১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
সাপ্তাহিক পর্যালোচনা

উভয় বাজারে সব সূচক কমেছে

-

- লেনদেন কমেছে ৯৮১ কোটি টাকা
- মূলধন কমেছে ৫ হাজার কোটি টাকা
- রেশিও কমেছে ২.৫০ শতাংশ

বিদায়ী সপ্তাহে (১২ মে থেকে ১৬ মে) কার্যদিবস ছিল পাঁচ দিন। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে লেনদেন ও সূচক বাড়লেও ধারাবাহিকভাবে সূচক কমেছে। ধারণা করা হচ্ছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের ফলে বাজার ঘরে দাঁড়াবে কিন্তু সপ্তাহ শেষে সেই একই চিত্র দেখা যায়। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গড় লেনদেন ২০ শতাংশের বেশি কমেছে। এ সময় ডিএসইর মূলধন কমেছে পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি। সেই সাথে কমেছে ডিএসইর সব ক’টি সূচক ও লেনদেনের পরিমাণ।
তথ্য অনুযায়ী, সপ্তাহ শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ১ হাজার ৮২৪ কোটি টাকা। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৭ হাজার ২৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে দশমিক ৭৪ শতাংশ বা ৫ হাজার ২০২ কোটি টাকা।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৭৬৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছিল ৯৬০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ২০ দশমিক ৪৩ শতাংশ বা ১৯৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা। ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৮২১ কোটি ৪১ লাখ টাকা, যা আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছিল ৪ হাজার ৮০২ কোটি ৭২ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ৯৮১ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইর সব ক’টি সূচকও কমেছে। প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৪৩ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এ ছাড়া ডিএসইএস সূচক কমেছে ৩০ দশমিক ৪১ পয়েন্ট। আর ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ৪১ দশমিক ২৫ পয়েন্ট।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট ৩৯২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৫টির, কমেছে ২৯০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। খাতভিত্তিক লক্ষ্য করলে দেখা যায় বিদায়ী সপ্তাহে টেলিকমিউনিকেশন, ব্যাংকিং ্ও আর্থিক খাতের লেনদেন সবচেয়ে বেশি কমেছে। বেড়েছে করপোরেট বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ড ইন্স্যুরেন্স ও আইটি খাতের।
সপ্তাজুড়ে এ টেলিকমিউনিকেশন খাতে লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ২৭ কোটি ৬৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা বা ৫৪.৯৩ শতাংশ কম। এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন কমেছে ব্যাংক খাতে। সপ্তাহজুড়ে এ খাতে লেনদেন হয়েছে ১৯৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা। যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ২২০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা বা ৫২.৪৩ শতাংশ কম।
তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন কমেছে আর্থিক খাতে। সপ্তাহজুড়ে এই খাতে লেনদেন হয়েছে ৩৫ কোটি ৩৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ২৪ কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বা ৪১.০৭ শতাংশ কম। এ ছাড়া অন্য খাতের মধ্যে- ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে কমেছে ৩৩.৯২ শতাংশ, প্রকৌশল খাতে ৩২.১৪ শতাংশ, বিবিধ খাতে ৩১.০৯ শতাংশ, বস্ত্র খাতে ২৯.১৮ শতাংশ, সিরামিক খাতে ২৭.৫৮ শতাংশ, পাট খাতে ২৫.০০ শতাংশ, সেবা ও আবাসন খাতে ২৩.০৮ শতাংশ, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ২১.১৯ শতাংশ, চামড়া ১৮.৫৩ শতাংশ, ১৫.০৫৪ শতাংশ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ১৪.৮২ শতাংশ এবং সিমেন্ট খাতে ২.২২ শতাংশ কম।
ব্লক মার্কেট ছিল ১০ কোম্পানির দখলে
গত সপ্তাহ ডিএসই ব্লক মার্কেটে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ১০ কোম্পানির। কোম্পানিগুলো হলো- লাভেলো আইস্ক্রিম, রিলায়েন্স ওয়ান, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ন্যাশনাল ব্যাংক, আলহাজ টেক্সটাইল, বিএসআরএম লিমিটেড, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সোনালী পেপার ও সোনালী আঁশ। এই ১০ কোম্পানির মোট ১০৭ কোটি ৮৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
ব্লকে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে তাওফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসির। কোম্পানিটির লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রিলায়েন্স ওয়ান ফান্ডের ১৫ কোটি ৭২ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হওয়া আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ১৩ কোটি ৮৮ লাখ ৩০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এ ছাড়া অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকের ১৩ কোটি ২ লাখ টাকা, আলহাজ টেক্সটাইলের ১১ কোটি ৫২ লাখ ১০ হাজার টাকা, বিএসআরএম লিমিটেডের ১১ কোটি ৪৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সের ৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৭ কোটি ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা, সোনালী পেপারের ৫ কোটি ৮০ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং সোনালী আঁশের ৫ কোটি ৫৩ লাখ ৯০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
ডিএসইতে পিই রেশিও কমেছে ২.৫০ শতাংশ
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসই সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) কমেছে ২.৫০ শতাংশ। তথ্য মতে, বিদায়ী সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ১১.১৬ পয়েন্টে। আর সপ্তাহ শেষে তা অবস্থান করছে ১০.৮৭ পয়েন্টে। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর পিই রেশিও কমেছে ০.২৯ পয়েন্ট বা ২.৫০ শতাংশ।
এর আগের সপ্তাহের (৫ থেকে ৯ মে) শুরুতে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ১০.৯৯ পয়েন্টে। আর সপ্তাহ শেষে তা অবস্থান করছে ১১.১৬ পয়েন্টে। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর পিই রেশিও ০.১৭ পয়েন্ট বা ১.৫৪ শতাংশ কমেছে।


আরো সংবাদ



premium cement