বাস মালিকদের প্রেসক্রিপশনে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন বন্ধ করা হচ্ছে

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচলকারী কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করে এই রুটে জনপ্রিয় এই ট্রেন সার্ভিস বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। অন্যথায় এইপথের যাত্রী সাধারণকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব মো: মোজাম্মেল হক চৌধুরী এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার রেলসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে ১০ থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রেলপথ নির্মাণ করে। রেল কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র রাজধানীবাসীকে সুবিধা দেয়ার মানষে ঢাকা থেকে কক্সবাজার ২টি ট্রেন সার্ভিস চালু করে। কিন্তু চট্টগ্রাম, দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের জনগণ জমিজমা, ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, নদী-নালা,খাল-বিল বিলীন করে রেলপথের জন্য ছেড়ে দিলেও এই ট্রেন সার্ভিস চালুর পর থেকে তারা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে যাতায়াতের সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকায় স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছিল। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবির মুখে বিগত ঈদুল ফিতরের সময়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে কক্সবাজার স্পেশাল নামে একটি ট্রেন সার্ভিস চালু করা হয়। সড়কপথে নৈরাজ্য, সড়ক দুর্ঘটনার কি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের হাত থেকে মুক্তি পেতে যাত্রী সাধারণ যখন সীমিত সুবিধার এই ট্রেনটির প্রতি ঝুঁকছিলেন, অল্প সময়ের মধ্যেই ট্রেনটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এই জন্য ঈদের পর নিধারিত সময়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও স্থানীয় রেল প্রশাসনের মাঠ জরিপ প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ট্রেনটি চলাচলের সময়সীমা দুই দফা বাড়ানো হয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে যাত্রীরা যখন এই ট্রেনে নিয়মিত যাতায়াত করছিলেন, তখন বাস মালিকেরা বাস ভাড়া ১০০ টাকা পর্যন্ত কমিয়ে আনতে বাধ্য হয়। তারপরেও বাসে যাত্রী না পাওয়ায় বাস মালিকেরা রেল প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ফেলেছে বলে এই রুটে যাত্রীদের অনেকেই মনে করেন। তাই বাস মালিকদের প্রেসক্রিপশনে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের জনপ্রিয় ট্রেন সার্ভিস কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন বন্ধ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি অবিলম্বে কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন সার্ভিস বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও কামনা করেন।
প্রসঙ্গত গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে বিশেষ এই ট্রেনটি বন্ধ করে দেয়া হয়। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, ইঞ্জিন, লোকোমাস্টার ও জনবল সঙ্কটের কারণে বাধ্য হয়ে বিশেষ ট্রেনটি বন্ধ রাখা হয়েছে।