১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে খুলছে না সিলেটের পর্যটন কেন্দ্র

-

সিলেটের সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। বন্ধ করা উল্লেখযোগ্য পর্যটনকেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে কোম্পানীগঞ্জে সাদাপাথর, গোয়াইনঘাটের জাফলং, রাতারগুল ও বিছানাকান্দি, জৈন্তাপুরের লালাখাল। প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে এগুলো আর খুলছে না।
টানা ভারী বর্ষণের সাথে উজানের ঢল মিলিয়ে সিলেটে নদনদীর পানি বাড়ছেই। এ অবস্থায় জেলার পাঁচ উপজেলায় বন্যাপরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সিলেট জেলা প্রশাসনসহ উপজেলা প্রশাসনগুলো পৃথক পৃথক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পর্যটেনকেন্দ্রগুলো বন্ধের ঘোষণা দেয়। সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোবারক হোসেন বলেন, বৃষ্টি ও ঢলের প্রভাবে সিলেটের জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা ডুবে গেছে। এ অবস্থায় সাদাপাথর, জাফলং, বিছানাকান্দিসহ পর্যটনকেন্দ্রগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। পর্যটন স্পটগুলোতে যাওয়ার পরিবেশ নেই। এ কারণে সিলেটের প্রধান প্রধান পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হলো। কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুনজিত কুমার চন্দ বলেন, ধলাই নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় পর্যটনকেন্দ্রগুলো পানিতে ডুবে গেছে। এ অবস্থায় বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সাদাপাথর পর্যটন ঘাটসহ সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: তৌহিদুল ইসলামও জাফলংসহ উপজেলার পর্যটন স্পটগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। উপজেলা প্রশাসন থেকে গণবিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে।

সিলেটের উপজেলাগুলোর মধ্যে গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত বুধবার বিকেল থেকে এসব উপজেলায় নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। গত বৃহস্পতিবারের মধ্যেই পানিবন্দী হয়ে পড়েন লাখো মানুষ। অনেক ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। অনেকের ঘরে পানি ঢুকে পড়ে। এ অবস্থায় অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, গোয়াইনঘাটে ৫৬টি, জৈন্তাপুরে ৪৮টি, কানাইঘাটে ১৮টি, কোম্পানীগঞ্জে ৩৫টি ও জকিগঞ্জে ৫৮টিসহ পাঁচ উপজেলায় ২১৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। প্রয়োজনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের প্রস্তুতিও রাখা হয়েছে।
এদিকে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় নানা প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ- এই ৫টি উপজেলায় মোট ২১৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে গোয়াইনঘাটে ৫৬, জৈন্তাপুরে ৪৮, কানাইঘাটে ১৮, কোম্পানীগঞ্জে ৩৫ ও জকিগঞ্জে ৫৮টি। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে গত মঙ্গলবার বিকেল থেকে মানুষজন উঠতে শুরু করেছেন। এ ছাড়া বন্যাকবলিত লোকজনের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ২০০ বস্তা করে মোট এক হাজার বস্তা শুকনো খাবার, ১৫ মেট্রিক টন করে ৭৫ মেট্রিক টন চাল, ৫০ হাজার টাকা করে আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে বরাদ্দ আরো বাড়ানো হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, সুরমা নদী কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারা নদী জকিগঞ্জের অমলশীদ পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার এবং সারিগোয়াইন নদী জৈন্তাপুরের সারিঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল