১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

লুটপাটে ধ্বংস হচ্ছে সাদামাটির পাহাড়

বেপরোয়া মাটি কাটার কারণে নেত্রকোনার সাদামাটি পাহাড়ে খাদের সৃষ্টি হয়েছে : নয়া দিগন্ত -

অবাধ লুটপাটে তছনছ হয়ে পড়েছে নেত্রকোনায় দেশের বৃহৎ প্রাকৃতিক খনিজসম্পদ সাদামাটির পাহাড়। অরক্ষিত এই খনিজসম্পদ যুগের পর যুগ ধরে লুটপাট করছে কিছু সিন্ডিকেট। অনিয়ন্ত্রিতভাবে মাটি উত্তোলনের ফলে সৃষ্টি হয়েছে গভীর খাদের। ফলে প্রায়ই ঘটছে পাহাড় ধসের ঘটনা। এতে হুমকির মুখে পড়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। উৎকণ্ঠায় রয়েছে এখানকার অধিবাসীরা। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আর প্রশাসনের নজরদারির অভাবে লুটপাটকারী সিন্ডিকেট রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ফলে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।
দৃষ্টি নন্দন এই সাদামাটি বা চীনামাটি পাহাড়ের অবস্থান নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী সুসং দুর্গাপুর উপজেলায় গারো পাহাড়ের কোল ঘেঁষে বিজয়পুর নামক স্থানে। বাংলাদেশের একমাত্র বৃহত্তম প্রাকৃতিক খনিজসম্পদ চীনা মাটি বা সাদা মাটির পাহাড় এটি। এই এলাকা দর্শনীয় স্থান বা পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করায় প্রতিদিন দেশের নানান প্রান্ত থেকে অগণিত পর্যটক ছুটে আসেন। মনোমুুগ্ধকর সবুজে ঘেরা গারো পাহাড়বেষ্টিত এ স্থানে আসলে কোলাহলমুক্ত নির্মল শীতল পরশে যে কেউ মুগ্ধ হতে পারেন। এ ছাড়া ঘুরে দেখতে পারেন সুসং রাজাদের রাজবাড়ি, কিংবদন্তি হাজং মাতা, কমরেড মনি সিংহের স্মৃতিসৌধ, কমলা বাগান, গারো হাজং পলী, রানী খং গির্জা, কমলা রানীর দীঘি, বিজিবি ক্যাম্প ও গারো পাহারের ওপর অবস্থিত বিএসএফ ক্যাম্প। আর দুর্গাপুর ব্রিজ দিয়ে প্রবেশ মুখের আগেই পশ্চিম পাশে চোখে পড়বে দেশের প্রথম উপজাতি কালচারাল একাডেমি। পাহাড় থেকে নেমে আসা সোমেশ^রী নদী বিভক্ত করে রেখেছে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমারেখা। নদীর তীরে দাঁড়িয়ে প্রাকৃতিক অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য দেখে যে কেউ বিমুগ্ধ হবেন। ইচ্ছে করলে ভাড়া করা নৌকা নিয়ে ঘুরে দেখতে পারেন জিরো পয়েন্টে, পাথরের পাহাড় রানীর গুহা ও মাঝি,মাল্লাদের দৈনন্দিন কর্মচাঞ্চল্যতা। এখানকার কোলাহলমুক্ত সৌন্দর্য্য ও ঝিরিঝিরি বাতাসের পরশে মনপ্রাণ জুড়িয়ে যাবে মুহূর্তেই।
কিন্তু দুঃখের বিষয়, পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনাময় ওই অঞ্চলটি এখন অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। অবাধে লুটপাটের দরুন সাদা পাহাড়ের সৌন্দর্য্য যেমন মলিন হয়ে পড়েছে, তেমনি ঝুঁকিপূর্ণও হয়ে উঠেছে। এ ছাড়া সেখানে চোরাই পথে আসা মাদকদ্রব্য, চিনিসহ নানা ধরনের ভারতীয় পণ্যে সয়লাব হয়ে উঠেছে বিভিন্ন হাটবাজার। নানা অব্যবস্থাপনার কারণে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হতে চলেছে। লিজের নামে বিভিন্ন সিরামিক কোম্পানি ইচ্ছামতো লুটে নিয়েছে এই মূল্যবান মাটি। এর নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে একটি সিন্ডিকেট চক্রের হাতে। তারা সাদামাটি, সিলিকন লাল বালু, কয়লা ও পাথরের নিয়ন্ত্রণ করে জনপ্রতিনিধিসহ প্রভাবশালী রাঘববোয়ালরা কোটি কোটি টাকা বাগিয়ে নিয়েছেন অবলীলাক্রমে। এদের প্রভাব বলয়ে সবাই অসহায়।
দেশের বৃহত্তম এই সাদামাটির পাহাড় প্রাকৃতিক খনিজসম্পদের অন্তর্গত। মূল্যবান এই চীনামাটি বা সাদামাটি দিয়েই কাপ, প্লেট, টাইলসসহ নানান ধরনের সিরামিক সামগ্রী তৈরি হয়ে থাকে। এই খনিজসম্পদ রক্ষায় এলাকাবাসী বিভিন্ন সময় আন্দোলন, সংগ্রাম, মানববন্ধনসহ নানান কর্মসূচি পালন ও হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে যুগ যুগ ধরে উত্তোলনের নামে লুটপাট হয়েছে এই মাটি, সিলিকন বালু, কয়লা ও পাথর। শুধু তা-ই নয়, বেপরোয়া মাটি উত্তোলনের দরুন গভীর হ্রদের খাদও সৃষ্টি হয়েছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের পাহাড় ধস ও বিপর্যয়ের আশঙ্কায় এলাকাবাসী সর্বদা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করে থাকেন। প্রশাসন কর্মকর্তাদের কখনো সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। বরং তাদের সমীহ করে চলেন।
বিগত ১৯৫৭ সালের খনিজসম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী ১৫.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৬০০ মিটার প্রস্থের এই খনিজ অঞ্চলের চীনামাটি বা সাদামাটির পরিমাণ ধরা হয় ২৪ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন, যা দেশের ৩০০ বছরের চাহিদা পূরণে সক্ষম। ওখানে ১৬৩টি সাদামাটির টিলা রয়েছে। ১৩টি কূপ খননের মাধ্যমে পাঁচ লাখ মেট্রিক টন মাটি উত্তেলন করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এই মাটি প্রাকৃতিকভাবেই কেউলিন বা এলামিন সমৃদ্ধ। কোহিনূর অ্যালনিয়াম ও পিসিআই এই দুইটি কোম্পানি সর্বপ্রথম সরকারের ছাড়পত্র লাভ করে ১৯৬২ সাল থেকে সাদা মাটি উত্তোলন শুরু করে। পরবর্তী সময়ে আরো আটটি কোম্পানি ছাড়পত্র লাভ করে যথাক্রমে পিপলস সিরামিক, চায়না বাংলা সিরামিক ইন্ডাট্রিজ, ফু-ওয়াং সিরামিক ইন্ডাট্রিজ, বেঙ্গল ফাইন সিরামিক, এস আর ইন্টারন্যাশনাল, তাজমা সিরামিক, ইন্স্যুলেটর অ্যান্ড স্যানিটারি ওয়্যার ফ্যাক্টরি, জাকের রি ফ্যাক্টরি অ্যান্ড টাইলস এন্টারপ্রাইজ, মোমেনশাহী সিরামিক অ্যান্ড গাস ইন্ডাট্রিজ ও জার্ডিন ইন্টারন্যাশনাল। এগুলো সরকারি কোনো নিয়মনীতি অনুসরণ না করে এই মূল্যবান সাদামাটি নিজেদের ইচ্ছেমতো উত্তোলনের নামে লুটে নিয়েছে। এ ছাড়া প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্র স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে বছরের পর বছর বেআইনিভাবে ফ্রি স্টাইলে এই মাটি উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ফলে সরকার প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে তেমনিভাবে ওই এলাকার পরিবেশ বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
খনিজসম্পদ রক্ষার্থে ২০১০ সালে পাস হওয়া পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে এবং সম্প্রতি হাইকোর্টের আদেশে যেকোনো ধরনের পাহাড় ও টিলা কাটা অথবা ক্ষতিগ্রস্ত করা নিষেধ করা হয়েছে। তারপরেও পাহাড় কাটা থেমে থাকেনি। হাইকোর্টের দেয়া আদেশও অকার্যকর ছিল দীর্ঘদিন। আর প্রশাসনের তদারকির অভাবে সিরামিক কোম্পানি ও প্রভাবশালী মহলের মাটি উত্তোলন অব্যাহত থাকায় বর্ষাকালে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে আবাদি জমি ও রাস্তাঘাটসহ বহু বসতি বিনষ্ট হয়ে পড়ে। যে কারণে খনিজ এলাকা ছনগড়া, খুজিউড়া, গাইমারা, বগাউড়া, আড়াপাড়া, বিপিনগঞ্জ গ্রামের অন্তত তিন শতাধিক পরিবারের লোকজনদের চরম ভোগান্তির কবলে পড়তে হয়। এ ছাড়া নানা অবস্থাপনার কারণে প্রাকৃতিক পরিবেশ বিনষ্ট হয়ে পড়ায় শিশু, মহিলাসহ নানা বয়সের শ্রমিকদের জীবন ধারণে পাহাড়ি খাদে ঝুঁকিপূর্ণ মাটি উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত হতে বাধ্য হন। এক তথ্যানুযায়ী মাটিচাপায় সেখানে অন্তত সাত শিশুসহ কমপক্ষে অর্ধশত শ্রমিক অকালে প্রাণ হারিয়েছেন। অপরিকল্পিতভাবে মাটি কাটার দরুন মাটিচাপায় অকাল মৃত্যুর কারণ হিসেবে প্রকাশিত তদন্ত রিপোর্টে তা উল্লেখ করা হয়। অপরিকল্পিতভাবে মাটি কাটায় গভীর খাদের সৃষ্টি হওয়ায় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় আরো বেশি প্রাণহানির আশঙ্কা করা হয় ওই তদন্ত রিপোর্টে। তারপরেও পেটের দায়ে জেনেশুনে ঝুঁকি ও শঙ্কার মধ্যেও শ্রমিকদের কাজ করতে হয় বাধ্য হয়েই। কিন্তু দুঃখের বিষয় নিয়মনীতির অভাবে অসহায় শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত করা হয়। শুধু কি তাই, অকালে প্রাণ হারানো পরিবারকে কোম্পানি বা সরকারের তরফ থেকে কোনো রকম আর্থিক সাহায্য বা ক্ষতিপূরণও দেয়া হয়নি।
গত শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে দুর্গাপুরের শিবগঞ্জ সোমেশ^রীর গোদারা পার হয়ে টোলবক্সে অবস্থানকালে দেখা যায়, চোরাইপথে আসা ভারতীয় চিনি বোঝাই ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা একের পর এক গোদারা পার হচ্ছে। এ সময় টোল চাইলে অটোচালক জানান, এগুলো সুমন পাঠানের চিনি। অমনি টোল ছাড়াই ছেড়ে দেয়া হয়। এমন সময় টোল বক্সে অবস্থানকারী দুর্গাপুর পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ইদ্রিছ মণ্ডল এই প্রতিবেদককে উদ্দেশ্য করে তীর্যক স্বরে বলে উঠেন, ‘আপনার চোখের সামনে দিয়েই তো যাচ্ছে চোরাই চিনি। পারলে আটকান।’ মোটরসাইকেলে কিছুদূর অগ্রসর হওয়ার পর দেখা যায়, কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বুলিপাড়া গ্রামের চোরাকারবারি সুমন পাঠানের বাড়ি থেকে চিনি বহনকারী অটোরিকশা আসা-যাওয়া করছে। সেখানে রাস্তার ধারে নামার পর ১২-১৩ বছরের এক কিশোর জানতে চায় কিছু লাগবে কিনা। তখন দেখা যায় সুমন পাঠানের বাড়ির আঙ্গিনায় স্তূপ করে রাখা হয়েছে বিদেশী মদের খালি বোতল।
বিজয়পুর সাদা পাহাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, খনিজসম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর নিয়ন্ত্রণাধীন পাহাড় স্থলে নেই কোনো অফিস বা চেকপোস্ট, নেই কোনো ওজন স্কেল, না আছে কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী। একেবারে অরক্ষিত পুরো এলাকা। আগত কিছু পর্যটককে দেখা যায় ঘোরাঘুরি করতে। আরো দেখতে পাওয়া যায়, লুটেরাদের স্বেচ্ছাচারিতায় এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট হয়ে অনেকটাই বিবর্ণ হয়ে পড়েছে। লুটেরাদের অত্যাচার ও যত্রতত্র লুটের দরুন দৃষ্টিসন্দন শে^ত পাহাড় ক্ষত-বিক্ষত হয়ে খাঁ খাঁ করছে। স্থানে স্থানে বিশাল বিশাল গর্ত ও খাদের সৃষ্টি হয়েছে। দিকনির্দেশনার অভাবে আগত পর্যটকরা এই খাদের পানিতে গোসল করতে গিয়ে অনেকের অকাল মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় প্রশাসনের কোনো রকম তদারকি না থাকায় শে^ত পাহাড় স্থানে গড়ে উঠেছে কিছু অবৈধ দোকানপাট। দেখা যায়, সেখানে নিম্নমানের চোরাই ভারতীয় পণ্য ও বিভিন্ন ব্র্যন্ডের নকল প্রসাধনী দেদারছে বিক্রি করছে। প্যাকিং করার সময় ক্রেতাদের অগোচরে বিক্রিত কিছু পণ্য রেখেও দিচ্ছে। সেখানকার খাবার হোটেলের পচা, বাসি ও অখাদ্য খাবার খেয়ে পর্যটকরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন সব দেখে শুনেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
প্রকৃত অর্থে বিশাল এই প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদ সম্পূর্ণভাবে অরক্ষিত। ছাড়পত্র পাওয়া কোম্পানিগুলো চুক্তিপত্রের শর্ত মোতাবেক যে পরিমাণ মাটি উত্তোলন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে তা অমান্য করে পাহাড় কেটে শতগুণ মাটি উত্তোলন করে নেয়। অন্য দিকে সিন্ডিকেট চক্রের সহযোগিতায় স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে যেভাবে মাটি কেটে বস্তায় ভরে ভ্যান গাড়ি, নৌকা ও ট্রাকে সিরামিক কোম্পানির ক্রেতাদের কাছ সরবরাহ করতে দেখা যায় তা কেবল লুটপাটের সাথেই তুলনা করা চলে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রানী সুসং দুর্গাপুরের সাদা মাটিকে কেন্দ্র করে গোড়ার দিকে আমাদের দেশে হাতেগোনা যে ক’টি সিরামিক শিল্পকারখানা গড়ে ওঠে তা এখন সংখ্যায়ও অনেক। দিন দিন সিরামিক শিল্প সামগ্রীর চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে সেখানে অবৈধ পন্থায় মাটি উত্তোলনের তীব্রতাও বাড়ছে।
বিজয়পুরের সাদা মাটিকে ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় চতুর্থ ভৌগোলিক জি আই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে। সেখানে যথেচ্ছারভাবে মাটি উত্তোলনের দরুন জীববৈচিত্র্য ধ্বংস ও পরিবেশ বিনষ্ট হয়ে পড়ায় তা রক্ষার জন্য ২০১৫ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ (বেলার) নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট রিজোয়ানা চৌধুরীর এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ১৯ জুলাই হাই কোর্টের আদেশে মাটি উত্তোলন বন্ধ রাখা হয়েছে।
সেখানে কর্মরত শ্রমিক রমজান আলী, বাদশা মিয়া, ফজর আলীসহ আরো অনেকে আক্ষেপ করে বলেন, ‘কার কাছে কি আর কইয়াম, পেটের লাইগ্যা ওইহানে পইড়া ছিলাম। এই সাদা মাটি যেন সাদা সোনা। এই লাইগ্যা বোধহয় এত কামড়া কামড়ি। শুনহাইন সম্পাদিক সাব ওরা বড় ভয়ঙ্কর, সাবধানে আগান, হুদাই লেইখ্যা কি আর করবাইন।’
দুর্গাপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র কামাল পাশা বলেন, নির্বিচারে মাটি উত্তোলনের ফলে পরিবেশ বিনষ্ট হতে চলেছে। সিন্ডিকেট চক্রের কবল থেকে পাহাড়কে রক্ষার জন্য আমরা অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। এ জন্য ওই লুটেরারা আমার বাড়িঘরে পর্যন্ত হামলা চালিয়েছে। আমরা চাই সেখানে নিয়মতান্ত্রিকভাবে মাটি উত্তোলন ও পরিবেশ রক্ষার মাধ্যমে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠুক। নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘বিজয়পুরকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমরা কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। একটি টিম সেখানে কাজ করছে। কয়েকদিন আগে পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মহোদয় এখানে এসেছিলেন। দুর্গাপুর ও কলমাকান্দাকে পর্যটন এলাকা হিসেবে কিভাবে গড়ে তোলা যায় সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement