাজার টাকা খরচ করে ঘর ঠাণ্ডা করার জন্য এসি লাগাচ্ছে সবাই; কিন্তু অনসাইটে সুয়্যারেজ ব্যবস্থাপনা করা বিষয় কেউ চিন্তা করছে না। নির্বিচারে শহরের খালে, ড্রেনে সুয়্যারেজের সংযোগ দিয়ে পানি, বায়ু দূষণ করছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে। এসব অবৈধ সংযোগ বন্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেবো।
শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাকের সঞ্চালনায় সংলাপে আরও অংশ নেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) সিদ্দিকুর রহমান সরকার, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পরিচালক মো: লোকমান হোসেন মোল্লা প্রমুখ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা